পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
এখানেই সেই অমোঘ প্রশ্নটা বারবার ওঠে, অন্যকোনও রাজ্য পারলে আমরা কেন পারি না? অথচ প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই যুযুধান দুই তিনপক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই, চ্যালেঞ্জ, হুঙ্কারের বন্যা বয়ে যায়। দিল্লিতে বিজেপির সঙ্গে আপ, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-সমাজবাদী পার্টি, রাজস্থানে বিজেপি-কংগ্রেস, তামিলনাড়ুতে ডিএমকে-এআইডিএমকে, অন্ধপ্রদেশে ওয়াইএসআর কংগ্রেস-তেলুগু দেশম, বিহারে আরজেডি এবং বিজেপি-জেডি (ইউ), সদ্য নির্বাচন হওয়া কর্ণাটকে বিজেপি-কংগ্রেসের মধ্যে সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। সব রাজ্যেই, প্রতিপক্ষকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ে না কেউ। কিন্তু গোটা ভোটপর্বে বোমা-গুলির লড়াই, রাজনৈতিক সংঘর্ষ, বুথ দখল, ফলস ভোট, মৃত্যু, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে অশান্তির অভিযোগ কার্যত দূরবিন দিয়ে খুঁজে বের করতে হয়। সদ্য অনুষ্ঠিত কর্ণাটক বিধানসভার ভোটে বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে কংগ্রেস। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে সেখানে কারও কোনও অভিযোগ তেমন শোনা যায়নি। একটা সময়, ভোটের বাজারে কুখ্যাত নাম ছিল বিহার ও উত্তরপ্রদেশের। ওই দুই রাজ্যও সেই দুর্নাম ঘোচাতে তৎপর। অথচ উন্নয়নসহ বহু ক্ষেত্রে এগিয়ে থেকেও ভোটের সময় পশ্চিমবঙ্গ যেন সেই অশান্তিরই পরম্পরা বহন করে চলেছে! সন্দেহ নেই, যেন-তেন-প্রকারেণ ক্ষমতা ধরে রাখার উদগ্র বাসনায় পঞ্চায়েত, পুরসভা কিংবা বিধানসভার ভোটকে কার্যত প্রহসনে পরিণত করেছিল এরাজ্যের বামেরা। প্রশ্ন হল, বাংলা কি সেই ট্র্যাডিশন এখনও বহাল রাখবে? ‘বদলা নয়, বদল চাই’-এর স্লোগান দিয়ে পালাবদলের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তারা কি এবার বাম আমলের ‘ভোটসন্ত্রাসের’ মিথ ভেঙে নতুন নজির রাখবে? তেমনটাই আশা করছে বঙ্গবাসী।
আসলে আশা ছাড়তে নারাজ রাজ্যবাসী। আগে যা হয়েছে তা ভুলে গিয়ে নির্বাচনের দিন অবাধে নির্বিঘ্নে ভোট দিন প্রকৃত ভোটার— নির্বাচন কমিশনকেই তা নিশ্চিত করতে হবে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানই কমিশনের চ্যালেঞ্জ। ভোটকে কেন্দ্র করে কোনওরকম অশান্তির চেষ্টা হলে যাতে নিরপেক্ষতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করে পুলিস ও আধাসেনা, সেটাই দেখতে চান ভোটাররা। এসব ক্ষেত্রে প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই সমান ভূমিকা রয়েছে। গণতন্ত্রের স্বার্থে তারা সেই দায়িত্বটি পালন করুক। প্রচারে ‘কুস্তি’ করলেও ভোটের দিন ‘দোস্তি’র ছবিটা দেখতে চান মানুষ। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের সবচেয়ে আদর্শ বিজ্ঞাপন হতে পারে কোলাহল ছেড়ে কোলাকুলির ছবি। একইসঙ্গে এই ছবিই হতে পারে রক্তক্ষয়ী হানাহানির রাজনীতির বদনাম ঘোচানোরও। হিংসার বলিতে বাংলার মাটি যেন আর রক্তাক্ত না-হয়। ভোটে হারজিত আছে। জনতার রায়কে সম্মান জানাতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কঠিন পরীক্ষায় শামিল হোক প্রতিটি রাজনৈতিক দল। সন্ত্রাসের শিকার হবেন না কেউ, নির্ভয়েই ভোট দিন সব ভোটার।