পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
যোগীরা যে স্মরণ মনন করেন, তার নাম মনোযোগ। তাঁ’তে যখন মনের যোগ হয়, তখন ঈশ্বরকে খুব কাছে, হৃদয়ের মধ্যে দেখে। যতই এই যোগ হবে, ততই বাইরের জিনিস হতে মন সরে আসবে। সাধনা তিন প্রকার: সাত্ত্বিক, রাজসিক, তামসিক। সাত্ত্বিক সাধনায় তাঁকে ব্যাকুল হয়ে ডাকে বা শুদ্ধ তাঁর নামটি নিয়ে থাকে, কোন ফলাকাঙ্ক্ষা নেই। রাজসিক সাধনায় নানা প্রকার প্রক্রিয়া—এতবার পুরশ্চরণ, এত তীর্থ, পঞ্চতপা, ষোড়শ উপাচারে পূজা প্রভৃতি করতে হবে। তামসিক সাধনা—তমোগুণ আশ্রয় করে সাধনা। জয় কালী! কি, তুই দেখা দিবি না! এই গলায় ছুরি দেব, যদি দেখা না দিস্। এ সাধনায় শুদ্ধাচার নেই, যেমন তন্ত্রের সাধন। ভক্তির তম আনবে। মার কাছে জোর কর। তোমার যে আপনার মা গো! একি পাতান মা? একি ধর্ম-মা? এতে জোর চলবে না তো কিসে জোর চলবে? যার যাতে সত্তা থাকে, তার তাতে টানও থাকে। মায়ের টান বাপের চেয়ে বেশী। তাঁকে ডাকবার সময় একটা ভাব আশ্রয় করতে হয়—সখী-ভাব, দাসী-ভাব, সন্তান-ভাব, বীর-ভাব। আমার ভাব মাতৃ-ভাব, সন্তান-ভাব। এ ভাব দেখলে মায়াদেবী পথ ছেড়ে দেন লজ্জায়। মাতৃভাব অতি শুদ্ধ ভাব। তন্ত্রে বামাচারের কথা আছে, কিন্তু সে ভাব ভাল নয়; বীর-ভাবে প্রায়ই পতন হয়, ভোগ রাখলেই ভয়। মাতৃ-ভাব যেন নির্জলা একাদশী, কোন ভোগের গন্ধ নেই। এতে কোন বিপদ নেই। স্তন-মাতৃস্তন, যোনি-মাতৃযোনি। এই মাতৃভাব সাধনের শেষ কথা। তুমি মা, আমি তোমার ছেলে, এই শেষ কথা। কলিতে বেদমত চলে না, তন্ত্রোক্ত মাতৃভাবে সাধন কর। মার কাছে ব্যাকুল হয়ে ডাক। আপনার মা-বোধ থাকলে এখুনি হয়। তাঁকে দেখার জন্যে অন্তত একবার কাঁদ।
আমার বাঁদর-ছা’র ভাব নয়, বিড়াল-ছা’র ভাব। বিড়াল-ছা’ কেবল মিউ মিউ করে ডাকে। তার মা যেখানে রাখে—কখন হে’সেলে রাখছে, কখনো বাবুদের বিছানায়। ছোট ছেলে মাকে চায়। মার কত ঐশ্বর্য সে জানে না, জানতে চায়ও না। সে জানে, আমার মা আছে; আমার ভাবনা কি?
আমার সন্তান-ভাব। ছেলে খায়, দায়, বেড়ায়, অতশত জানে না। আমি খাবো, দাবো, আর বাহ্যে যাবো। বিশ্বাস কর, নির্ভর কর; তাহলে নিজের কিছু করতে হবে না। মা-কালী সব করবেন। তাঁকে আম্মোক্তারি (বকলমা) দাও, যা হয় তিনি করুন। তুমি বিড়ালছানার মত কেবল তাঁকে ডাক—ব্যাকুল হয়ে। বড় লোকের ওপর যদি ভার দেওয়া যায়, সে লোক কখন মন্দ করবে না। তাঁর ওপর আন্তরিক সব ভার দিয়ে, তুমি নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাক। ঈশ্বরের শরণাগত হয়ে তাঁকে ডাকলে তিনি শুনবেই শুনবেন।