পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
বাহির ভিতর সকলই দেখিবে ভগবানের ইচ্ছায় পরিচালিত হইতেছে। ইহসংসারের বাহির বশীভূত হইতেছে, ইহসংসারের ভিতরও বশীভূত হইতেছে। চিত্তবৃত্তিগুলিও আপনিই নোয়াইয়া আসিবে,—তার জন্য ভয় নাই। মনে রাখিও, আমার স্নেহের মা তোমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সহায়। বাহির ভিতর দমন করিয়া তুমি যেদিন সর্ব্বদমন হইবে, সেদিন আমার সিংহবাহিনী মা তোমার সকল শক্তির উৎস। তোমার পক্ষে দুর্ব্বলতার কারণ মনে করিয়া ক্ষণেকের তরেও তাঁর প্রতি অশ্রদ্ধা বা ঘৃণা আনয়ন করিও না। তুমি নিজে যতদিন দুর্ব্বল ছিলে বা রহিবে, ততদিন জগতের সকল শক্তি-কেন্দ্রকে তুমি অবহেলে তোমার অধঃপতনের কারণ বলিয়া মনে করিতে পার; কিন্তু প্রকৃতই নারী নরকের দ্বার নহেন। নরকের দ্বার মানুষের নিজের অসংযম, নিজের ব্যভিচার-পরায়ণতা, নিজের নীচগামিনী প্রবৃত্তি। জল নিম্নগামী বলিয়াই সে নীচে গড়াইয়া পড়ে, মাটীর দোষ কি? মাটী মা-টী বলিয়াই কখনও উচ্চ, কখনও নীচ, কখনও সুন্দরশ্যামলা, কখনও ঊষর-রুদ্রা, কখনও স্নেহময়ী, কখনও শাসনহুঙ্কারিণী। মা বলিয়াই তাঁর বিচিত্র রূপ; যাহারা মাকে চিনিবে না, তাহারা ভুল বুঝিবে বলিয়া মায়ের কি দোষ? তবে, একথাও ঠিক, মা-ই ছেলেকে নিজের মত করিয়া গড়িতে পারেন, অপরে পারে না। সংসারের পঙ্কিল দৃষ্টিতে যাঁকে মানুষ নিজের অর্দ্ধাঙ্গভাগিনী বলিয়া মনে করে, যাঁকে ভোগ-বিলাসের সামগ্রী বলিয়া ভাবে, ইন্দ্রিয়ের পরিতৃপ্তিদায়ক অপরাপর জড় বস্তুর সমান জানে, তাঁর ভিতরে বিশ্বমায়ের বিশ্বময়ী মূর্ত্তি সম্পুটিত রহিয়াছে। সেই বিশ্বমূর্ত্তির অভিব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে কামের কলহ থামিয়া যাইবে, লালসার রসনা স্তব্ধ হইবে, ভোগ-তৃষ্ণা নির্ব্বাপিত হইবে। তাই, তোমাকে আজ ভগবানের আদেশ জানিয়া তোমার সহধর্ম্মিণীর মধ্যে অপ্রকটিত মাতৃরূপ প্রকটিত করিবার চেষ্টা করিতে হইবে। এত প্রয়াস তোমাকে তোমারও যথার্থ রূপ দেখাইবে, তোমার সহধর্ম্মিণীরও যথার্থ রূপ দেখাইবে।