পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
“মধুকৈটভনাশঞ্চ মহিষাসুরঘাতনম্।
কীর্ত্তয়িষ্যন্তি যে তদ্বদ্ বধং শুম্ভনিশুম্ভয়োঃ।”
“রক্ষাং করোতি ভূতেভ্যো জন্মনাং কীর্তনং মম” শ্রীমদ্ভাগবতে প্রায় প্রতি অধ্যায়ে কীর্তন ও কীর্তিত শব্দ বহু বার প্রযুক্ত হয়েছে। চণ্ডীদাস, বিদ্যাপতি ও অন্যান্য বৈষ্ণব পদকর্তা মহাজনদের রচিত পদাবলী প্রভৃতির এবং মুকুন্দরামের চণ্ডীমঙ্গল ও এইরূপ ভক্তিমূলক অন্যান্য গানকেও সাধারণতঃ কীর্তনই বলা হয়। শ্রীচৈতন্যভাগবত, শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত ও শ্রীচৈতন্যমঙ্গল প্রভৃতি প্রখ্যাত ভক্তি-গ্রন্থসমূহ প্রধানতঃ ভগবানের নামাদি কীর্তন ও কীর্তন-মহিমার বর্ণনায় তৎপর। একাকী কীর্তনে কেবল নিজের আধ্যাত্মিক উপকার কিন্তু উচ্চ কীর্তনে নিজের ও সেই সঙ্গে শ্রোতা জনগণেরও উপকার সাধিত হয়। কর্মফলে স্থাবর জন্ম পেয়ে যে সকল আত্মা বৃক্ষাদির মধ্যে অবস্থিত তারা এবং পশু পাখি প্রভৃতি ও ভগবানের নাম কীর্তন শুনে বিশেষভাবে উপকৃত হয়। আবার বহু নরনারীর একত্র সমবেতভাবে যে সঙ্ঘ তাহার অসামান্য ও অনুপম ফল শাস্ত্রে ঘোষিত হয়েছে এবং প্রত্যক্ষ অনুভূত হয়। সংকীর্তনকারী ভক্তবৃন্দের নিজেদের ও শ্রোতৃবৃন্দের আধ্যাত্মিক উন্নতি, চিত্তশুদ্ধি, ত্রিতাপ শান্তি, ভক্তিবৃদ্ধি ও বিমলানন্দপ্রাপ্তি ফল অবশ্যম্ভাবী। সমবেতভাবে কীর্তনের আরও সুফল,—সংহতি, ঐক্য, অখণ্ডতাবোধ, ভাবের আদান-প্রদান, পরস্পর দেখে শ্রদ্ধাভক্তি শিক্ষা, উৎসাহবৃদ্ধি এবং পবিত্র আধ্যাত্মিক এক মহামিলন। এই হেতু বর্তমান যুগে হিন্দুধর্মের প্রায় প্রত্যেক সম্প্রদায়ের ধর্মীয় যে কোনও অনুষ্ঠান ও সভা সমিতি প্রভৃতিতে বহুজনের মিলিতভাবে ভগবানের নামসংকীর্তন সহ শোভাযাত্রাদি হয়। প্রাচীন আর্যধর্মে ব্রহ্মগায়ত্রীর যে সমবেত উপাসনা ছিল তা ‘ধীমহী’ পদে বোঝা যায়, কিন্তু সংকীর্তন ছিল না। তান্ত্রিক শক্তি-সাধনায় যে ভৈরবীচক্র তাহাও সমবেত উপাসনা। উপনিষদের যুগে একমাত্র ওঙ্কারেরই উচ্চ কীর্তন সহ উপাসনা ছিল। ‘ওমিতি উদ্গীথমুপাসীত”। মুসলমান ও খৃষ্টান ভক্তগণের ঈশ্বরের নামাদির জপ ও কীর্তনের ব্যবস্থা আছে। শিখ ও ব্রাহ্ম ধর্ম্মের উপাসকগণ সৎ নাম ও ব্রহ্মমন্ত্র ওঙ্কার জপ করেন।