পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
ভারতে জন বিস্ফোরণ নিয়ন্ত্রণে সেই ১৯৫২ সালে ন্যাশনাল ফ্যামিলি প্রোগ্রামে প্রচলিত হয়েছিল ‘হম দো হমারে দো’ নীতি। সেটাই কয়েক দশক পরে হয়ে গেল ‘আমরা দু’জন, আমাদের একজন’। সেই ধারণাও পাল্টে যাচ্ছে। সন্তানেই যে পরিবারের পূর্ণতা, তা আর মানছেন না অনেক দম্পতি। জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ‘ডিঙ্ক’।
DINK বা ডিঙ্ক— এটা আসলে কী? এর পুরো কথা হল ‘ডুয়াল ইনকাম, নো কিডস’। সেটাকেই ছোট করে ডিঙ্ক। বিশ্বজুড়ে একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নতুন বিয়ে করেছেন এবং স্বামী-স্ত্রী উভয়েই চাকরিজীবী, এমন প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ দম্পতি সন্তানধারণে ইচ্ছুক নন। এদেশেও ক্রমশ বাড়ছে এমন দম্পতির সংখ্যা।
কেন সন্তানধারণে ইচ্ছুক নন কর্মরত দম্পতিরা? সবার আগে আসে কেরিয়ার। এখন পুরুষ-মহিলা দু’জনেই নিজেদের কেরিয়ারের উপর অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। সেখানে সন্তান নেওয়া মানেই কেরিয়ারে প্রশ্নচিহ্ন, বিশেষত একজন মহিলার পক্ষে। পাশাপাশি রয়েছে আর্থিক অবস্থাও। ফলে সেই ঝুঁকিটা বর্তমানে অনেকেই নিতে চাইছেন না। আবার এমনও অনেক দম্পতি সন্তানধারণের সময়টা পিছিয়ে দিচ্ছেন। কর্মরত দম্পতিরা ভাবছেন, আগে কেরিয়ারটা একটু গুছিয়ে নিই, তারপর পরিবার পরিকল্পনা। যদিও মনে রাখতে হবে, পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই বয়স একটা বড় ফ্যাক্টর। স্পর্শ ইনফার্টিলিটি সেন্টারের ডিরেক্টর স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দেবলীনা ব্রহ্মের কথায়, ‘বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের ডিম্বাণুর সংখ্যা ও মান কমতে থাকে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে মিসক্যারেজ, ভ্রূণের জেনেটিক ও ক্রোমোজোমজনিত নানা অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি।’
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ৩০ বছর পর্যন্ত মেয়েদের ‘টেক হোম বেবি রেট’ (গর্ভবতী হওয়া, গর্ভাবস্থা কাটানো ও সুস্থ শিশুর জন্ম দেওয়া) জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে ৫০ শতাংশ। ৩৫-এর পর কমে হয় ২৫-৩০ শতাংশ। চল্লিশের পর ১০ শতাংশ!
ডাঃ ব্রহ্মের কথায়, ‘এখন পরিবেশ দূষণ, অসংযমী জীবনযাপনের কারণে কম বয়সেই ওভামের সংখ্যা ও মান হ্রাস পাচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে স্ট্রেসের নেতিবাচক প্রভাবও মহিলাদের ওভামের সংখ্যার ওপর পড়ছে। অল্প বয়সেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন বহু মহিলা। এর ফলে গর্ভধারণগত সমস্যা বাড়ছে। তাই ৩০-৩২ বয়সের মধ্যে সন্তানধারণ করা উচিত। পরিকল্পনা থাকলে দেরি করা ঠিক নয়। আইভিএফ-এর ক্ষেত্রেও বয়স একটা ফ্যাক্টর। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর এই পদ্ধতি নেব, এমনটা না ভাবাই উচিত।