পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
এটা মুদ্রার এক পিঠের ছবি। অন্য পিঠে দেখা যাচ্ছে, বঙ্গে একে অপরের প্রবল বিরোধী হলেও তৃণমূল-কংগ্রেস-সিপিএম নেতাদের বেঙ্গালুরু শহরে সেজে ওঠা ফ্লেক্স-হোর্ডিংয়ে পাশাপাশি ছবি। বার্তা একটাই, ‘ইউনাইটেড উই স্ট্যান্ড’। রাজ্যের লড়াই রাজ্যে ছেড়ে এসে জাতীয় স্বার্থে বিজেপির বিরুদ্ধে সবাই একই নৌকার যাত্রী হয়ে ওঠার চেষ্টা। পাটনার প্রথম বৈঠকের পর জোটের ভাগ্যাকাশে সামান্য হলেও বর্ষার কালো মেঘ দেখা দিয়েছিল। দিল্লির আপ সরকারের আমলাদের নিয়ন্ত্রণ করতে অর্ডিন্যান্স জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার বিরুদ্ধে সংসদে আপের পাশে থাকতে হবে কংগ্রেসকে। না হলে বেঙ্গালুরুর বৈঠকে থাকবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন আপ নেতৃত্ব। সেই মেঘ কেটে গিয়েছে। কংগ্রেস ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় আপের নেতৃত্ব বেঙ্গালুরুর বৈঠকে যোগ দিতে হাজির হয়েছেন। জোট নেতাদের দাবি, বিজেপির সর্বগ্রাসী অপশাসনের ছবিটা যত বেআব্রু হচ্ছে, জোটসঙ্গী হওয়ার সংখ্যাও তত বাড়ছে। প্রথম বৈঠকে হাজির ছিল ১৫টি দল। এবার সংখ্যাটা হবে হয়তো ২৪। ভবিষ্যতে আরও কয়েকটি দলের যোগদানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে কেন্দ্রের শাসক দল।
বেঙ্গালুরুর বৈঠক সব অর্থেই তাৎপর্যপূর্ণ। বিজেপির মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে গেলে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির প্রয়োজন। একদিকে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষা, ধর্মীয় বিভাজন আটকানো দরকার। অন্যদিকে বেকারি মূল্যবৃদ্ধির মতো জ্বলন্ত সমস্যাগুলিকে তুলে ধরে বিশ্বাসযোগ্য সমাধানের পথ বাতলাতে হবে। আবার সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া কিংবা বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্সের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে লেলিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে একযোগে রুখে দাঁড়ানোর বার্তা দিতে পদক্ষেপ করতে হবে। এই জোটবদ্ধ লড়াইয়ের ঘোষণা ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ হল আসন সমঝোতার বিষয়টি। বিজেপিকে হারাতে হলে ‘একের বিরুদ্ধে এক’ প্রার্থী দিতে হবে জোটকে। অর্থাৎ, বিরোধী ভোট ভাগাভাগি আটকাতে প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে জোটের প্রার্থী হিসাবে একজনকে দাঁড়াতে হবে। কোন ফর্মুলায় এটা সম্ভব, তাও ঠিক করতে হবে। কাজটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। জোটের নেতাদের অঙ্গীকার মতো ‘দেশ বাঁচাতে’ প্রত্যেক দল এই আত্মত্যাগ করতে রাজি হবে বলেই আশা করা যায়। না-হলে সাত মন তেলও পুড়বে না, রাধাও নাচবে না।