Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

হারিয়ে যাওয়া যৌথ পরিবার
সমৃদ্ধ দত্ত

হেরে গিয়েছে গণতন্ত্র। জিতেছে স্বৈরতন্ত্র। সেইসব একান্নবর্তী পরিবারে বহু সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই ছিল আলোচনার পরিসর। সেজো মামার নাতনির অন্নপ্রাশনে কী দেওয়া হবে? নূপুরের জন্য এই শ্যামনগরের পাত্রটি কি মানানসই? নাকি কসবার এই ডাক্তার ছেলেকেই বাছাই করা হবে? বাড়ি রিপেয়ারিংয়ের সময় এবার কী রং হবে বাইরে? তিনতলায় একটা ঘর না কর঩লেই চলছে না! সকলে কিছু কিছু দিলে তো হয়ে যায়। তোমরা কী বল? এই যে ‘তোমরা কী বল’ প্রশ্ন অথবা ওই যে সকলের অভিমত চাওয়া কিংবা মতামতগুলি স্বতঃস্ফূর্তভাবে উঠে আসা, এই সংলাপগুলি বালিগঞ্জ থেকে রানাঘাট সর্বত্রই শোনা যেত একান্নবর্তী পরিবারে। যৌথ পরিবারে ছিল এই গণতন্ত্র। মতামত নিয়ে ঝগড়া হবে। সিদ্ধান্ত নিয়ে টানাপোড়েন হবে। তিক্ততা হবে কয়েক ঘণ্টার। একজন কেউ আলোচনার ঘর ছেড়ে দ্রুত বেরিয়ে যাবে রেগে গিয়ে, যার নিশ্চিত শেষ বাক্যটি হবে, ‘তাহলে তোমরা যা ভালো বোঝ কর, আমাকে এসবের মধ্যে রেখো না। আমার যা বলার বলে দিয়েছি। এখন তোমাদের ব্যাপার’। বড় বউদির টিউমার হয়েছে শুনে হঠাৎ গোটা বাড়িতে নেমে আসবে নীরবতা। সকলেই হঠাৎ হঠাৎ বড় বউদির সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে শুরু করবে। কোনও এক মেজদা বলবেন, ‘আমার মনে হয় এককথায় অপারেশন করার আগে আমাদের একটা সেকেন্ড ওপিনিয়ন নেওয়া দরকার অন্য কোনও ডাক্তারের।’ আমরা আজ এতদিন পর লক্ষ করলে দেখব এই বাক্যটির মধ্যে থাকা ‘আমাদের’ শব্দটি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অর্থাৎ এই যে বড় বউদির অপারেশন হবে, এটা ‘আমাদের’ চিন্তা সকলের। মিলিত ভাবনা। সিদ্ধান্ত যা হবে সেটা হবে আমাদের। শুধু বড়দার নয়। অর্থাৎ বড়দাকে ভাবার সুযোগই দেওয়া হবে না যে, আমার যা মনে হয় করব।
যৌথ পরিবার চলে গিয়ে বাঙালি জীবনে সবথেকে বেশি গ্রাস করেছে স্বৈরতন্ত্র। পৃথক পরিবারের যুগ যেদিন থেকে শুরু হল, সেদিনই স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে মতামত নিয়ে একটি গোপন লড়াইয়ের সূত্রপাত হয়ে গেল। কখনও স্বামী কখনও স্ত্রী। ক্ষুদ্র পরিবারে তারাই এখন সিংহভাগ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। আলোচনা হয় না? অবশ্যই হয়। কিন্তু অধিকারবোধ আর অতিরিক্ত আত্মসম্মানবোধের বলয় ঘিরে থাকে প্রতিনিয়ত। কখনও স্ত্রীকে স্বামীর কাছে শুনতে হয় জীবনের সবথেকে আত্মধিক্কারের একটি বাক্য, ‘রোজগার আমি করি। আমি যা বলব শুনতে হবে’! এই নিউক্লিয়াস ফ্যামিলির স্বামী ও স্ত্রী কিংবা স্বামী অথবা স্ত্রী ঠিক করেন কোন বিয়েতে কী উপহার দেওয়া হবে। পুজোয় কাকে কী দেওয়া হবে অথবা আদৌ আর দেওয়া হবে কি না। 
যৌথ পরিবার চলে যাওয়ার আভাস কবে থেকে পাওয়া গেল? বাংলার দেওয়ালে দেওয়ালে স্লোগানের মাধ্যমে। ১৯৬৭ সালের পর ইন্দিরা গান্ধী সরকারের  পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে একটি স্লোগান জনপ্রিয় হল— ‘হাম দো হামারে দো’। দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এহেন একটি বুদ্ধিদীপ্ত ক্যাচলাইন এরপর একটানা দশ থেকে পনেরো বছর ভারতের সর্বত্র দেখা গিয়েছে। স্লোগানের সঙ্গেই কার্টুনের ধাঁচে একটি সুখী পরিবারের ছবি দেওয়া হতো। হাস্যরত স্বামী-স্ত্রী এবং তাদের দু‌ই সন্তান। কিন্তু বাংলায় সেই স্লোগানটি যখন অনূদিত হয়ে প্রচার করা হল, সেটি যেন সমাজ বদলের একটি অমোঘ পূর্বাভাস হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যা তখন হয়তো কেউ বুঝতেই পারেনি। স্লোগানটি ছিল ‘ছোট পরিবার সুখী পরিবার’। আজ আধুনিক ভারত উপলব্ধি করছে যে, ওই স্লোগান সম্পূর্ণ অন্য রূপে সমাজকে গ্রাস করতে শুরু করেছে। জনসংখ্যা কমানোর লক্ষ্যে কতটা কার্যকরী হল সেটা নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন, কিন্তু যা নিয়ে সন্দেহ নেই, সেটি হল, এই স্লোগান বাংলার পরিবার আত্মস্থ করে নিল ভিন্ন কারণে। সেটি হল প্রাইভেসি। একান্নবর্তী পরিবারে আবর্তিত হতো সমষ্টি। ছোট  পরিবারে অনেক বেশি স্থান করে নিল ব্যক্তি। 
সঞ্জয় গান্ধী রাজনীতিতে বিতর্কিত ছিলেন। কিন্তু সত্যদ্রষ্টা হিসেবে ছিলেন সফল। তিনি মারুতি নামক একটি গাড়ির স্বপ্ন দেখেছিলেন। যার প্রচারে প্রথম বিজ্ঞাপন থেকেই দেওয়া হয়েছিল ফ্যামিলি কার। সেই প্রথম মারুতিতে ক’জন বসতে পারবে? চারজন। স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তান। সুতরাং নিছক জন্মনিয়ন্ত্রণ নয়, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের আত্মায় থাকা পরিবারতন্ত্রকে বদলে দিয়ে প্রবেশ করল ‘ছোট পরিবার সুখী পরিবার’ বীজ। তাই মারুতি আটের দশকে এল এবং ভারতজয় করল। কে হেরে গেল? অ্যাম্বাসাডর। যে আসলে যৌথ পরিবারের গাড়ি। একসঙ্গে আটজনও ঢুকে গিয়েছে সেইসব গাড়ি অথবা ট্যাক্সিতে। অতএব আটের দশক থেকে একইসঙ্গে দুই ব্র্যান্ডের সাফল্য যাত্রা শুরু হল। ফ্যামিলি কার ও ফ্ল্যাট কালচার। বাড়িকে বাঙালি পরিবার বলতে শুরু করল, ফ্ল্যাট!   
যৌথ পরিবারের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ক্ষুদ্র পরিবারের অন্যতম প্রধান পার্থক্য কী? যৌথ পরিবারের শিশু-কিশোরদের কোনও একাধিক জেঠুর বাড়ি, একাধিক কাকুর বাড়ি, ঠাকুমার বাড়ি ছিল না।  কীভাবে থাকবে? জেঠুরা, কাকুরা, ঠাকুমা-ঠাকুরদারা তো একটি বাড়িতেই থাকেন। আর সেইসব সন্তানদের কাছে সেই বাড়ির নাম হতো, ‘আমাদের বাড়ি’। ছোট ভাইয়ের মেয়ের বিয়ে হবে। সেই বিয়েতে ছোট ভাই আর তার স্ত্রী বড় অথবা মেজভাইয়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণের কার্ড নিয়ে এসে বলবে, ‘একদিন আগেই চলে যাস কিন্তু তোরা?’ এসব দুঃস্বপ্ন যৌথ পরিবারগুলি দেখেছে কখনও! কারণ সেইসব বিয়ে তো ছোটভাইয়ের মেয়ের হতো না! সেইসব বিবাহযোগ্যা মেয়েদের নাম হতো ‘আমাদের বাড়ির মেয়ে।’ তাই তাদের বিয়ে মানে হল,  আমাদের বাড়ির মেয়ের বিয়ে। সেখানে কে কাকে নিমন্ত্রণ করবে? কে কাকে উপহার দেবে? ওসব কিছু না। যা যা লাগবে সেটাই ঠিক করে নেওয়া হবে। 
ঠিক এরকমই ‘আমাদের বাড়ির মেয়ে’দের বিবাহ সব ঠিক হয়ে গেলেও যদি অকস্মাৎ ছোটভাই অসুস্থ হয়ে পড়ে কিংবা দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়? তাহলে কী হবে?  বিয়ে আটকাবে না। আমাদের বাড়ির মেয়ের বিয়ের জন্য ছোটভাই যা যা আয়োজনের স্বপ্ন দেখেছিলেন, ঠিক সেই আয়োজন করবে বাড়ির অন্যরা।
আধুনিক এই সমাজের সবথেকে বড় ভাইরাসের নাম কী? একাকিত্ব! ফেসবুক আছে। হোয়াটসঅ্যাপ আছে। যখন তখন বেরিয়ে যাওয়া আছে। কিন্তু এতকিছু সত্ত্বেও একাকিত্ব মহামারীর মতো গ্রাস করছে মানুষকে। কারণ ফিজিক্যাল কেয়ার নেই। মেসেজ অথবা ফোনে খবর নেওয়া আছে। পাশে থাকার আশ্বাস আছে। কিন্তু যে বন্ধু আর আত্মীয় থাকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সে কীভাবে যখন তখন সশরীরে আসবে পাশে? যৌথ পরিবারে কিন্তু দীর্ঘ সময় সেজ বউয়ের সাড়াশব্দ না পেলে কয়েকজন উদগ্রীব হতো। দোতলা থেকে নেমে এসে আলো বন্ধ করে শুয়ে থাকা সেজ বউকে প্রশ্ন করত, কীরে, কী হয়েছে? এভাবে শুয়ে আছিস? তারপর জানা যেত জ্বর অথবা মনখারাপ। হয় তাড়াতড়ি ওষুধ দেওয়া কিংবা হু হু কান্না। বেদনার বাষ্প কিছুটা আশ্রয় পেত, ‘কী হয়েছে! এভাবে শুয়ে আছিস’ বাক্যে। 
যৌথ পরিবারের সবই ভালো? সর্বাঙ্গীণভাবেই এরকম তরুণ মজুমদার অথবা রাজশ্রী প্রোডাকশন্সের সিনেমাগুলির মতো কান্না হাসি গান মিলিয়ে আনন্দময়? মোটেই নয়। ঈর্ষা থাকে। ভুল বোঝা থাকে। ঝগড়া থাকে। কথা বলা বন্ধ হওয়া থাকে। নীচতা থাকে। পরিবারের মধ্যেই বিশেষ একটি উপদল গড়ে ওঠা থাকে। অন্যের ক্ষতিতে খুশি হওয়া থাকে। অন্যের দারিদ্র্য সন্তোষ প্রদান করে। অন্যের সন্তানের সঙ্গে রেষারেষি থাকে পড়াশোনা অথবা কেরিয়ার নিয়ে। কেন থাকবে না? এসবই তো সাধারণ গৃহী মানুষের  স্বাভাবিক মানসিকতা। সমস্যা থাকে প্রাইভেসির। একটা অথবা দুটো মাত্র ঘর বরাদ্দ। ইচ্ছামতো খরচ করা যায় না। ইচ্ছামতো বিলাসিতাও করা দৃষ্টিকটু। এসব তো সত্য ও বাস্তব। 
কিন্তু বাড়িতে একজন অসুস্থ হয়ে গেলে দিশাহারা হতে হয় না। অফিস অথবা ব্যবসায় যাওয়া বন্ধ করে দিতে হয় না। কিছু দরকার হলে কে দেখবে? এই চিন্তায় চরম অনিশ্চয়তার দিন কাটাতে হবে না। যৌথ পরিবারের ক্ষেত্রে সংবাদপত্রে কখনও হেডলাইন হবে না ‘বন্ধ ফ্ল্যাটে সাতদিন ধরে মৃত বৃদ্ধ দম্পতি’। 
কে তাদের আসল মা? কে তাদের পালনকারী? কে তাদের জন্য  বেশি আকুল? মা নাকি বড়মা? কে বড়মা? কেন জেঠিমা? কেই বা ছোটমা? কেন কাকিমা? স্বপ্নের যৌথ পরিবারগুলিতে এভাবেই আপনজন বাছাই করতে ধন্দের মধ্যেই থাকতে হতো সন্তানদের। কে দেখাবে অঙ্কের ঐকিক নিয়ম? কেন দাদাভাই? কে দাদাভাই? 
মেজজেঠুর ছেলে! কার সঙ্গে ছাদে গিয়ে প্রথম সিগারেট খাওয়া? ছোড়দার সঙ্গে। গোপন অ্যাডভেঞ্চার কীভাবে শেখা গেল! লুকিয়ে মিলন সমিতির শানুদাদার চিঠি বড়দিভাইয়ের কাছে নিয়ে আসায়। কে তোকে চিঠি পৌঁছে দিয়েছে? 
হাজারটা চড়থাপ্পড় খাওয়া সত্ত্বেও যে বড়দিভাই কখনও উচ্চবাচ্য করবে না সূর্যকে মার খাওয়া থেকে রক্ষা করতে। বাইরের মানুষের কাছে এইসব যৌথ পরিবারের সন্তানদের তারা কতজন ভাইবোন সেই উত্তর দেওয়ার সময় কোনওদিন ভাবেনি নিজের বোন আর সে অথবা দুই ভাই। তারা সর্বদাই বলেছে চারভাই, চার বোন। কারণ ‘আমাদের’ বাড়িতে যত নতুন প্রজন্ম আছে তারা সক঩লেই তো আমাদেরই ভাইবোন! তাই আমার বড়দা এবার ডাক্তারিতে গোল্ড মেডেল পেল শুনে কেউ যদি প্রশ্ন করত তোমার নিজের দাদা? 
তুমিই তো বড়ভাই? তখন হেসে উত্তর দিতে হয়, জেঠুর ছেলে। আমাদের সকলের বড়দা! 
কীভাবে মুখস্থ হয়ে যেত সেই যৌথ পরিবারগুলির কিশোরদের রবীন্দ্রসঙ্গীত? কারণ দুবেলাই যৌথ পরিবারের অসংখ্য টাপুর আর অন্তহীন ঝুমুরা রেওয়াজ করত গানের।  নিত্যনতুন গানের সঙ্গে পরিচয় হতো। রাতে সেইসব ঘর থেকেই পাশের গলিতে ভেসে যেত পাণিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধ আর অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশের মুখস্থ স্রোত। সেইসব সেজো কাকিরা সারাক্ষণ রেডিও  চালাতেন।  একদিন যৌথ পরিবারে প্রবেশ করেছিল টেলিভিশন। যেখানে নিজেদের পরিবারকেই দেখা গিয়েছিল ‘হামলোগ’ আর ‘বুনিয়াদ’ নামের সিরিয়ালে। রবিবার দুপুরে রামায়ণ ও মহাভারত দেখতে বসার ঘরে কিংবা ছোটকাকার ঘরে জমায়েত হতো সকলে। 
একটি মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমিক প্রতারণা করেছে। অন্য এক মেয়ের সঙ্গে পার্ক স্ট্রিটে সে দেখেছে সেই প্রেমিককে লাস্যময় এক মুহূর্তে। তারপর থেকে এক গভীর ডিপ্রেশন গ্রাস করেছে সেই মেয়েকে। সে কথা বলে না। ভালো করে খায় না। কারও সঙ্গ পছন্দ করে না। তাকে নিয়ে চার মহিলা চলেছেন পুরী। ট্রেনে দেখা হল এক যুবকের সঙ্গে। সে একা একা ঘুরে বেড়ায় কাঁধে একটা ঝোলা নিয়ে। সেই মেয়েটিকে আগলে রেখে, তার মন খারাপকে অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করছে এই চার বিধবা নারী। তাদের স্বামীদের কেড়ে নিয়েছে মৃত্যু। আর এই অনূঢ়া মেয়েটির পুরুষ তাকে পরিত্যাগ করেছে। যন্ত্রণা একই। তপন সিংহের অবিস্মরণীয় সেই সিনেমা ‘নির্জন সৈকতে’ আমাদের দেখিয়েছিল যৌথ পরিবারের চার নারীর একাকিত্ব বেদনাকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার আখ্যান। তাদের কন্যাসম পরিবারের মেয়েটির প্রবল অসম্মানিত বোধ করার হাহাকারের কাঁধে হাত রাখা দেখেছিলাম আমরা। 
একান্নবর্তী পরিবারের ছবি ধরা পড়েছিল এই পরিচালকেরই ‘গল্প হলেও সত্যি’তে। যৌথ পরিবারগুলি এভাবেই বছরের পর বছর শক্তি দিয়েছিল পরস্পরকে। ঘোষিত অথবা অঘোষিত দৃপ্ত আশ্বাস ছিল, ভাবছিস কেন? আমরা তো আছি!
তারপর এসেছিল ব্যক্তিগত সুখের প্রাধান্য যুগ। সেই পুরনো স্লোগান হয়েছিল জীবনের প্রধান চালিকাশক্তি।  ছোট পরিবার সুখী পরিবার। এসেছে এসি। এসেছে গিজার। এসেছে মোবাইল। এসেছে ফ্রিজ। এসেছে গাড়ি। এসেছে প্রাইভেসি। এসেছে একাকিত্ব। এসেছে ইগো। এসেছে সব কাজ একা করার, সব ভাবনা একা ভাবার, সব দুঃখের একা মোকাবিলা করার ক্লান্তি। এসবের আড়ালে বেড়েছে শুধু রক্তের মধ্যে দূরত্ব। বেড়েছে আত্মীয়বাড়ি। যারা পরিবার ছিল, তারা এখন আত্মীয়। আত্মীয়দের নাম কী? 
কাদের বাড়িতে যেতে হয় এখন আগে থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে? বছরে দুয়েকবার যেতে হয় জেঠুর বাড়ি...কাকুর বাড়ি...ঠাকুমার বাড়ি...। তোমরা ক’ভাইবোন? এই প্রশ্নের উত্তরে এখন বলতে হয়, ‘আমি একা’! যৌথতা পরাস্ত। জয়ী হয়েছে একা। তাই এসেছে একার জীবন!
‘গল্প হলেও সত্যি’ ছবির একটি দৃশ্য
02nd  July, 2023
ব্রহ্মপুরের মনোজ শিকদার
শ্যামলী রক্ষিত

বিপুল ঘুম থেকে উঠেই দেখল, চার-চারটে মিসড কল। নামটা দেখেই মটকা গরম হয়ে গেল তার। ঘুম থেকে উঠতে সবুর সয়নি! কী অদ্ভুত মানুষ! এপ্রিল ফুল করার এমন উন্মাদ নেশা যে, কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলছে! এপ্রিল ফুল করবে বলে ভোর থেকে ফোন করছে! বিশদ

09th  July, 2023
রুপোলি শস্যের জাদু
হারাধন চৌধুরী

‘মিঠে গঙ্গাজলে তোলা অন্নপূর্ণা-ঘাটে।/ মেছোর পাটায় শোভে কিবা বাঁকা ঠাটে।।’ ... ‘কাঁচা ইলিশের ঝোল কাঁচা লঙ্কা চিরে।/ ভুলিবে না খেয়েছে যে ব’সে পদ্মাতীরে।।’ ... ‘আষাঢ়ে প্রথম মৎস্য প্রবেশিলে ঘরে।/ দূর্ব্বাধানে পূজে তারে শঙ্খরব ক’রে।।’ ... ‘একটি একটি কাঁটা তারিয়ে তারিয়ে।/ অবলা বিরলে খান বেড়ালে হারিয়ে।। বিশদ

09th  July, 2023
ছায়া গাছ
ছন্দা বিশ্বাস

তপেশরঞ্জন একসময়ে লটারির টিকিট বিক্রি করত। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়ে পড়া ছেড়ে দিয়েছিল। এখন মস্ত বড় প্রমোটার হয়েছে। কয়েকজন বন্ধু মিলে পার্টনারশিপ ব্যবসা খুলেছে। আয় পত্তর ভালোই হচ্ছে সেটা ওর বাড়ি দেখেই শতানিক গেলবারই বুঝতে পেরেছিল। তবে, তপেশ দান ধ্যান করে। বিশদ

02nd  July, 2023
আম প্রীতির ইতিহাস
সন্দীপন বিশ্বাস

গৌতম বুদ্ধ, সম্রাট আলেকজান্ডার, মুঘল সম্রাট আকবর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিংবা অমিতাভ বচ্চন— বিভিন্ন সময়ের এই মনীষী ও ব্যক্তিত্বদের মধ্যে মিল কোথায়?
বিশদ

25th  June, 2023
সোনার ঘড়ি
বাণীব্রত চক্রবর্তী

মঞ্জুমাসি বলেন, ‘কুবলয়, মাঝে মাঝে তোমাকে নিয়ে চিন্তা হয়।’ সে জিজ্ঞেস করে, ‘চিন্তা হয়! কেন?’ উনি বলেন, ‘তুমি বড় সরল। তার উপর তোমার যা ভুলো মন। তাই চিন্তা হয়।’
কুবলয় হাসে। মঞ্জুমাসি তার নিজের মাসি নন। তার মায়ের চেয়ে বয়সে অনেক ছোট।
বিশদ

25th  June, 2023
শততম বিবাহবার্ষিকী
তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

বরাবরই ভোরে ওঠা অভ্যাস নন্দিতার। আজ একটু আগেই ঘুম ভাঙল। দেখল, জাঁকিয়ে নাক ডাকছে রিক্ত। আজ যেন বেশিই গর্জন করছে তার ধারালো নাকটা। সেই নাকে একটা ছোট্ট টোকা মেরে নন্দিতা বলল, ‘অ্যাই, ওঠো না।’  বিশদ

18th  June, 2023
দায়িত্বভার
শ্যামলী আচার্য

‘একজন আয়া দিয়ে তো হবে না, বারো ঘণ্টার হিসেবে দু’জন আয়া রাখতেই হবে। কথা বলে নাও তোমার শাশুড়ির সঙ্গে,’ টেলিফোনের ওপারে ঝনঝন করে বেজে উঠল পরমার গলা। এই প্রান্তে দিয়া মোবাইল লাউডস্পিকারে রেখে জামাকাপড় ভাঁজ করছিল, তার মনে হল মা বড্ড জোরে কথা বলে। বিশদ

11th  June, 2023
হাজারদুয়ারির হাতছানি
মৃদুলকান্তি ঘোষ

জ্যৈষ্ঠের গরমে হাঁফিয়ে উঠেছে সৈকত। দোকান দেখলেই চাতক চাহনিতে এগচ্ছে সে। ‘এক বোতল জল দিন।’ তাঁর অবাক জলপান চলছে ১৫-২০ মিনিটের ব্যবধানে, ছোট ছোট স্পেলে। মুর্শিদাবাদের শুকনো গরমে ঝরঝর করে ঘাম ঝরছে। তৃষা এবার হেসেই ফেলল বন্ধুর কাণ্ড দেখে। বিশদ

11th  June, 2023
ক্রমাগত
সুমন দাস

সকালের ট্রেন। আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। ঠাসাঠাসি ভিড়। তিল ধারণেরও জায়গা নেই। একে ভিড়, তায় আবার গরম। বৈশাখ মাসের সকাল। দশটাও বাজেনি, অথচ সীমাহীন গরমে দরদর করে ঘামছে বিকাশ। একটু হাওয়ার জন্যে হন্যে হয়ে রয়েছে সে। বাকিরাও তাই। বিশদ

04th  June, 2023
কালের যাত্রার ধ্বনি
সন্দীপন বিশ্বাস

 

দক্ষিণে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি। উত্তরে মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি। সংলগ্ন দেবী চিত্তেশ্বরীর মন্দির। পশ্চিম দিকে গঙ্গার অনন্তধারা। এই অঞ্চলটুকুই হল চিৎপুর। কেউ বলেন, দেবী চিত্তেশ্বরীর মন্দির থেকেই এই স্থানের নাম চিৎপুর। আবার কারও মতে, চিতু ডাকাতের নামানুসারেই এই নামকরণ। বিশদ

04th  June, 2023
চিরশৈশব
সুমন মহান্তি

 

বিকেল হয়ে আসছে, আকাশে বিস্কুট রং, টিলার ওপারে সূর্য স্তিমিত হচ্ছে। ট্রেনের সাইড বার্থে বসে বাইরের দৃশ্য দেখছিলাম। প্রতিমুহূর্তে দৃশ্য বদলে যাচ্ছিল। কেন জানি না অবেলার দৃশ্য আমাকে আনমনা করে দেয় বারবার। বিশদ

28th  May, 2023
অযাচিত
সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

 

বাসস্ট্যান্ডে লাবণ্য যে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে, ভালো লাগছে না। চটির ডগায় একটা পাথরকুচি নাড়াচাড়া করছে। বাসের পাত্তা নেই। অনেকদিন পর বেরিয়েছে ও। এখন লাবণ্যর একটা নতুন পরিচয় হয়েছে সমাজে। বিধবা! শব্দটাতেই কেমন একটা সাদাটে-ফ্যাকাশে ভাব। নিরামিষ গন্ধ। বিশদ

21st  May, 2023
বিন্নি ধানের খেত
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

রাস্তার পাশে একটা সাইনবোর্ডের গায়ে ‘সুন্দরপুর’ নামটা দেখে সুমিতানন্দ ওরফে সুমিত বুঝতে পারলেন, তিনি তাঁর গন্তব্যে প্রায় পৌঁছে গিয়েছেন। সামনেই একটা প্রাইমারি স্কুল পড়বে। সেখানে তাঁর জ্ঞাতিভাই পলাশের অপেক্ষা করার কথা। সে-ই তাঁকে নিয়ে যাবে। বাড়ি। বিশদ

14th  May, 2023
প্রতিক্ষা
নির্মাল্য রায়

সল্টলেকের নার্সিংহোমের দোতলায় আইসিসিইউ-এর বাইরে বসে হঠাৎ হারিয়ে গিয়েছিল বছর পনেরো আগে। সংবিৎ ফিরল নার্সের বাজখাঁই গলার চিৎকারে, ‘মিস্টার সুখেন্দু চৌধুরীর বাড়ির লোক কে আছেন?’ ডাঃ অনির্বাণ সারেঙ্গীর চিকিৎসায় প্রায় দু’মাস হয়ে গেল এই নার্সিংহোমে ভর্তি সুখেন্দু। বিশদ

07th  May, 2023
একনজরে
রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ম্যাকাউট) উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হল অধ্যাপক গৌতম মজুমদারকে। বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এই অধ্যাপকের কাছে ...

মালদহের বামনগোলা ব্লক থেকে এবার  বিজেপি কার্যত ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হতেই বিজেপির কঙ্কালসার দশা বেরিয়ে এসেছে। যে ব্লককে এক সময়  বিজেপির গড় মনে করা হতো, সেই ব্লক থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাপক উত্থান হয়েছে। ...

আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের আওতায় সম্প্রতি জিএসটিকে আনা হয়েছে। এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। এর ফলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সরাসরি নাক গলাতে পারবে জিএসটি নেটওয়ার্কে। সেখান থেকে তারা তথ্য নিতে পারবে।  ...

২০২২ সালের মে মাস থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ধাপে ধাপে রেপো রেট বাড়িয়ে গিয়েছে। একবছরের মধ্যে তা বেড়েছে আড়াই শতাংশ। তার প্রভাব সরাসরি পড়েছে সব ধরনের ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

পুরনো রোগের বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্যহানির সম্ভাবনা। ব্যবসায় শুভত্ব বজায় থাকবে। আর্থিক প্রগতিও হবে।   ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৫৪: শ্রীরামকৃষ্ণের অন্যতম শিষ্য ও শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃতর রচয়িতা মহেন্দ্রনাথ গুপ্তর জন্ম
১৯১৮: সুইডেনের চিত্রপরিচালক ইঙ্গমার বার্গম্যানের জন্ম
১৯৩৬: লেখক ধনগোপাল মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৬৭: শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ হাসান তিলকরত্নের জন্ম
১৯৭১: মডেল মধু সাপ্রের জন্ম
১৯৭৫: সুরকার মদন মোহনের মৃত্যু
২০০৩: অভিনেত্রী লীলা চিটনিসের মৃত্যু
২০০৮: বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড়ের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.১৫ টাকা ৮২.৮৯ টাকা
পাউন্ড ১০৫.০১ টাকা ১০৮.৫৭ টাকা
ইউরো ৮৯.৮৩ টাকা ৯৩.০৭ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৫৯,৭৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৬০,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৫৭,১০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৭৩,৫৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৭৩,৬৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৯ আষাঢ় ১৪৩০, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩। দ্বাদশী ৩৫/৩৪ রাত্রি ৭/১৮। রোহিণী নক্ষত্র ৪৩/২৭ রাত্রি ১০/২৭। সূর্যোদয় ৫/৪/১, সূর্যাস্ত ৬/২০/৩৫। অমৃতযোগ দিবা ১২/৮ গতে ২/৪৮ মধ্যে। রাত্রি ৮/২৯  মধ্যে পুনঃ ১২/৪৭ গতে ২/৫৫ মধ্যে পুনঃ ৩/৩৮ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ-দিবা ৫/৫৭ গতে ৬/৫০ মধ্যে পুনঃ ৯/২৯ গতে ১০/২২ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৩ গতে ১১/৪২ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/১ গতে ১০/২২ মধ্যে। 
২৮ আষাঢ় ১৪৩০, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩। দ্বাদশী রাত্রি ৮/১৩। রোহিনীনক্ষত্র রাত্রি ১২/৬। সূর্যোদয় ৫/৪, সূর্যাস্ত ৬/২৩। অমৃতযোগ দিবা ১২/৯ গতে ও ২/৪৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/৩১ মধ্যে ও ১২/৪৭ গতে ২/৫৬ মধ্যে ও ৩/৩৮ গতে ৫/৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৫/৫৬ গতে  ৬/৫০ মধ্যে ও ৯/৩০ গতে ১০/২৩ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৪৩ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/৩ গতে ১০/২৩ মধ্যে।   
২৪ জেলহজ্জ।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
প্রথম টেস্ট: তৃতীয় দিনে ভারত ৪২১/৫ (ডিক্লেয়ার)

11:12:00 PM

কুনোতে মৃত্যু হল আরও এক চিতার
ফের একটি চিতার মৃত্যু হল মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে। মৃত ...বিশদ

03:59:23 PM

লেকটাউনে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
লেকটাউনে দমকল কর্মীকে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার দু'জন শ্যুটার। তাদের একজনের ...বিশদ

03:57:00 PM

পৃথিবীর কক্ষপথে সফল ভাবে উৎক্ষেপণ হল চন্দ্রযান-৩ এর

03:47:33 PM

শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান ৩-এর সফল উৎক্ষেপণ
চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপণ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ, শুক্রবার ঠিক ...বিশদ

02:50:04 PM

কাঁচি দিয়ে খুনের চেষ্টা মানিকতলা এলাকায়, গ্রেপ্তার ১

02:38:43 PM