পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
প্রকৃতির স্বপ্নপুরী ভূস্বর্গ কাশ্মীর ভ্রমণে অধিকাংশ পর্যটকই শ্রীনগর থেকে চেনা গন্তব্য সোনমার্গ, গুলমার্গ, পহেলগাঁও ঘুরে দেখেন। কিন্তু একথা অনেক পর্যটকেরই অজানা, যে এর বাইরেও কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি অচেনা বা অল্পচেনা দ্রষ্টব্য স্থান রয়েছে যেখানে প্রকৃতি তার অকৃপণ সৌন্দর্যকে উজাড় করে দিয়েছে। এ লেখায় রইল তেমনই কয়েকটি গন্তব্যস্থলের খোঁজখবর।
শ্রীনগর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে সবুজ ঘাসের কার্পেটে মোড়া বিস্তৃত বুগিয়াল আর অরণ্যে ঘেরা এক আশ্চর্য পাহাড়ি দুনিয়া যুসমার্গ যেন স্বপ্নের ঠিকানা। অরণ্য লাগোয়া মেষপালকদের গ্রাম। ঢেউ খেলানো বুগিয়ালের বুক চিরে বয়ে চলেছে নাম না জানা ঝোরা! ছোট একটা হ্রদও আছে এখানে। ঘোড়ায় চেপে এখান থেকে ঘুরে আসা যায় নীলগঙ্গা, দুধগঙ্গা। যুসমার্গের নিরালা প্রকৃতির মাঝে থাকার জন্যে রাজ্য পর্যটনের কটেজ রয়েছে। যাত্রাপথে দেখে নিন চারার-ই-শরিফ দরগা। কথিত আছে এই পথে নাকি যিশুখ্রিস্ট তাঁর চরণ চিহ্ন এঁকে রেখে গিয়েছেন। বস্তুত ‘যুসমার্গ’ নামটাও সেই থেকেই এসেছে।
শ্রীনগরে এসে ডাল হ্রদ তো দেখবেনই। শিকারা চড়ে ডাল লেকে বোটিং এক অনন্য অভিজ্ঞতা। কিন্তু উলার বা মানসবল হ্রদ দুটোই বা বাদ দেবেন কেন? এই দুটো হ্রদও অবশ্যই আপনার ভ্রমণসূচিতে ঢুকিয়ে নিন। কাশ্মীর ভ্রমণসূচি বানানোর সময় একটা দিন বরাদ্দ করুন এই দুই অচেনা হ্রদ দেখার জন্য। শ্রীনগর থেকে সারাদিনের ট্যুরে গাড়ি নিয়ে উলার, মানসবল ছাড়াও দেখে নিন ক্ষীরভবানী মন্দির।
শ্রীনগর থেকে পাহাড়ি গ্রাম পেরিয়ে প্রথমে পৌঁছবেন ৩০ কিমি দূরের ক্ষীরভবানী মন্দিরে। চারপাশে চিনার গাছের সারি। ছোট্ট মন্দিরের সামনে দিয়ে বয়ে চলেছে ক্ষীণকায়া জলধারা। জাগ্রত দেবীমন্দিরে পুজো দেওয়ার আগে এই ঝোরায় অনেক পুণ্যার্থী স্নান করেন। এখান থেকে গ্রাম্য পথ ধরে ১০ কিমি এগলে পৌঁছবেন মানসবল হ্রদের দোরগোড়ায়। চারপাশে নির্জন পাহাড়ি প্রকৃতির মাঝে ভেসে রয়েছে প্রায় ৫ কিমি দীর্ঘ কাশ্মীর উপত্যকার এই গভীরতম হ্রদ। হ্রদের একপাশে চমৎকার বাগান করা। তার গায়েই রাজ্য পর্যটনের ট্যুরিস্ট কটেজ। এই হ্রদেও শিকারা ভ্রমণ করা যায়। একদিকে রয়েছে মোগল আমলের উদ্যান ঝারোখা বাগ। অন্যদিকে রয়েছে নবম শতকে নির্মিত জলের মধ্যে অর্ধেকটা ডুবে থাকা একটি ছোট শিবমন্দির। হ্রদ লাগোয়া গ্রামটিও দেখে নিন। হ্রদের জলে প্রচুর পাখির দেখা মেলে। চারপাশের পাহাড়ি প্রকৃতিও অপরূপ সুন্দর।
বিস্তৃত সবুজ উপত্যকা, পাহাড়ি অরণ্য আর আকাশজোড়া পাহাড়সারি নিয়ে এক অসাধারণ ভ্রমণ ঠিকানা দুধপাথরি যেন প্রকৃতির আপনখেয়ালে গড়া। এদিকেও সেভাবে পর্যটকদের ভিড় দেখা যায় না। প্রকৃতি এখানে ঋতুভেদে রূপ পাল্টায়। শীতে বরফের চাদরে ঢেকে থাকে এই অঞ্চল। পায়ে হেঁটে বা ঘোড়ায় চেপে এখান থেকে ঘুরে নেওয়া যায় শালিগঙ্গা নদী, আরিতার, পরিহাস বুগিয়াল প্রভৃতি। শ্রীনগর থেকে ৫০ কিমি দূরের দুধপাথরি গাড়ি নিয়ে দিনেদিনেই ঘুরে নেওয়া যায়। তবে যদি এখানে থাকতে চান তাও সম্ভব। থাকার জন্য রয়েছে ট্যুরিস্ট কটেজ। শ্রীনগরের আশপাশের অচেনা গন্তব্যের আরও তথ্য ও গাইডের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন অসীম ভাটের সঙ্গে। ইমেল asim@mountaintrails.co.in
ছবি: সুবীর কাঞ্জিলাল