পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
একজন গোপিকা শ্রীকৃষ্ণকে তাঁর হৃদয়ের ভাব ব্যক্ত করে বলেছেন, “রাত্রিবেলা তোমার সঙ্গে যখন আমার মিলন হয়, তখন মনে হয় রাত্রি যেন অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। শুধু এই রাত্রিই কেন? ব্রহ্মার রাত্রিও যদি আমরা পেতাম (চার শত বত্রিশ কোটি বছরে ব্রহ্মার বারো ঘণ্টা বা এক রাত্রি হয়) তা হলেও আমাদের মনে হত তা যেন অতি অল্পক্ষণ।” ব্রহ্মার এক দিনের অনুমান আমরা ভগবদ্গীতা থেকে পাই—“মানুষের গণনা অনুসারে এক হাজার চতুর্যুগে ব্রহ্মার একদিন হয় এবং সেই গণনা অনুসারে তাঁর এক রাত্রি হয়।” গোপিকারা বলেছিলেন যে, সেই রকম রাত্রি পেলেও তা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গ করার জন্য পর্যাপ্ত হবে না।
শ্রীমদ্ভাগবতের দশম স্কন্ধে গোপিকারা মা যশোদাকে বলছেন, “যখন আপনার পুত্রটি তাঁর বাঁশি বাজায়, তখন শিব, ব্রহ্মা, ইন্দ্র আদি মহাপণ্ডিত মহাত্মারাও মোহিত হয়ে যান। শ্রীকৃষ্ণের সেই বাঁশি শুনে তাঁরা গম্ভীর হয়ে যান এবং বিনয়ভাবে তাঁদের মস্তক অবনত হয়ে যায়।”
বিদগ্ধ-মাধব গ্রন্থে শ্রীল রূপ গোস্বামী শ্রীকৃষ্ণের বংশীধ্বনির বর্ণনা করে বলেছেন, “শ্রীকৃষ্ণের বাঁশির অপূর্ব সুন্দর সুরের প্রভাবে শিবের ডমরু বাজানো বন্ধ হয়ে গেছে, এবং চতুঃসন আদি ঋষিদের ধ্যান ভঙ্গ হয়ে গেছে। সেই বংশীধ্বনির প্রভাবে সৃষ্টিকার্যে লিপ্ত কমলাসীন ব্রহ্মা চমকিত হয়ে উঠেছেন, এবং অবিচলিতভাবে ব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত গ্রহগুলিকে ধারণ করে আছেন যে অনন্ত শেষনাগ, তিনিও সেই বাঁশির সুরে তাঁর মস্তক আন্দোলন করতে শুরু করেছেন। এই বংশীধ্বনি ব্রহ্মাণ্ডের আবরণ ভেদ করে বৈকুণ্ঠলোকে ধ্বনিত হচ্ছে।”
শ্রীমদ্ভাগবতের তৃতীয় স্কন্ধে উদ্ধব বিদুরকে বলছেন, “হে বিদুর! শ্রীকৃষ্ণ যখন এই পৃথিবীতে প্রকট হয়ে তাঁর অন্তরঙ্গা শক্তি প্রদর্শন করেছিলেন, তখন তাঁর অপূর্ব মাধুর্যমণ্ডিত পরম আকর্ষণকারী রূপ এই পৃথিবীতে প্রকাশিত হয়েছিল এবং তাঁর অন্তরঙ্গা শক্তির প্রভাবে তিনি তাঁর ঐশ্বর্য প্রদর্শন করেছিলেন, যা দেখে সকলেই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিল।