পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
অহংকার, মন, প্রাণ, ইন্দ্রিয় ও দেহ (যেগুলি বিষয়সমূহের এবং সুখদুঃখাদির ভোক্তা ও ভোগের সাধন), রূপরসাদি বিষয় এবং সুখদুঃখাদি যে নিত্যবোধস্বরূপ আত্মার দ্বারা ঘটাদির ন্যায় বিষয়রূপে প্রকাশিত হয় (সেই আত্মাই তোমার জ্ঞাতব্য)। যাঁহার ইচ্ছায় ইন্দ্রিয়সমূহ ও প্রাণ স্বস্ববিষয়ে প্রবৃত্ত হয় তিনি এই অন্তরাত্মা সনাতন পুরুষ, নিত্য-অখণ্ড-সুখানুভবস্বরূপ, সর্বদা একরূপ এবং জ্ঞানমাত্রস্বরূপ (সর্ববৃত্তিতে অভিব্যক্ত চৈতন্যস্বরূপ আত্মা)। এই দেহে, সত্ত্বগুণপ্রধান অন্তঃকরণে, বুদ্ধিরূপ গুহায় এবং কারণ-শরীরে, জ্যোতিষ্মান্ আত্মা স্বীয় তেজের দ্বারা এই বিশ্বকে প্রকাশ করিয়া ঊর্ধ্বে প্রকাশমান সূর্যের ন্যায় সাক্ষিরূপে বর্তমান রহিয়াছেন। আত্মা মন এবং অহংকারের বিকারসমূহের ও দেহ, ইন্দ্রিয় এবং প্রাণের ক্রিয়াসমূহের জ্ঞাতা। (আত্মা কিভাবে জ্ঞাতা তাহা বলা হইতেছে।) জ্বলন্ত লৌহপিণ্ডে বর্তমান অগ্নি যেমন লৌহপিণ্ডের আকার-অনুসারে ত্রিকোণ, চতুষ্কোণ বা গোলাকার বলিয়া প্রতীয়মান হইলেও প্রকৃতপক্ষে অগ্নির কোন পরিবর্তন হয় না, সেই প্রকার আত্মা মন-অহংকার-দেহ-ইন্দ্রিয়াদি উপাধিসমূহের ক্রিয়াসকলের জ্ঞাতারূপে সর্বদা বর্তমান থাকেন। আত্মা নিজে কোন কাজ করেন না বা কোনরূপ বিকারপ্রাপ্ত হন না। আত্মা নিত্য; তিনি জন্মান না, মরেন না, বৃদ্ধি পান না, ক্ষয়প্রাপ্ত হইয়া যান না বা বিকৃত হন না। কোন কুম্ভের মধ্যে যে আকাশ থাকে, সেই কুম্ভ ভাঙ্গিয়া গেলে আকাশের যেমন কিছু হ্রাসবৃদ্ধি হয় না (কুম্ভমধ্যস্থ আকাশ মহাকাশ হইতে কোন কালে ভিন্ন নয় বলিয়া), সেইপ্রকার এই দেহ নষ্ট হইলে আত্মা নাশপ্রাপ্ত হন না। কারণ ও কার্য হইতে ভিন্ন, শুদ্ধজ্ঞানস্বরূপ নির্বিশেষ পরমাত্মা অখিল স্থূল ও সূক্ষ্ম জগৎকে প্রকাশ করিয়া বুদ্ধিবৃত্তির সাক্ষিরূপে জাগ্রদাদি তিন অবস্থাতেই ‘আমি আমি’ বলিয়া নিজেকে প্রকাশ করিয়া যেন লীলা করিতেছেন। তুমি সংযতমনের এবং শুদ্ধবুদ্ধির সহায়ে নিজের দেহে (এই জীবনে) পূর্ববর্ণিত আত্মস্বরূপকে ‘এই শুদ্ধ আত্মাই আমি’ এইপ্রকারে প্রত্যক্ষস্বরূপে অনুভব কর এবং ইহার ফলে জন্মমরণতরংগাকুল অপার সংসারসাগর উত্তীর্ণ হও; ব্রহ্মে স্থিতিলাভ করিয়া কৃতার্থ হও। এই অনাত্মা দেহাদিতে ‘আমি’-জ্ঞানই বন্ধন। অজ্ঞান হইতে উদ্ভূত এই বন্ধন পুরুষের জন্মমরণরূপ ক্লেশপ্রাপ্তির কারণ।