পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
পরিস্থিতি যে এতটুকু বদলায়নি তারও প্রমাণ মিলেছে উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের উপর পরপর নিগ্রহের ঘটনায়। ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশে নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পায়নি নাবালকও। সভ্য দেশ বা সমাজে যা ভাবাও যায় না, তেমন ঘটনাও ঘটছে মোদির ভারতে! ডাবল ইঞ্জিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশে এক দলিত ব্যক্তির গায়ে জনৈক বিজেপি কর্মীর প্রস্রাব করে দেওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। এই মধ্যপ্রদেশেই আর এক দলিতকে বিষ্ঠা খেতে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠে। বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্র জেলার একটি গ্রামে এক দলিত যুবককে চটি চাটতে বাধ্য করা হয়। মধ্যপ্রদেশে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে দুই আদিবাসী ভাইকে। এসব ঘটনাই প্রমাণ করছে মোদি জমানায় দলিতদের প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া হয় না। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতেই সবচেয়ে বেশি হেনস্তার শিকার হতে হয় তাদের। কিন্তু ভোট এলেই এদের প্রতি গেরুয়াবাহিনীর লোকদেখানো দরদ উপচে পরে। ক্ষমা চেয়ে, এঁদের যন্ত্রণা ভাগ করে নেওয়ার কথাও শোনা যায় নেতা-মন্ত্রীদের মুখে!
এই যাদের রাজনৈতিক দর্শন, তারাই এবার সংখ্যালঘু ভোট পেতে জামা-কাপড় বদলে মাঠে নেমে পড়েছে। সবকিছু ছাপিয়ে মোদি-সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ উঠল সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার ও সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা নিয়ে। গেরুয়া সাম্রাজ্যে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের বহর দেখে একাধিকবার আন্তর্জাতিক মহলও সরব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মার্কিন সফরেও এই প্রশ্ন শুনতে হয়েছে মোদিকে। কিন্তু ভোট বড় বালাই। ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে, মোদির কুশাসনে গোটা দেশ যেন বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। জোট বাঁধছে বিরোধীরা। এই টালমাটাল অবস্থায় শেষপর্যন্ত পরিত্রাতা হিসেবে সংখ্যালঘু ভোট পেতে মরিয়া শাসক-শিবির। তাদের ভোট চাই, যারা এই জমানায় সবচেয়ে বেশি অত্যাচারিত হয়েছে। ভাগ্যের কী নিদারুণ পরিহাস! সারা দেশের মোট ভোটারের প্রায় এক তৃতীয়াংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের, যাদের ভোটের উপর নির্ভর করে প্রায় দেড় শতাধিক লোকসভা আসনের ভাগ্য। তাই গেরুয়া শিবিরের ঝুলি থেকে এখন বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে। তাই কি লোকদেখানো সংখ্যালঘু তোষণে এবার বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন মোদি-শাহরা? সংখ্যালঘুদের জন্য মোদি সরকার কী কী করেছে, তাই নিয়ে প্রচারের জন্য ‘মোদি মিত্র’ নামে এক বিশেষ বাহিনী সংখ্যালঘু পরিবারে গিয়ে প্রচার করবে। বলাই বাহুল্য, চলতি বছরের গোড়ায় এই কর্মসূচি নেওয়া হলেও এখনও তা লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারেনি—বলছে তাদের দলীয় রিপোর্ট। অর্থাৎ ‘মোদি মিত্র’ হওয়ার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে রাজ্যে রাজ্যে দলীয় নেতৃত্বের একপ্রকার ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা। তবু আশা নিয়েই বাঁচা। বিজেপিও সেই তত্ত্বকথা মেনে হাল ছাড়তে নারাজ। কিন্তু দলিত সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের পাপ কি অত সহজে মুছে ফেলা যাবে?