Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

আম প্রীতির ইতিহাস
সন্দীপন বিশ্বাস

গৌতম বুদ্ধ, সম্রাট আলেকজান্ডার, মুঘল সম্রাট আকবর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিংবা অমিতাভ বচ্চন— বিভিন্ন সময়ের এই মনীষী ও ব্যক্তিত্বদের মধ্যে মিল কোথায়? প্রশ্নটা শুনে নিশ্চয়ই অনেকে থতমত খেয়ে গেলেন! খুব সহজ উত্তর। সেটা হল, এঁদের পাঁচজনের কাছেই আম খুব প্রিয়। তবে শুধু তো এঁরাই নন, আরও কোটি কোটি মানুষ আছেন, যাঁরা আম খেতে ভালোবাসেন। গ্রীষ্মের এই ফলটিকে বলা হয় স্বর্গের ফল। স্বাদে, গন্ধে এর তুল্য ফল সম্ভবত ধরাধামে নেই।
কিন্তু এই ফলের এক বিরাট ইতিহাস আছে। হাজার হাজার বছর আগেও মানুষ আম খেতে ভালোবাসত। সেই আমের কথা লেখা আছে আমাদের বেদ, শতপথ ব্রাহ্মণ উপনিষদ, মহাভারতে। বৌদ্ধদের শাস্ত্রেও আমের উল্লেখ পাই। আমের জন্ম ঠিক কবে, কেউ এখনও গবেষণা করে বের করতে পারেননি। তবে সুইজারল্যান্ডের উদ্ভিদবিজ্ঞানী দে ক্যান্ডল গবেষণা করে দেখিয়েছেন, চার থেকে ছয় হাজার বছর আগে আমাদের দেশেই আমের জন্ম। কিন্তু তখনও মানুষ এই ফলটাকে ভালো করে আবিষ্কার করতে পারেনি। 
আমরা দেখি যিশুর জন্মের ৩২৭ বছর আগে বিশ্বজয়ের নেশায় বেরিয়েছিলেন সম্রাট আলেকজান্ডার। সিন্ধু উপত্যকায় তিনি এসে পৌঁছলেন বিরাট সেনাবাহিনী নিয়ে। সেখানে বিশ্রাম নেওয়ার সময় গাছে আম ঝুলে থাকতে দেখে বেশ কয়েকজন সেনার লোভ হয়। কিন্তু সেটা কী ফল, তা তারা জানত না। কৌতূহলবশত তারা আম পেড়ে খেল এবং আমের প্রেমে পড়ে গেল। ধীরে ধীরে দেখা গেল, একে একে সব সেনাই আম পাড়ছে আর খাচ্ছে। কথাটা কানে গেল আলেকজান্ডারের। তিনি নির্দেশ দিলেন সেই আশ্চর্য ফল তাঁর কাছে নিয়ে আসতে। আম খেয়ে আলেকজান্ডারও মুগ্ধ হলেন। পুরুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তিনি যখন দেশে ফিরে যাবেন, সেই সময় পুরুর কানেও এসেছিল আলেকজান্ডারের আমপ্রীতির কথা। তিনি প্রচুর আমের চারা আলেকজান্ডারকে উপহার দেন। আলেকজান্ডার তাঁর সৈন্যদের নির্দেশ দেন, ‘এই চারাগুলি যত্ন করে নিয়ে চল। আমরা ম্যাসিডোনিয়ার মাটিতে লাগাব এবং আমের স্বাদ উপভোগ করব।’ শেষ পর্যন্ত অবশ্য আলেকজান্ডারের সেই সাধ পূর্ণ হয়নি। 
চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং ভারতে এসেছিলেন ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে। তিনিও আমের প্রেমে পড়েছিলেন। তিনি তাঁর ভ্রমণ কাহিনির মধ্যে আমের প্রতি ভালোবাসার কথা লিখে গিয়েছেন। ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দে দেশে ফিরে যাওয়ার সময় তিনিও সঙ্গে করে আমের চারা ও ফল নিয়ে গিয়েছিলেন। বুদ্ধদেবের আম খাওয়ার কথাও ইতিহাসে পাওয়া যায়। জানা যায়, এক শিষ্য বুদ্ধদেবকে একটি আমবাগান উপহার দেন। সেখানে বুদ্ধদেব বেশ কিছুদিন ছিলেন। একদিন বাগানের আম খেয়ে তিনি সেই আঁটিটিকে মাটিতে পুঁতে দেন এবং হাত ধুয়ে সেই জলটি তার উপর ফেলেন। সেখান থেকে পরে এক বিরাট আমগাছ হয়েছিল।  
পরিব্রাজক মেগাস্থিনিসের লেখা থেকে জানা যায়, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ও সম্রাট অশোক পথিকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে রাস্তার দু’পাশে প্রচুর আমগাছ পুঁতেছিলেন এবং জলাশয় খনন করে দিয়েছিলেন। তাঁরা চেয়েছিলেন, পথ চলতে গিয়ে যাতে পথিকদের জল এবং খাদ্যের অভাব না হয়। সেই সঙ্গে আমগাছের সুশীতল ছায়ায় তারা বিশ্রামও নিতে পারবে। সুতরাং দেখা যায় রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতার জন্যই ধীরে ধীরে আমগাছের বিস্তার লাভ ঘটেছে। তাই আম নামক ফলটিও সাধারণের কাছে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। 
প্রাচীন ও মধ্যযুগে দেখা গিয়েছে, ভারতে যাঁরাই এসেছেন, তাঁরাই আমের স্বাদে মুগ্ধ হয়ে তাঁদের দেশে আমের চারা নিয়ে গিয়েছেন। পরবর্তীকালে পর্তুগিজ, ফরাসি, ইংরেজ সকলেই নিজেদের দেশে গিয়ে এখানকার আমের চারা রোপণ করেছে। মুঘল যুগে এসে আমের ব্যাপক ফলন শুরু হয়। কেননা মুঘল সম্রাটরা আম খেতে ভালোবাসতেন। দৌলত খাঁ লোধির আমন্ত্রণে বাবর যখন প্রথম সমরখন্দ থেকে ভারতে আসেন, তখন তাঁকে আম দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছিল। তিনি তাঁর আমপ্রীতির কথা লিখে গিয়েছেন ‘বাবরনামা’য়। বাবরের পুত্র হুমায়ুনও আম খেতে ভালোবাসতেন। তাঁকে যখন চৌসার যুদ্ধে শের শাহ পরাস্ত করেন, তখন সেই জয়কে স্মরণীয় করে রাখতে তিনি একটি প্রজাতির আমের নামকরণ করেন চৌসা। আমের এমন নামকরণের ব্যাপারটা পরাজিত হুমায়ুনের কানে গিয়েছিল। তিনি তখন পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি তখন প্রতিজ্ঞা করেন, আমি যদি কোনওদিন দিল্লির মসনদ দখল করতে পারি, সেদিন এর মোক্ষম জবাব দেব। হুমায়ুন তাঁর কথা রেখেছিলেন। দিল্লির মসনদ ফের দখলের পর তিনি একটি প্রজাতির আমের নামকরণ করেন হুমায়ুন পসন্দ। এখনও কিন্তু আমগুলি পাওয়া যায়। তাঁর পুত্র আকবর সেই আমপ্রীতিকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য এক লক্ষ আমগাছ পোঁতার নির্দেশ দেন। দ্বারভাঙার যেখানে এই আমগাছ পোঁতা হয়েছিল, তার নাম সেই থেকে হয়ে গিয়েছে ‘লাখি বাগ’। আবুল ফজল তাঁর ‘আইন-ই-আকবরী’ বইতে আম নিয়ে অনেক কথা লিখে গিয়েছেন। শুধু পাকা আমের স্বাদই নয়, কাঁচা আম দিয়ে যে তখন ভারতীয়রা আচার বানিয়ে খেত এবং তার স্বাদও যে অতি উত্তম, সেকথাও আবুল ফজল লিখে গিয়েছেন।
জাহাঙ্গিরের স্ত্রী নুরজাহানও আম খেতে ভালোবাসতেন। তবে নুরজাহান নামের যে আম পাওয়া যায়, তার সঙ্গে সম্রাজ্ঞী নুরজাহানের কোনও যোগ আছে কি না, তা জানা যায় না। তবে এই আম হয় বিশাল সাইজের। মানে এক একটা আম হয় প্রায় কাঁঠালের সাইজের। একটা আমের ওজনই হয় ২-৩ কেজি। আঁটির ওজনই পাঁচ-ছ’শো গ্রাম। এক একটা আমের দাম হাজার-বারোশো টাকা। মধ্যপ্রদেশে এই আমের বাগান রয়েছে।  
শাহজাহানকে  যখন তাঁর পুত্র আওরঙ্গজেব বন্দি করে আগ্রা দুর্গে রেখে দেন, তখন তাঁর অন্যতম আফশোস ছিল, ইচ্ছে করলেই আর তিনি আম খেতে পারবেন না। দীর্ঘ কুড়ি বছর, অর্থাৎ মৃত্যুর দিন পর্যন্ত বন্দি শাহজাহানকে আম না খেতে পাওয়ার যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে। মুঘল রাজাদের মোগলাই খানার প্রতি প্রেমের কথা জানা যায়, কিন্তু তাঁদের আমপ্রীতির কথা ইতিহাস তেমনভাবে উল্লেখই করেনি।
ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতকের বিখ্যাত কবি এবং সঙ্গীতজ্ঞ আমির খসরু আমকে বলেছিলেন, ‘নাগজা তারিন মেওয়া হিন্দুস্তান’। এর মানে হল হিন্দুস্তানের সবচেয়ে সুন্দর ফল হল আম। তবে আম তো শুধু রাজ দরবারের ফল নয়, তা সাধারণ মানুষেরও। কবিরাও আমের প্রেমে মাতোয়ারা ছিলেন। তার প্রমাণ মির্জা গালিব নিজে। 
একদিন গালিব দাওয়ায় বসে আম খাচ্ছেন আর রাস্তায় আঁটিগুলো ছুড়ে ছুড়ে ফেলছেন। তাঁর কাছে এক বন্ধু বসেছিলেন। তিনি ততটা আম পছন্দ করতেন না। সেই সময় একটা গাধা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। পড়ে থাকা সেই আঁটিগুলোর পাশ দিয়ে গাধাটা চলে গেল। পড়ে থাকা আঁটি শুঁকেও দেখল না। তাই দেখে সেই বন্ধুটি গালিবকে খেপানোর জন্য বললেন, ‘দোস্ত দেখেছ, গাধাও এই ফল খেতে নারাজ।’ গালিব তৎক্ষণাৎ তাঁকে বললেন, ‘না, আসলে গাধারাই শুধু এই ফল খায় না।’ গালিব তাঁর এক শায়েরিতে লিখেছিলেন, ‘আমাকে যদি জিজ্ঞাসা কর তোমার নেশা কী? / জবাবে আমি বলব, আম ছাড়া নেশা করার মতো আছেটা কী!’   
মুর্শিদাবাদের নবাবদের আমপ্রীতির ইতিহাসও বেশ মজার। নবাবদের আগ্রহে মুর্শিদাবাদ ও মালদহে  প্রচুর আমের গাছ পোঁতা হয়েছিল। তার মধ্যে ছিল অজস্র প্রজাতির গাছ। মুর্শিদাবাদের নবাব ওয়াসিফ আলি মির্জার প্রিয় আম ছিল তোতাপুরী। একসময় বিশাল আমবাগান ছিল নবাব নাজিম হুমায়ুন জার স্ত্রী বেগম রইসুন্নেসার। সেই বাগানের নামও হয় রইসবাগ। তাঁর খুব প্রিয় আম ছিল বেগম পসন্দ। মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন আমবাগানে হতো হিমসাগর, রানিপসন্দ, রওগনি, গোলাপখাস, পঞ্জা পসন্দ, কোহিতুর সহ আরও অনেক রকমের আম। সেই সব আম তুলোয় মুড়ে খুব যত্ন করে রাখা হতো। কোহিতুর আম খুব আদুরে। বেশি হাত দিলে আম টক হয়ে যায়। তাই হাতে গ্লাভস পরে আলতো করে ধরে সেই আম কাটতে হয়। এমনকী সেই আম লোহার ছুরি দিয়েও কাটা বারণ। রুপোর ছুরি দিয়ে নরম করে না কাটলে সেই আমের স্বাদ পুরোপুরি মেলে না। আম রাখার জন্য একটা বাড়িই তৈরি করেছিলেন সেই সময়কার নবাবরা। তার নাম ছিল আম্বাখানা।
দেখা যায়, এক একজন নবাব একেক ধরনের আম পছন্দ করতেন। যেমন নবাব সৈয়দ মহম্মদ জয়নাল আবেদিন পছন্দ করতেন লজ্জাত বক্স আম। নবাব ওয়াসিফ আলি মির্জা হীরা আম পছন্দ করতেন। তিনি ভালোবেসে আমটির নতুন নামকরণ করেন পঞ্জা পসন্দ।
 তারপর একদিন পলাশির আমবাগানেই দেশের স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হল। আমবাগানের দখল নিয়ে সাহেবরাও খুব আম খেতেন। আজও কিন্তু মুর্শিদাবাদ, মালদহ জুড়ে অনেক প্রজাতির আমচাষ হয়। অসাধারণ সেইসব আম সারা বিশ্বে রপ্তানিও হয়।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক অর্থে ছিলেন খাদ্যরসিক মানুষ। জমিয়ে খেতে ভালোবাসতেন। তাঁর আমপ্রীতির কথা জানা যায় বিভিন্ন মানুষের লেখা থেকে। একবার জাপানে যাওয়ার সময় তাঁর ইচ্ছে হল, সঙ্গে করে আম নিয়ে যাবেন। আর একবার আমেরিকা যাওয়ার সময় তিনি তৎকালীন বোম্বাই বন্দর থেকে কিনেছিলেন এক বাক্স আলফানসো আম। এমনকী, কাঁচা আম বা আমের আচার খেতেও তিনি পছন্দ করতেন। শোনা যায়,  স্বামী বিবেকানন্দও আম খেতে ভালোবাসতেন।
আমরা সব মিলিয়ে মোটামুটি দশ-বারো রকমের আম খাই। কিন্তু সারা পৃথিবীতে প্রায় দু’হাজার প্রজাতির আম আছে। যেমন, গোপালভোগ, মধু চুষকি, আম্রপালি, ক্ষীরসাপাত, বোম্বাই, সুরমা ফজলি, লক্ষ্মণভোগ, রাজলক্ষ্মী, কৃষ্ণভোগ, জনার্দন পসন্দ, মধুমালতী, মিছরি দমদম ইত্যাদি। 
এর মধ্যে আবার কিছু নাম বেশ মজার। যেমন বউ ভুলানি, ছাতু ভিজালি, ইঁদুরচাটা, ছুঁচামুখী, বাবুইঝুকি, চুঙ্গাভোগ, হাতিঝোলা, দুধ কোমর, মিছরি ছানা, হাঁড়িভাঙা সহ আরও অনেক। বলা হয় পৃথিবীর সবথেকে দামি আম হল জাপানের মিয়াজাকি। জাপানের মিয়াজাকি শহরে জন্ম এই আমের এক কেজির দাম দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা। ইদানীং বাংলাদেশ ও আমাদের রাজ্যের বীরভূম জেলায় এই আমের ফলন শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, ফলন আরও বাড়লে তা আমজনতার হাতে পৌঁছে যাবে। 
বিভিন্ন আমের নাম নিয়ে নানা জনশ্রুতি রয়েছে। সেগুলি বেশ মজার। যেমন একবার কালেক্টর র‌্যাভেনশ সাহেব মালদহে গাছের তলায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তখন সেই জায়গাটার নাম ছিল গৌড়। সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন এক মহিলা। তৃষ্ণার্ত সাহেবকে দেখে তিনি একটি আম ও জল খেতে দেন। সাহেব আম খেয়ে মহাখুশি। মেয়েটির নাম জিজ্ঞাসা করলেন, মেয়েটি বলল, আমার নাম ফজলু বিবি। সাহেবও খুশি হয়ে আমের নাম দিলেন ফজলি। আর একটি গল্প থেকে জানা যায়, পাটনার হাজিপুরে একটি আমগাছের তলায় বাস করত এক ফকির। তাঁর একটি পা খোঁড়া ছিল। আর সেই গাছের আম খেতে ভালোবাসতেন এক সাহেব। সেই সাহেবই ওই গাছের আমের নাম দেন ল্যাংড়া।  
কাটিহারের এক আম পাগল বাঙালি হলেন কালিদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। না, তিনি শুধু আম খেতেই ভালোবাসেন না, গ্র্যাফটিংয়ের মাধ্যমে তাঁর নানা প্রজাতির আম ফলানোর নেশা এবং সেগুলির তিনি নানা ধরনের নামকরণও করেন। যেমন চিত্তরঞ্জন, বিবেকানন্দ ইত্যাদি। বছর কয়েক আগে নতুন দুই প্রজাতির আম ফলিয়েছেন তিনি। এই দু’টি আমের নাম দিয়েছেন— মোদি ও যোগী। 
আম আমাদের দেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ফল। বাঙালি সংস্কৃতি অনুযায়ী আম এবং আম্রপল্লবকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এই রসাল ফলকে নিয়ে বহু কবি ও লেখক যুগে যুগে তাঁদের অনুভবের কথা লিখে গিয়েছেন। সেসব একত্রিত করলে তৈরি হয়ে যেতে পারে একটি আম্রমঙ্গল কাব্য। তবে কাব্যের স্বাদ যেমন ভাবের ঘরে, তেমনই আমের প্রকৃত স্বাদ রসনায়। আহা, যেন অমৃতের পরশ!
25th  June, 2023
ব্রহ্মপুরের মনোজ শিকদার
শ্যামলী রক্ষিত

বিপুল ঘুম থেকে উঠেই দেখল, চার-চারটে মিসড কল। নামটা দেখেই মটকা গরম হয়ে গেল তার। ঘুম থেকে উঠতে সবুর সয়নি! কী অদ্ভুত মানুষ! এপ্রিল ফুল করার এমন উন্মাদ নেশা যে, কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলছে! এপ্রিল ফুল করবে বলে ভোর থেকে ফোন করছে! বিশদ

09th  July, 2023
রুপোলি শস্যের জাদু
হারাধন চৌধুরী

‘মিঠে গঙ্গাজলে তোলা অন্নপূর্ণা-ঘাটে।/ মেছোর পাটায় শোভে কিবা বাঁকা ঠাটে।।’ ... ‘কাঁচা ইলিশের ঝোল কাঁচা লঙ্কা চিরে।/ ভুলিবে না খেয়েছে যে ব’সে পদ্মাতীরে।।’ ... ‘আষাঢ়ে প্রথম মৎস্য প্রবেশিলে ঘরে।/ দূর্ব্বাধানে পূজে তারে শঙ্খরব ক’রে।।’ ... ‘একটি একটি কাঁটা তারিয়ে তারিয়ে।/ অবলা বিরলে খান বেড়ালে হারিয়ে।। বিশদ

09th  July, 2023
ছায়া গাছ
ছন্দা বিশ্বাস

তপেশরঞ্জন একসময়ে লটারির টিকিট বিক্রি করত। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়ে পড়া ছেড়ে দিয়েছিল। এখন মস্ত বড় প্রমোটার হয়েছে। কয়েকজন বন্ধু মিলে পার্টনারশিপ ব্যবসা খুলেছে। আয় পত্তর ভালোই হচ্ছে সেটা ওর বাড়ি দেখেই শতানিক গেলবারই বুঝতে পেরেছিল। তবে, তপেশ দান ধ্যান করে। বিশদ

02nd  July, 2023
হারিয়ে যাওয়া যৌথ পরিবার
সমৃদ্ধ দত্ত

হেরে গিয়েছে গণতন্ত্র। জিতেছে স্বৈরতন্ত্র। সেইসব একান্নবর্তী পরিবারে বহু সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই ছিল আলোচনার পরিসর। সেজো মামার নাতনির অন্নপ্রাশনে কী দেওয়া হবে? নূপুরের জন্য এই শ্যামনগরের পাত্রটি কি মানানসই? নাকি কসবার এই ডাক্তার ছেলেকেই বাছাই করা হবে? বিশদ

02nd  July, 2023
সোনার ঘড়ি
বাণীব্রত চক্রবর্তী

মঞ্জুমাসি বলেন, ‘কুবলয়, মাঝে মাঝে তোমাকে নিয়ে চিন্তা হয়।’ সে জিজ্ঞেস করে, ‘চিন্তা হয়! কেন?’ উনি বলেন, ‘তুমি বড় সরল। তার উপর তোমার যা ভুলো মন। তাই চিন্তা হয়।’
কুবলয় হাসে। মঞ্জুমাসি তার নিজের মাসি নন। তার মায়ের চেয়ে বয়সে অনেক ছোট।
বিশদ

25th  June, 2023
শততম বিবাহবার্ষিকী
তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

বরাবরই ভোরে ওঠা অভ্যাস নন্দিতার। আজ একটু আগেই ঘুম ভাঙল। দেখল, জাঁকিয়ে নাক ডাকছে রিক্ত। আজ যেন বেশিই গর্জন করছে তার ধারালো নাকটা। সেই নাকে একটা ছোট্ট টোকা মেরে নন্দিতা বলল, ‘অ্যাই, ওঠো না।’  বিশদ

18th  June, 2023
দায়িত্বভার
শ্যামলী আচার্য

‘একজন আয়া দিয়ে তো হবে না, বারো ঘণ্টার হিসেবে দু’জন আয়া রাখতেই হবে। কথা বলে নাও তোমার শাশুড়ির সঙ্গে,’ টেলিফোনের ওপারে ঝনঝন করে বেজে উঠল পরমার গলা। এই প্রান্তে দিয়া মোবাইল লাউডস্পিকারে রেখে জামাকাপড় ভাঁজ করছিল, তার মনে হল মা বড্ড জোরে কথা বলে। বিশদ

11th  June, 2023
হাজারদুয়ারির হাতছানি
মৃদুলকান্তি ঘোষ

জ্যৈষ্ঠের গরমে হাঁফিয়ে উঠেছে সৈকত। দোকান দেখলেই চাতক চাহনিতে এগচ্ছে সে। ‘এক বোতল জল দিন।’ তাঁর অবাক জলপান চলছে ১৫-২০ মিনিটের ব্যবধানে, ছোট ছোট স্পেলে। মুর্শিদাবাদের শুকনো গরমে ঝরঝর করে ঘাম ঝরছে। তৃষা এবার হেসেই ফেলল বন্ধুর কাণ্ড দেখে। বিশদ

11th  June, 2023
ক্রমাগত
সুমন দাস

সকালের ট্রেন। আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। ঠাসাঠাসি ভিড়। তিল ধারণেরও জায়গা নেই। একে ভিড়, তায় আবার গরম। বৈশাখ মাসের সকাল। দশটাও বাজেনি, অথচ সীমাহীন গরমে দরদর করে ঘামছে বিকাশ। একটু হাওয়ার জন্যে হন্যে হয়ে রয়েছে সে। বাকিরাও তাই। বিশদ

04th  June, 2023
কালের যাত্রার ধ্বনি
সন্দীপন বিশ্বাস

 

দক্ষিণে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি। উত্তরে মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি। সংলগ্ন দেবী চিত্তেশ্বরীর মন্দির। পশ্চিম দিকে গঙ্গার অনন্তধারা। এই অঞ্চলটুকুই হল চিৎপুর। কেউ বলেন, দেবী চিত্তেশ্বরীর মন্দির থেকেই এই স্থানের নাম চিৎপুর। আবার কারও মতে, চিতু ডাকাতের নামানুসারেই এই নামকরণ। বিশদ

04th  June, 2023
চিরশৈশব
সুমন মহান্তি

 

বিকেল হয়ে আসছে, আকাশে বিস্কুট রং, টিলার ওপারে সূর্য স্তিমিত হচ্ছে। ট্রেনের সাইড বার্থে বসে বাইরের দৃশ্য দেখছিলাম। প্রতিমুহূর্তে দৃশ্য বদলে যাচ্ছিল। কেন জানি না অবেলার দৃশ্য আমাকে আনমনা করে দেয় বারবার। বিশদ

28th  May, 2023
অযাচিত
সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

 

বাসস্ট্যান্ডে লাবণ্য যে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে, ভালো লাগছে না। চটির ডগায় একটা পাথরকুচি নাড়াচাড়া করছে। বাসের পাত্তা নেই। অনেকদিন পর বেরিয়েছে ও। এখন লাবণ্যর একটা নতুন পরিচয় হয়েছে সমাজে। বিধবা! শব্দটাতেই কেমন একটা সাদাটে-ফ্যাকাশে ভাব। নিরামিষ গন্ধ। বিশদ

21st  May, 2023
বিন্নি ধানের খেত
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

রাস্তার পাশে একটা সাইনবোর্ডের গায়ে ‘সুন্দরপুর’ নামটা দেখে সুমিতানন্দ ওরফে সুমিত বুঝতে পারলেন, তিনি তাঁর গন্তব্যে প্রায় পৌঁছে গিয়েছেন। সামনেই একটা প্রাইমারি স্কুল পড়বে। সেখানে তাঁর জ্ঞাতিভাই পলাশের অপেক্ষা করার কথা। সে-ই তাঁকে নিয়ে যাবে। বাড়ি। বিশদ

14th  May, 2023
প্রতিক্ষা
নির্মাল্য রায়

সল্টলেকের নার্সিংহোমের দোতলায় আইসিসিইউ-এর বাইরে বসে হঠাৎ হারিয়ে গিয়েছিল বছর পনেরো আগে। সংবিৎ ফিরল নার্সের বাজখাঁই গলার চিৎকারে, ‘মিস্টার সুখেন্দু চৌধুরীর বাড়ির লোক কে আছেন?’ ডাঃ অনির্বাণ সারেঙ্গীর চিকিৎসায় প্রায় দু’মাস হয়ে গেল এই নার্সিংহোমে ভর্তি সুখেন্দু। বিশদ

07th  May, 2023
একনজরে
রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ম্যাকাউট) উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হল অধ্যাপক গৌতম মজুমদারকে। বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এই অধ্যাপকের কাছে ...

২০২২ সালের মে মাস থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ধাপে ধাপে রেপো রেট বাড়িয়ে গিয়েছে। একবছরের মধ্যে তা বেড়েছে আড়াই শতাংশ। তার প্রভাব সরাসরি পড়েছে সব ধরনের ...

উইম্বলডনে মহিলাদের সিঙ্গলসের ফাইনালে মুখোমুখি মার্কেটা ভন্ড্রুসোভা ও ওনস জাবিউর। সেমি-ফাইনালে এলিনা ভিতোলিনাকে ৬-৩, ৬-৩ স্ট্রেট সেটে হারালেন চেক প্রজাতন্ত্রের অবাছাই প্লেয়ার মার্কেটা। এই প্রথম অল ইংল্যান্ড ক্লাবের সেন্টার কোর্টে খেতাবি লড়াইয়ে নামবেন তিনি। ...

পাঞ্জাবি বদলের মধ্যেই কি লুকিয়ে রয়েছে ব্যালট গেলার নেপথ্য রহস্য? গণনাকেন্দ্রের বাইরে গিয়ে নিমেষে কেন পোশাক বদল করলেন তৃণমূলের সেই প্রার্থী? যখন কাগজের মণ্ড মুখে পুরেছিলেন, তখন তাঁর পাঞ্জাবির রং ছিল সবুজ। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

পুরনো রোগের বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্যহানির সম্ভাবনা। ব্যবসায় শুভত্ব বজায় থাকবে। আর্থিক প্রগতিও হবে।   ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৫৪: শ্রীরামকৃষ্ণের অন্যতম শিষ্য ও শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃতর রচয়িতা মহেন্দ্রনাথ গুপ্তর জন্ম
১৯১৮: সুইডেনের চিত্রপরিচালক ইঙ্গমার বার্গম্যানের জন্ম
১৯৩৬: লেখক ধনগোপাল মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৬৭: শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ হাসান তিলকরত্নের জন্ম
১৯৭১: মডেল মধু সাপ্রের জন্ম
১৯৭৫: সুরকার মদন মোহনের মৃত্যু
২০০৩: অভিনেত্রী লীলা চিটনিসের মৃত্যু
২০০৮: বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড়ের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.১৫ টাকা ৮২.৮৯ টাকা
পাউন্ড ১০৫.০১ টাকা ১০৮.৫৭ টাকা
ইউরো ৮৯.৮৩ টাকা ৯৩.০৭ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৫৯,৭৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৬০,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৫৭,১০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৭৩,৫৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৭৩,৬৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৯ আষাঢ় ১৪৩০, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩। দ্বাদশী ৩৫/৩৪ রাত্রি ৭/১৮। রোহিণী নক্ষত্র ৪৩/২৭ রাত্রি ১০/২৭। সূর্যোদয় ৫/৪/১, সূর্যাস্ত ৬/২০/৩৫। অমৃতযোগ দিবা ১২/৮ গতে ২/৪৮ মধ্যে। রাত্রি ৮/২৯  মধ্যে পুনঃ ১২/৪৭ গতে ২/৫৫ মধ্যে পুনঃ ৩/৩৮ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ-দিবা ৫/৫৭ গতে ৬/৫০ মধ্যে পুনঃ ৯/২৯ গতে ১০/২২ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৩ গতে ১১/৪২ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/১ গতে ১০/২২ মধ্যে। 
২৮ আষাঢ় ১৪৩০, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩। দ্বাদশী রাত্রি ৮/১৩। রোহিনীনক্ষত্র রাত্রি ১২/৬। সূর্যোদয় ৫/৪, সূর্যাস্ত ৬/২৩। অমৃতযোগ দিবা ১২/৯ গতে ও ২/৪৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/৩১ মধ্যে ও ১২/৪৭ গতে ২/৫৬ মধ্যে ও ৩/৩৮ গতে ৫/৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৫/৫৬ গতে  ৬/৫০ মধ্যে ও ৯/৩০ গতে ১০/২৩ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৪৩ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/৩ গতে ১০/২৩ মধ্যে।   
২৪ জেলহজ্জ।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
প্রথম টেস্ট: তৃতীয় দিনে ভারত ৪২১/৫ (ডিক্লেয়ার)

11:12:00 PM

কুনোতে মৃত্যু হল আরও এক চিতার
ফের একটি চিতার মৃত্যু হল মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে। মৃত ...বিশদ

03:59:23 PM

লেকটাউনে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
লেকটাউনে দমকল কর্মীকে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার দু'জন শ্যুটার। তাদের একজনের ...বিশদ

03:57:00 PM

পৃথিবীর কক্ষপথে সফল ভাবে উৎক্ষেপণ হল চন্দ্রযান-৩ এর

03:47:33 PM

শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান ৩-এর সফল উৎক্ষেপণ
চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপণ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ, শুক্রবার ঠিক ...বিশদ

02:50:04 PM

কাঁচি দিয়ে খুনের চেষ্টা মানিকতলা এলাকায়, গ্রেপ্তার ১

02:38:43 PM