পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
ব্রিটিশ আমলে এই গ্রামে ছিল বিশাল নীলকুঠি। আর সেখান থেকেই গ্রামের নাম হয়েছে কুঠিপাড়া। গ্রামের আনাচে কানাচে এখনও ব্রিটিশদের বসতির ভগ্নাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বিশালাকার কড়াই গাছটিরও ব্রিটিশ আমলেরই। চাঁদ মিঞার দাবি, ছোট থেকেই টিয়াদের কিচিরমিচির কলতানে ঘুম ভাঙত। সকাল হলেই হাজার হাজার টিয়া দল বেঁধে উড়ে যেত বাচ্চাদের কোটরে রেখে। ছোট থেকেই সবুজ রঙের লাল ঠোঁটের পাখিদের ভালোবাসায় আটকা পড়েন চাঁদ মিঞা। রোজ দু’বেলা পাখিদের উড়ে যাওয়া আর ঘরে ফেরার দৃশ্য চাঁদ মিঞাকে মুগ্ধ করেছিল।
পেশায় দর্জি চাঁদ মিঞা সংসারের হাল অনেকদিন আগেই ছেড়ে দিয়েছেন ছেলেদের হাতে। প্রথম প্রথম রাত জেগে পাখিদের পাহারা দেওয়া মেনে নিতে পারেননি তাঁর পরিবারের সদস্যরা। গ্রামের মানুষও ‘পাখি পাগল’ বলে টিপ্পনি কাটত। কিন্তু কারও কথায় কান দেননি চাঁদ মিঞা। ছেলে সাদ্দাম মিঞা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। রাজমিস্ত্রির কাজে বছরের বেশিরভাগ সময় ভিন রাজ্যে কাটে। সাদ্দাম বলেন, বাবার পাখির নেশাকে আমরা পাগলামি বলেই ভাবতাম। পরে বুঝলাম চোরাশিকারিদের হাত থেকে টিয়াদের বাঁচিয়ে রেখে এই গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করেছেন বাবা। সবাই যখন বাবার প্রশংসা করে তখন খুব গর্ব হয়।
কুঠিবাড়ির কড়াই গাছে হাজার হাজার টিয়ার বাসা দেখতে এখন দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন। গাছের নীচে পথচারীরা দু’ দণ্ড বসে পাখিদের কলতান শোনেন। আর পাখিদের রক্ষা করতে অতন্দ্র প্রহরী হয়ে হাত পাঁচেক লম্বা বাঁশের লাঠি নিয়ে ছাদে বসে থাকেন চাঁদ মিঞা। সকাল বিকাল দু’বেলা খেতে হানা দিয়ে চোরাশিকারিদের ফাঁদ ভেঙে দিয়ে আসেন।
বয়স বাড়ছে। একটা সময়ে আর তিনি পাখিদের পাহারা দিতে পারবেন না। ছেলেরা ভিনরাজ্যে থাকে অধিকাকাংশ সময়। কার হাতে এই দায়িত্ব তুলে দেবেন? এই চিন্তাই কুরে কুরে খাচ্ছে ৭৪ বছরের চাঁদ মিঞাকে। নওদার তৃণমূল বিধায়ক সাহিনা মমতাজ খান বলেন, আমি বনদপ্তরের কাছে আবেদন করেছি চাঁদ মিঞাকে যোগ্য সম্মান প্রদানের জন্য। জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, টিয়াদের বাঁচাতে চাঁদ মিঞার উত্তরসূরি খোঁজার দায়িত্ব আমাদের। চাঁদ মিঞা।-নিজস্ব চিত্র