মরু শহর দুবাইতে ইট কাঠ কংক্রিটের মেলা। কনস্ট্রাকশনের নতুনত্ব অনেক চোখে পড়লেও মন মজানো শিল্পকলার তেমন কদর এখানে ছিল না। সেই চেনা ছকটাকেই ভেঙে দিতে চান শিল্পী প্রীতি পাওয়ানি। দুবাইতে সৃষ্টিশীল দুনিয়া গড়ে তোলার স্বপ্ন তাঁর চোখে। একটা ‘ডু ইট ইওরসেল্ফ’ স্টুডিও দিয়ে নিজের এই স্বপ্ন সাকার করার চেষ্টা শুরু করেন প্রীতি। সেখানে তিনি অ্যাক্রিলিক পেন্টিংয়ের ক্লাস নিতেন। বাবা শিল্পী। তাঁরা ছিলেন মুম্বই নিবাসী। বাবার কাছেই আঁকা শিখেছেন প্রীতি। বিয়ের পর দুবাই এসে যখন দেখলেন এখানে শিল্পের তেমন কদর নেই, তখন সেই কদর তৈরি করার দিকে মন দিলেন তিনি। প্রথম দিকে প্রতিবেশী মহলেই আঁকার ক্লাসের আয়োজন করতেন প্রীতি। ক্রমশ পরিচিতি ছড়াতে লাগল। অনেকেই আঁকার দিকে হাত বাড়ালেন। প্রীতির তখন মনে হল আরও নতুন কিছু করার কথা। ইতিমধ্যে মহামারীতে সবাই ঘরে বন্দি। সময় কাজে লাগিয়ে আর নিজের শৈল্পিক সত্তার সাহায্য নিয়ে একেবারে অন্যরকম কিছু শেখার পরিকল্পনা করলেন তিনি। মাটি দিয়ে মূর্তি গড়ার কাজে মন দিলেন। কাঠে কার্ভিং করে টুকটাক জিনিস বানাতে আগেই জানতেন। এখন মাটির তাল থেকে তিল তৈরিতে মেতে উঠলেন। কিছুটা নিজের কল্পনা আর কিছুটা পেশাগত প্রশিক্ষণ মিলে তৈরি হল ক্লে আর্ট স্টুডিও। দেশি বিদেশি ছাত্রছাত্রী রয়েছে প্রীতির। পর্যটকদেরও শেখান তিনি। নতুনত্বের স্বাদ নিতে অনেকেই আগ্রহী হয়। পাশাপাশি ভারতীয় মহিলাদের শিল্পকর্মও তুলে ধরেছেন প্রীতি নিজের স্টুডিওতে। রাজস্থান, গুজরাত ও মুম্বইয়ের গ্রামের মেয়েদের হস্তশিল্প আনিয়ে তা বিক্রি করেন নিজের স্টুডিওতে। বললেন, ‘দুবাইতে অনেক কিছুই আছে, কিন্তু শিল্পীদের কোনও সংগঠন নেই। তেমনই একটা জগৎ গড়ে তোলাই আমার স্বপ্ন।’