পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
আসলে পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির এই প্রায় ভরাডুবিতে দলের ভবিষ্যৎ ললাট-লিখন ভালোই পড়তে পারছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু প্রবল জনরোষের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা নরেন্দ্র মোদিকে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফেরাতে হলে এরাজ্য থেকে আরও বেশি সাংসদ দরকার। শাহের টার্গেট ৪২টির মধ্যে ৩৫টি। সোজাপথে অর্থাৎ ভোটে লড়ে টার্গেটের এক-তৃতীয়াংশ আসন দখল করা মুশকিল বুঝে বাঁকাপথে মমতা সরকারকে চাপে রাখতে ৩৫৫ ধারা জারির জিগির তোলা হচ্ছে। বিরোধী দলনেতার কথায়, পরিবেশ তৈরি করা। একদিকে ‘সন্ত্রাসের’ অভিযোগ তুলে রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। অন্যদিকে নানা অছিলা। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজ্যপালের সাক্ষাৎও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। আবার, পঞ্চায়েত পরবর্তী রাজ্যের হাল-হকিকত বুঝতে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের ঝুলিতেও ‘অরাজকতার’ অভিযোগ। এর পাশাপাশি বঙ্গ বিজেপির একাধিক নেতার গলায় ৩৫৫-র সুর। এ যেন মামা বাড়ির আবদার।
যুগে যুগে দেখা গিয়েছে, কেন্দ্রের শাসকদল অনেকসময় বিরোধী শাসিত রাজ্যকে ৩৫৬, ৩৫৫-র জুজু দেখায়। সংবিধানের ৩৫৬ অনুচ্ছেদে সরাসরি রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে রাজ্যের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার কথা বলা আছে। দেখা গিয়েছে, স্বাধীন ভারতে গত ৭৫ বছরে ৩৫৬ প্রয়োগ করে রাজ্য সরকার ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ১৩২ বার। আর ৩৫৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের কর্তব্য হল, রাজ্যগুলিকে বাইরের আক্রমণ ও অভ্যন্তরীণ সঙ্কট থেকে রক্ষা করা। রাজ্যের শাসন ব্যবস্থা যাতে সংবিধান মেনে পরিচালিত হয়, তা নিশ্চিত করা। আপাতদৃষ্টিতে এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই সহযোগিতার রন্ধ্রপথ দিয়ে খবরদারি করার সুযোগও আছে। অর্থাৎ, মমতার সরকারের উপর খানিক কর্তৃত্ব করা। এই কারণেই রাজ্যে ৩৫৫ চাইছে বিজেপি। রাজ্যপালের মাধ্যমে রাজ্যে ৩৫৫ হবে কি না তা ভবিষ্যতের কথা। কিন্তু অমিত শাহদের এমন ‘দুর্বুদ্ধি’ হলে তাতে রাজনৈতিকভাবে যে মমতারই লাভ তা নিশ্চিত। কারণ সত্যিই কি রাজ্যে ৩৫৫-র মতো পরিস্থিতি হয়েছে? অথচ পরিস্থিতি তৈরির কথা বলে হুংকার দেওয়া হচ্ছে! এমনটা হলে সিপিএম কংগ্রেসও নীতিগতভাবে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপে সমর্থন করতে পারবে না। ভোটাররা আরও বিমুখ হবে। অতএব বিজেপিই পড়বে মহাসঙ্কটে।