পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
তখন সকাল ৭টা। ততক্ষণে চারটি স্টল খুলে গিয়েছে। সভা শেষ হওয়ারও পরও সচল ছিল সেগুলি। চা মিলেছে সব সময়। সকালের দিকে ছিল ছোলা সিদ্ধ। দুপুর বাড়তেই দেওয়া হয়েছে পরোটা-সব্জি। সঙ্গে ঠান্ডা জলের বোতল। কতজনের খাবারের আয়োজন করেছিলেন? আয়োজকদের কেউই ঠিকঠাক হিসেব বলতে পারলেন না। তবে, কম পড়বে না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত তাঁরা। লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারকেশ্বরের জয়দেব মালো। তিনি বলেন, শ্রাবণ মাসে যাঁরা তারকেশ্বরে বাবার মাথায় জল ঢালতে আসেন, তাঁদের জন্য আমরা শরবত বা হাল্কা খাবারের ব্যবস্থা করি। ওষুধপত্র রাখি। এই প্রথম ২১ জুলাইয়ের সভায় এলাম। এখানে এসব দেখে ভালো লাগছে। সব ধর্মের মূল কথাই মানবসেবা।
বারুইপুর থেকে এসেছিলেন বাউলশিল্পী স্বপন চক্রবর্তী। সভাস্থলে গান গাইবেন, এটাই ছিল উদ্দেশ্য। মিছিলে হেঁটে এসে হাঁফিয়ে উঠেছিলেন। খাবার নয়, স্রেফ ঠান্ডা জলের জন্যই এই স্টলে পা বাড়িয়েছিলেন। বাউলকে দেখেই উৎসাহিত হয়ে পড়েন স্টলে থাকা শিখ ধর্মাবলম্বী প্রৌঢ়রা। ‘আরে শুধু জল কেন, চা খান। তারপর খাবার খেয়ে যাবেন।’ লাইনও দিতে হল না তাঁকে। তাগড়াই মানুষগুলির টানে সেঁধিয়ে গেলেন স্টলে। তবে, উদ্দেশ্য একটা ছিলই। দীর্ঘদিন কলকাতায় থাকার সুবাদে কার্যত বাঙালি হয়ে যাওয়া এই মানুষজন আব্দার জুড়লেন গান শোনানোর। আপত্তি করেননি তিনি। তবে দাঁড়িয়ে গান আর শোনা হল না। ততক্ষণে নেমে গিয়েছে তুমুল বৃষ্টি। শ’য়ে শ’য়ে মানুষ এসে আশ্রয় নিলেন স্টলের পিছনে লম্বা শামিয়ানার নীচে। বৃষ্টি একটু কমতেই ফের দীর্ঘ হল লাইন। একেকজন একাধিকবার লাইনে দাঁড়ালেন। চিনতে পারলেও হাসিমুখে তাঁদের হাতে প্লেট তুলে দিলেন পাগড়ি পরা মানুষরা।
একটি স্টলেই কাজ করছিলেন যশবীর সিং। তিনি বলেন, ‘মানুষকে খাইয়েই তো আনন্দ। কতজনের কাছে আর আমরা পৌঁছতে পারছি! তেলের ট্যাঙ্কার নিয়ে রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাই। দেখি, কত মানুষ একটু খাবারের জন্য হাপিত্যেশ করেন। এখন মানুষ বিনামূল্যে চাল-গম পান। তাই সেই ছবি এখন অনেকটাই পাল্টেছে।’