পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
এই ঘটনা থেকে বিজেপি নেতৃত্বের একটা সত্য বোঝা দরকার ছিল যে, গত লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে বিজেপির রেজাল্ট ‘ঝড়ে বক মরে’ গোছেরই কোনও একটা ব্যাপার ছিল। এর পিছনে ফকিরের (দলের সাংগঠনিক শক্তি) কেরামতি কিছুই ছিল না। বাংলার রাজনীতি নিয়ে তারা আন্তরিক হলে সবার আগে জোর দিত রাজ্যজুড়ে সংগঠন গোছানোর উপর। বাংলার শাসক দলকে অন্যায়ভাবে শায়েস্তার চেষ্টাগুলির মধ্যে তার কোনও উপকরণ মজুত থাকতে পারে না। বিজেপি তখনই জনপ্রিয় হতে পারত যখন বাংলার মানুষকে ভালো রাখার জন্য কিছু কাজ তারা করত। তারা হল কেন্দ্রের শাসক দল। প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী থেকে বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীই তাদের পার্টির নেতা। তাই বাংলার উন্নয়নে অনায়াসেই বহু কিছু করতে পারত তারা। কৃষক, শ্রমিক, অসংগঠিত শ্রমিক, মহিলা, প্রবীণ নাগরিক, বেকার বাহিনী, ছাত্র, গবেষক প্রভৃতি সকলেই দিল্লির পথ চেয়ে থাকে। আমাদের সাংবিধানিক ব্যবস্থা অনুসারে রেল, মেট্রো রেল, ব্রিজ, রাজপথ, জাতীয় মানের শিক্ষা ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা কেন্দ্র প্রভৃতি নির্মাণ, গঙ্গা ভাঙন রোধ ও সেচ প্রকল্প নির্মাণ, শহরের বিস্তার ও উন্নয়নে কেন্দ্রের আন্তরিক সহায়তার বিকল্প নেই। পরিতাপের বিষয় হল, প্রায় প্রতিটি বিষয়েই মোদি সরকার বাংলাকে উপেক্ষা করেছে। এমনকী, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের (মনরেগা) প্রাপ্য টাকাও দিচ্ছে না। আটকে দিয়েছে গরিবের আবাসন নির্মাণও। কেন এসব করল তারা? রাজনৈতিক মহলের অনুমান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান রুখতেই মোদি সরকারের এই ভীমরতি! তাতে সরাসরি এবং সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে বাংলার লক্ষ লক্ষ গরিব মানুষের। তাঁদের বেশিরভাগই গ্রামের বাসিন্দা। আর সার্বিকভাবে দেখতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন মমতা যতটা করতে পারতেন, তা অনেকাংশেই ব্যাহত হয়েছে।
এরপর কোন কাণ্ডজ্ঞানে গ্রামবাংলার নারীপুরুষ ভোটের বাক্সে মোদির পার্টিকে দু’হাতে আশীর্বাদ করবেন? তাঁরা করেননিও। প্রত্যাশা মতোই বেশিরভাগ বুথে হতাশ হয়েছে বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোটে সব হারানোর পরই আত্মসমীক্ষায় বসেছেন নেতৃত্ব। কী দেখলেন তাতে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাত্রাভঙ্গ করতে গিয়ে নিজেরই নাক কেটে বসেছে বঙ্গ বিজেপি। গত লোকসভা, বিধানসভা তো বটেই, গত পঞ্চায়েত ভোটের থেকেও খারাপ রেজাল্ট হয়েছে তাদের। বস্তুত, মনরেগা, আবাস ইত্যাদির টাকা না-পেয়ে, গরিব মানুষ ভোটের বাক্সে জবাব দিয়েছেন আহত বাঘের মতোই! শীঘ্রই ‘পুওর থার্ড’ হতে চলেছে কি বিজেপি? বাংলার রাজনৈতিক মহলের এটাই আজকের জল্পনা।