পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
সহজং কর্ম্ম কৌন্তেয় সদোষমপি ন ত্যজেৎ।/ সর্ব্বারম্ভা হি দোষেণ ধূমেনাগ্নিরিবাবৃতাঃ।।
সহজ অর্থে easy নয়। জন্মের সহিত পাওয়া যায় বলে উহা সহজকর্ম, যা পেতে কোন প্রকার চেষ্টা বা কষ্ট করতে হয় না। যেমন সকল কর্মই আরম্ভমুখে ধূমাবৃত অগ্নির ন্যায় দোষযুক্ত থাকে, তেমনি এই সহজকর্মরূপ প্রাণকর্মও প্রথম প্রথম দোষযুক্ত হলেও উহা ত্যাগ করা কখনও উচিত নয়। বৈষ্ণবদের বিবর্তবিলাস গ্রন্থে আছে:—
সহজ সাধন সহজ ভজন ইহা ছাড়া কিছু নাই।/
ছাড়ি জপ তপ করহ আরোপ ঐক্যতা করিয়া মনে।।
কিন্তু উক্ত সহজসাধন পাওয়া অত্যন্ত দুর্লভ, সদ্গুরুর করুণা ছাড়া পাওয়া যায় না।
দুর্লভো বিষয়ত্যাগো দুর্লভং তত্ত্বদর্শনম্।/
দুর্লভা সহজাবস্থা সদ্গুরো করুণাং বিনা।
বিষয় ত্যাগ এবং আত্মতত্ত্বদর্শন যেমন দুর্লভ, তেমনি সহজাবস্থাও অতি দুর্লভ যা সদ্গুরুর করুণা বিনা পাওয়া অসম্ভব। সহজাবস্থা অর্থাৎ এই সহজকর্মরূপ প্রাণকর্ম করতে করতে যে স্বতঃ স্থির অবস্থার উদয় হয় সেই সহজাবস্থা সুদুর্লভ। মহাত্মা কবির এই সহজসাধন সম্বন্ধে বলেছেন:—কবীর সহজ কি ধুনি লাগি রহে,/ সেত এহত ঘট্ মাহি।/ হৃদে হরি হরি হোৎ হ্যায়,/ মুখ কি হাজত নাহি।। সহজকর্মরূপ ধুনি এই শরীরেই আছে এবং তাতে সর্বদা আপনা হতেই হরি হরি হচ্ছে, মুখে চিৎকার করবার আবশ্যক নেই। অনেকে মনে মনে করেন বা মালা দ্বারা জপ করে থাকেন, কেহ বা চিৎকার করে হরিনাম সংকীর্তন করেন। অনেকের ধারণা, উহাতেই মোক্ষ প্রাপ্ত হবেন। এই প্রকারে আত্মদর্শন হয় না এবং আত্মদর্শন ব্যতিরেকে মোক্ষ প্রাপ্তও হয় না, কারণ উহা ইন্দ্রিয়ের কর্ম। ইন্দ্রিয়ের পথ রাজপথ নয়। মন স্বয়ং ইন্দ্রিয়। আবার বাক্শক্তির অভাবে সংকীর্ণ হতে পারে না। শ্রবণ বা ঘ্রাণশক্তির দ্বারা সাধন করলে ঐ সকল ইন্দ্রিয়ের অভাবে সাধন হতে পারে না। এই প্রকারে সকল ইন্দ্রিয়ের অভাব হলেও শ্বাস-প্রশ্বাসের অভাব কখনই হতে পারে পারে না। অতএব প্রাণকর্মরূপ বায়ুপ্রক্রিয়াই একমাত্র সাধনার প্রশস্ত রাজপথ, যে পথে সকলেই অনায়াসে গমন করতে পারেন। এই শ্বাস-প্রশ্বাসই প্রাণের ক্রিয়া এবং প্রাণের বহিঃপ্রকাশ। উহার প্রতি কারও লক্ষ্য নেই।