পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
গত মার্চ মাসে সাগরদিঘি কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জিতে চলতি বিধানসভায় কংগ্রেসের খরা কাটিয়েছিলেন বায়রন বিশ্বাস। নির্বাচনী লড়াইয়ে তাঁকে সরাসরি সমর্থন করেছিল সিপিএমের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টও। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তাঁর কাছে পরাজিত হন প্রায় ২৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে। বায়রনকে নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন বামেরাও। কাস্তে-হাতুড়ি-তারা প্রতীকের প্রার্থী না-হলেও বায়রনের জয়কে তাদেরই জয় বলে ভাবতে শুরু করেছিলেন বামেরা। ২৯ মে, ২০২৩। বায়রন যোগ দিলেন রাজ্যের শাসক দলে! ফলে, রাজ্য-রাজনীতির ছবিটা বদলে গেল হঠাৎই। ভেসে উঠতে উঠতেই, বস্তুত ‘নিখোঁজ’ হয়ে গেল যেন এরাজ্যেরই দুটি সাবেক শাসক শ্রেণি! আগামী লোকসভা নির্বাচনের বাকি আর মাত্র আট-নয় মাস। বাংলায় তার আগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অনুশীলন ছিল ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। ৮ জুলাই অনুষ্ঠিত ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হল ১১ই। এই রেজাল্টে দেখা যাচ্ছে—গ্রাম বাংলা আগের মতোই রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। গ্রামের মানুষ বেশ বুঝিয়ে দিয়েছেন—খাদ্যশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কৃষকবন্ধু, কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, দুয়ারে সরকার, পাড়ায় সমাধানের বিকল্পের সন্ধান দিতে ব্যর্থ কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। ব্যর্থতার সিলমোহর পড়ে গিয়েছে কংগ্রেস-বাম-আইএসএফ জোটেরও গায়ে। ২০টি জেলা পরিষদের একটিরও দখল পায়নি বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েত দখলেও কোনও বিরোধী দল বা জোট আকর্ষক ছাপ রাখতে পারেনি। রাজ্যজুড়ে বিরোধীদের সাফল্য নিতান্তই বিক্ষিপ্ত, ছিটেফোঁটা।
ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ জানাবার ধারেকাছেও কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর এই চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিসরেই শুরু হয়েছে অন্য এক লড়াই। তৃণমূল কংগ্রেসের সমান্তরালে ‘আসল বিরোধী’ রাজনৈতিক শক্তি কোনটি? বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে—গ্রাম বাংলায় বিজেপির পক্ষে ভোটের শতাংশ হার ৩৮ থেকে ২২-এ নেমে এসেছে। অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের ভোট যোগ হয়েছে ১১ শতাংশ। ফলে ১০ শতাংশ থেকে এবার ২১ শতাংশ হয়েছে জোটের পক্ষে ভোটের হার। গেরুয়া শিবিরের ভোট শতকরা ১৬ ভাগ হাতছাড়া হওয়া নিয়ে বিজেপির আদি নেতারা দলের বর্তমান নেতৃত্বকে ছিঁড়ে খাওয়ার মতো করে সমালোচনায় বিঁধছেন। অন্যদিকে, তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী জোটের দাবি, রাজ্যে তারাই এখন ‘আসল বিরোধী’। মোদির পার্টি বিজেপি বাংলায় এখনও যে কাগুজে বাঘ! এ দেখে রাজ্যের শাসকের মুচকি হাসা ছাড়া আর কিছুই করার নেই নিশ্চয়।