পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
আমাদের পূর্ণজ্ঞান না হওয়া পর্যন্ত পরমাত্মার কোন ধারণা বা কল্পনা নিয়ে থাকতে হবে। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই আমাদের বিশ্বাস বা মতকে যাচাই করতে হবে। মত যদি সত্যে প্রতিষ্ঠিত হয় তবে তা পুষ্টিলাভ করবে, তা না হলে বিনষ্ট হবে। জীবনের উদ্দেশ্য মুক্তি—বার বার জন্ম মৃত্যুজনিত ভয়, রোগ, ক্লেশ ও সংগ্রাম থেকে মুক্ত হয়ে পরম শান্তি লাভ করা। এর উপায় আত্মজ্ঞান লাভ। ভারতের সহস্র সহস্র ঋষি বহু কাল ধরে এই কথাই ঘোষণা করে গেছেন। অধ্যাত্ম-জীবনের প্রথম শর্ত আত্মানুভূতি লাভের আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা বা বিশ্বাস। এই আদর্শে স্থির হতে হবে—স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হবে—স্বাধীন পথে অগ্রসর হবার পূর্বে। এই পথ সম্বন্ধে ও উদ্দেশ্য সম্বন্ধে—অর্থাৎ জীবনের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে আমাদের নির্দিষ্ট ধারণা থাকা একান্ত প্রয়োজন। যত দিন আমরা ভাবে ও কাজে ভাসাভাসা, স্বপ্নের মতো, ধোঁয়াটে ধারণা নিয়ে থাকব আমরা সতত দ্বন্দ্বে ভুগব যা আমাদের বেশির ভাগ লোককে উদ্দেশ্যের প্রতি এক ধাপও অগ্রসর হতে দেবে না। একদিকে ওপর ওপর চিন্তা, অগভীর অনুভূতি, অনির্দিষ্ট আকাঙ্ক্ষা ও অত্যন্ত কর্মযোগ লক্ষ্য করা যায় আর অন্যদিকে সত্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা বা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য বা গভীর জ্ঞানের অভাব। জৈন বৌদ্ধদের মধ্যে একটি উপদেশপূর্ণ গল্প প্রচলিত আছে— “একটি সন্ন্যাসী জেন প্রভুকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ‘একটি সিংহ যখন শিকার ধরে, খরগোসই হোক আর হাতিই হোক, সে তার সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে। এই শক্তির প্রকৃতি কিরূপ?’ প্রভু বললেনঃ ‘পূর্ণ ঐকান্তিকতার ভাব। প্রতারণা না করার শক্তি।’ (সংক্ষিপ্ত উত্তরটিকে ব্যাখ্যা করে বলেন।) ‘প্রতারণা না করার অর্থ সমস্ত সত্তাকে একযোগে কাজে নিয়োগ করা। একেই বলে সমস্ত সত্তাকে একযোগে কাজে লাগানো—কিছুই জমিয়ে না রেখে বা অন্য ভাবে অপ্রকাশিত না রেখে—অপচয় হতে না দিয়ে। এইভাবে জীবন যাপন করলে তাকে বলা হয় স্বর্ণ-কেশরযুক্ত সিংহ—তেজ, ঐকান্তিকতা ও একনিষ্ঠার প্রতীক’।”