পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
মনে রাখতে হবে, এটা নতুন কিছু নয়, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাই অনুমান করা যেতে পারে, অতীতে আরও লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার হকের পাওনা এইভাবে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে ব্যাঙ্কগুলি। ভারতীয় ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার এই ব্যাধির সুযোগ নিয়ে থাকেন মূলত এক শ্রেণির অসাধু ধনী ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি। এর মধ্যে এই মুহূর্তের ‘ত্রিরত্ন’ হলেন বিজয় মালিয়া, নীরব মোদি ও মেহুল চোকসি। বিজয় মালিয়া ৯ হাজার কোটি টাকা এবং নীরব মোদি ও মেহুল চোকসি ১৩ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ না করে ভারত থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। গত ২০ ডিসেম্বরের হিসেবে, ‘টপ ৫০ উইলফুল ডিফলটার’-এর কাছে ব্যাঙ্কগুলির প্রাপ্য ছিল ৯২ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। এই টাকা কড়ায়গণ্ডায় আদায় করার নীতি থেকে সরে এসেছে মোদি সরকার। ব্যাঙ্কঋণ খেলাপি কর্পোরেট বা অসাধু শিল্পপতিদের সরকার আর অপরাধী গণ্য করছে না। বরং তাদের গায়ে মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে কিছু টাকা ব্যাঙ্কে ফেরানোকেই ‘মন্দের ভালো’ উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছে।
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রকের তরফে এক নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, গৃহীত ঋণের ৪০ শতাংশ মিটিয়ে দিলেই খেলাপি ঋণগ্রহীতারা দায়মুক্ত হতে পারবেন! সোজা কথায়, বাছাই কিছু ঋণখেলাপির ৬০ শতাংশ দায় মকুব করে দেবে সরকার। এতে রুগ্ন ব্যাঙ্কের স্বাস্থ্য কতটা ফিরবে বলা মুশকিল, তবে কোনও সন্দেহ নেই, অসাধু বণিক শ্রেণিই লাভবান হবে। অন্যদিকে, যে বিশাল সংখ্যক ছোট, মাঝারি ও বড় ব্যবসায়ীরা সৎভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন এর চাপটি পরোক্ষে তাঁদের উপরেই চাপবে। এই বার্তা ভারতের অর্থনীতির ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে না। মোটা অঙ্কের লোন নিয়ে কিছুদিন পর নানা কৌশলে তা মেরে দেওয়ার এই ব্যাধি সংক্রামক হয়ে উঠতেই পারে। এই পরিস্থিতির দায় রাজনীতি এবং প্রশাসনের প্রভাবশালী মহলকেই নিতে হবে। কারণ, অযোগ্য, অসাধু ব্যবসায়ীদের মোটা অঙ্কের ঋণলাভের পিছনে তাঁদের আশীর্বাদেরই সবচেয়ে বড় ভূমিকা থাকে। শিল্পায়নে গতি আনার নামে ব্যাঙ্কগুলিতে এই যে হরির লুট চলে, তার সবই সাধারণ নাগরিকের কষ্টার্জিত অর্থ থেকে। সব দেখেও নাগরিকরা চিরকাল বলতে বাধ্য থাকবেন—‘যায় যদি যাক প্রাণ, হীরকের রাজা ভগবান!’