পুরনো রোগের বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্যহানির সম্ভাবনা। ব্যবসায় শুভত্ব বজায় থাকবে। আর্থিক প্রগতিও হবে। ... বিশদ
এই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য কয়েক মাস আগেও অমিত শাহের পুলিসের নির্লজ্জ তাণ্ডবের সাক্ষী থেকেছে। গত জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’ প্রদর্শনের আয়োজন করেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। প্রদর্শন শুরু হতেই সেদিন ক্যাম্পাসে ঢুকে বেপরোয়া লাঠিচার্জ করে পুলিস। বেশ কিছু পড়ুয়াকে আটক করা হয়। ২০১৯ সালে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই আতঙ্কের রাতের কথা ধরা যাক। পুলিসের বেপরোয়া লাঠি আর কাঁদানে গ্যাসের হাত থেকে বাঁচতে কয়েকশো শিক্ষার্থী সেই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে আশ্রয় নেন। প্রাণে বাঁচতে অনেকে বাথরুমে লুকিয়ে পড়েন। কিন্তু ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি ছাড়াই সেখানে প্রায় শতাধিক পুলিস গিয়ে পড়ুয়াদের উপর হিংস্র আক্রমণ ও ভাঙচুর চালায়। রক্ত ঝরানো সেই আক্রমণে কমপক্ষে ২০০ জন পড়ুয়া আহত হন। ঘটনায় দেশজুড়ে গর্জে ওঠে ছাত্রসমাজ। আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তত ৩০০ পড়ুয়া বিবৃতি দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন। মোদি জমানায় রাজধানীতে পুলিসি বাড়াবাড়ির নিদর্শন মিলেছে গত মাসেও। জুন মাসের শেষ সপ্তাহে দিল্লির রাস্তায় দুই ব্যক্তির কাছ থেকে ব্যাগ ভর্তি দু’লক্ষ টাকা ছিনতাই করে পালায় দুষ্কৃতীরা। প্রকাশ্য দিবালোকের এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সমালোচিত হয় পুলিস। এতেই যেন আঁতে ঘা লাগে পুলিসের। এবার তাই পাঁচ দুষ্কৃতীকে ধরতে মাঠে নেমে তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে এক হাজার ছ’শো জনকে আটক করে। পাশাপাশি রাস্তায় তল্লাশি চালাতে দু’হাজার গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়। নাগরিক-হয়রানির এমন চমকপ্রদ ঘটনার পরেও নির্বিকার দিল্লির পুলিস ও তাদের মন্ত্রী!
শুক্রবারের ঘটনায় শুধু পুলিস নয়, অবাক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ‘প্রাক্তনীর’ (প্রধানমন্ত্রীর) আগমন উপলক্ষে কিছু কলেজ কর্তৃপক্ষের দেওয়া নানা ফতোয়াকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মোদির অনুষ্ঠানে কালো পোশাক না পরে আসার জন্য পোশাক নির্দেশিকা জারি হয়েছিল। কেন? শিক্ষাক্ষেত্রে এঘটনা বিরল। এখানেই থামা নেই। শুক্রবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলে পড়ুয়াদের পাঁচ দিনের উপস্থিতি দিয়ে দেওয়ার কথাও নাকি জানিয়েছিল কিছু কলেজ। কী অদ্ভুত বৈপরীত্য! কারণ পাশাপাশি এদিনই ‘বিক্ষোভের আঁচ’ করে দুই পড়ুয়াকে নজরবন্দি করে রাখার অভিযোগও উঠল! আর প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঠায় বসিয়ে রাখা হল অধ্যাপকদের। অব্যবস্থা ছিল খাবার, পানীয় জলের ক্ষেত্রেও। আর যে দোর্দণ্ডপ্রতাপ মানুষটির জন্য নিরাপত্তার এমন বজ্রআঁটুনি, তিনি অবশ্য ‘সত্যিকারের প্রাক্তনী’ সেজে নিজেকে ‘সাধারণ’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টায় ত্রুটি রাখলেন না। একেই বলে বোধহয় নৌটঙ্কি!