Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ক্রমাগত
সুমন দাস

সকালের ট্রেন। আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। ঠাসাঠাসি ভিড়। তিল ধারণেরও জায়গা নেই। একে ভিড়, তায় আবার গরম। বৈশাখ মাসের সকাল। দশটাও বাজেনি, অথচ সীমাহীন গরমে দরদর করে ঘামছে বিকাশ। একটু হাওয়ার জন্যে হন্যে হয়ে রয়েছে সে। বাকিরাও তাই। কয়েকজন ভিড় করে রয়েছে গেটে। ভিতরেও ভিড়। মুক্ত বাতাস চলাচলের সমস্ত পথই বন্ধ প্রায়। বাঙ্কারে ঠেসে রয়েছে ব্যাগ। ব্যাগ রাখার পরিসরও অপ্রতুল। বেশির ভাগটাই ঝুলছে জানালায়, দরজায়। যার যেখানে সুযোগ, সেখানেই সে ঝুলিয়েছে ব্যাগ। সামান্য একটু পরিসরও অকারণে অপচয় করা হয়নি আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালে। ইঞ্চি ইঞ্চি পরিসরও প্রাসঙ্গিক ভাবে ব্যবহৃত। এসবের মাঝেই কোনও রকমে জায়গা করে দাঁড়িয়ে আছে বিকাশ। গরমে ঘামছে। ঠাসাঠাসি ভিড় যেন জাপটে ধরে রেখেছে তাকে। সম্পূর্ণ শরীরটাই যেন কী এক অপার্থিব জাদুবলে স্থির হয়ে আছে। ভিড়ের সঙ্গে প্রয়োজনে প্রয়োজনে সামনে পিছনে ডাইনে বাঁয়ে ঝুঁকে গতির সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছে বিকাশের ঘামে ভেজা শরীর। এই বিন্যাসের একটু ব্যতিক্রম হলেই ভিড়ের তাল কাটে। বাকিরা অমনি রে রে করে ওঠে। এভাবেই এক নাগাড়ে চলতে থাকে আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালের প্রভাতী সিম্ফনি। তার মধ্যেই ছোট ছোট ইঙ্গিতপূর্ণ কথায় রসিকতা চলছে যাত্রীদের। এক-একটা স্টেশনে বন্যার জলের মতন ঢুকছে জনতা। ঠেলাঠেলি করে দাঁড়াবার মতন একটু জায়গা আবিষ্কার করে নিয়ে স্থির সঙ্কল্পে দাঁড়িয়ে পড়ছে তারা। বসার জায়গার জন্য কারও কোনও গরজ নেই। আশাও নেই! শুধু দাঁড়ানোর জায়গাটুকু পেলেই জীবন ধন্য তাদের! 
—হ্যাঁ রে! চোকের মাতা খেইচিস নাকি!
ওঠার সময় এক যাত্রীর কনুয়ের গুঁতোয় আহত আর একজন চেঁচিয়ে ওঠে।
এর বেশি কিছু ক্ষোভ দেখানোর সুযোগ তার নেই। কারণ আলাদা করে কাউকেই চিনে নেওয়া যায় না। কার কনুই! কার গুঁতো! অগত্যা তার প্রতিবেশী যাত্রীর কাছেই ক্ষোভ জানায়। বলে, ‘এত দোড়াদোড়ি করে উটে  কোতায় যাবে কে জানে! দোড়ত এটুকুই। বসতি তো পাবিনে।’ প্রতিবেশী যাত্রীও হাসে। বলে, ‘বসা কি সোজা কাজ কাকা। সকালের টেরেনে ছিট হল সরকারি ছিট। যদি ভিতরে তোমার দুটো নোক থাকে তো পেলে নইলে কেউই ও জিনিস আশা করেনে।’ যাত্রীর কথায় খানিকক্ষণ একটা হাসির রোল ওঠে। এসব রঙ্গ-রসিকতা নিয়েই ছুটে চলে আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। 
যাদবপুর স্টেশনে ভিড়ের একটা অংশ নেমে যেতেই একটু হালকা লাগে। দু’জন মানুষের মাঝে তিন-চার আঙুলের ব্যবধান সৃষ্টি হয়। সেই ব্যবধানেই বাইরের বাতাস কেরামতি করে যাতায়াত করে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিকাশ। এখন একটু সুবিধা লাগছে। জল খেলে ভালো হতো। কিন্তু বাঙ্কার থেকে ব্যাগ নামিয়ে বোতল বের করে জল খাওয়ার জন্য যে ঝক্কি, পিপাসা তার চাইতে কম। অন্তত অঙ্কের সাধারণ হিসেবে এমনই মনে হল তার। অগত্যা দাঁড়িয়েই থাকে সে। ঢোঁক গেলে। হঠাৎ বিপরীত দিকের জটলার ভিতর থেকে চেঁচিয়ে ওঠে কেউ— ‘বিকাশ না!’
মাথা ঘুরিয়ে একটু কাত হয়ে দেখে বিকাশ। শামিম। হাসে বিকাশ। কথা বলে না। তার শরীর নিঙড়ে সব শক্তি শুষে নিয়েছে সকালের আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। শামিমই কথা বলে। 
—কোতায় যাবি? 
অগত্যা কথা বলতেই হয়। 
—শিয়ালদা। তুই? 
—খালা ঘর যাব। ফিরব আজই। মা গেচে পরশু। মারে আনতি যাই।
বিকাশের পাশের গ্রামেই শামিমের বাস। প্রাইমারিতে একই ক্লাসে পড়ত দু’জন। সেকেন্ডারিতেও। সে অনেক দিন আগের কথা। পরে আর স্কুলে যায়নি শামিম।
—তোর কি কাজ হয়েচে কিচু?
ভিড়ের মধ্যেই জানতে চায় শামিম। এবারে হাসে বিকাশ।
—হয়েছে। তবে প্রতিদিন এই ভিড় ঠেলে যাব কীভাবে, তাই ভাবছি।
যেন খুব অবাক হয় শামিম। বলে, ‘কোতায় পেলি কাজ!’ 
—বউবাজারে। সিকিউরিটি গার্ডের কাজ। বাবার কাজটাই পেয়েছি। 
—ভাগ্যি তোর বাপের একটা কাজ ছেল। না হলি আজকের দিনে হন্যি হয়ি ঘুরলেও তো একটা কাজ জোটে না।
—তুই কি করছিস এখন!
—করি না কিচু।
—মাঝে যে যাচ্চিলি খিদিরপুর!
—সে যাচ্চিলাম ওস্তাগারের কাজে। তবে সে ভালো লাগলনি! 
—কেন?
—ঝক্কি অনেক। ট্যাকা নেই তেমন। তায় থাকা কাজ। আমি রাজি হলাম না!
বিষয়টায় একটু অবাক হয় বিকাশ। সে যতদূর জানে একটা কাজ খুব প্রয়োজন শামিমের। উত্তরটা শামিমই দেয়।
—রাতে মাকে একা রেকে থাকতি পারলাম না।
বেশ অবাক হয় বিকাশ। এই শামিমকে তো সে চেনে না। মনে হয় কীভাবে বদলাল সে এতটা! কোথা থেকে শিখল সে এই  দায়িত্ববোধ!
—তোর কাজের ক’দিন হল?
জানতে চায় শামিম।
—আজই প্রথম দিন। কী জানি কতদিন চালাতে পারব!
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিকাশ। শামিম বলে, ‘চিন্তা করিস নে। অব্যেস হয়ি যাবে। কি সুকুমারদা! হবে তো?’
জটলার ভিতর থেকে হাসে সুকুমার। মাথা ভরা কাঁচাপাকা চুল তার। সুকুমারকে নিয়ে কিছু সময় মশগুল থাকে জটলাটা। জটলার মাঝে সুকুমার খানিকটা সরল। তাই প্রতিদিনই হয়তো এমনই নানা প্রসঙ্গে নানা ইঙ্গিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে সে।
—সুকুমারদা’রে তো প্রথম দিন কোলে নে তুললাম আমরা। মনে পড়ে!  হ্যাঁ গো সুকুমারদা?
সুকুমার হাসে। কিন্তু সঙ্কোচে ভিতরে ভিতরে যেন গুটিয়ে যায় সে। জটলার ভিতর থেকেই দ্বিতীয়জন বলে 
—পোথম দিন তো কেঁদে দিয়েচিলি। তাই না! হ্যাঁ রে সুকুমারদা! কতা কইচিস না কেন! 
সুকুমার সলজ্জ হাসিতে সম্মতি জানায়। বলে, ‘মরণ না এলি কেউ এ গাড়িতে ওটে!’ 
—তা তুই তো একদিনের জন্যিও মরলি নে! 
হাসে সুকুমার। বলে, ‘অব্যেস!’
শামিমও হাসে। জটলার বাকিরাও সে হাসিতে যোগ দেয়। যদিও সে আলোচনায় যোগ দেয় না বিকাশ। চুপ করে থাকে সে। মনে হয় অভ্যাস ব্যাপারটা কীভাবে সম্ভব! কতদিনে সম্ভব! ততদিনে দম বন্ধ হয়ে মরে যাবে না তো সে! মনে হয় বাবা পারত কীভাবে! এ তো ভিড় নয়! এ যন্ত্রণা! প্রতিদিন হয়তো এই যন্ত্রণাকেই অভ্যাস করতে করতে হঠাৎ অসময়ে চলে গেল বাবা। এবার হয়তো তার পালা। 
—নেবে গেলাম রে! 
শামিমের ডাকে চিন্তার গ্রন্থিটা কেটে যায় বিকাশের। হেসে হাত নেড়ে বিদায় জানায় সে শামিমকে। তারপর বালিগঞ্জ স্টেশনে ভিড়ের আরও খানিকটা অংশ নেমে গেলে বুক ভরে শ্বাস নেয় সে এবার। এখন আবহাওয়াটা অনেকটাই বাসযোগ্য মনে হয় তার। অনন্ত প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন বসার সুযোগ পেয়ে ধন্য বোধ করে। বিকাশও বসে। পা দুটো ছড়িয়ে দেয় সে সামনে। এখন যেন প্রত্যেকটা মানুষকে আলাদা করে চেনা যায়। অন্ততপক্ষে বাইরের কাঠামোটুকু বোঝা যায়। নইলে তো সব ভিড় বই কিছুই না! এমনই যেন মনে হয়। ট্রেনের দরজার কাছে একজন মানুষের দিকে আলাদা করে চোখ পড়ে বিকাশের। দরজার পাশে বসে বুক ভরে শ্বাস নিচ্ছে। ঢকঢক করে জল খাচ্ছে বারবার। ঘামছে দরদর করে। হাঁ করে যেন চলন্ত ট্রেনের বাইরে থেকে ছুটে আসা সমস্ত বাতাসই গিলে নিতে চাইছে সে। কী চেহারা তার! মলিন একটা টেরিকটের জামার নীচে তার রোগা শরীর দ্রুত নিঃশ্বাসের সঙ্গে ওঠানামা করছে। যেন খুব চেনা মনে হয় মানুষটাকে। চুলটা যেন তার গ্রামের মেহের আলিরই মতন ছাঁটা। হঠাৎ দেখলে মেহের আলিই বলে যেন মনে হয়। নিঃসম্বল মেহের আলি। জোগাড়ের কাজে প্রতিদিন একটা ঝুড়ি কোদাল নিয়ে পাড়ি দেয় সে কলকাতায়। রোজ কাজ জোটে না তার। যেদিন কাজ পেল সেদিন সে ফেরে সেই সাড়ে ন’টার নামখানা লোকালে। নাহলে কলকাতার পথে পথে বেলা পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করে আবার ডাউন গাড়ি ধরে ফেরে সে বাড়িতে। নতুন হাটে বাপির চা দোকানে প্রতিদিন চা খাওয়া চাই তার। 
সেখানেই বিকেলে এক কাপ চা খায় সে। সেদিনের দামটা খাতাতেই লিখে রাখতে বলে মেহের আলি। তারপর কোদালটা  কাঁধে তুলে ঝুড়িটা হাতে নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটে সে। মানুষটাকে দেখে সেই মেহের আলির মতনই মনে হয় যেন। লোকটার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে থাকে বিকাশ।   মুঠোমুঠো জল নিয়ে একটু একটু করে মাথা ভিজোচ্ছে মানুষটা। হয়তো অসুস্থ। আর বসে থাকতে পারে না বিকাশ। কাছে যায়। নিজের জলের বোতলের ছিপি খুলে জল দেয়। বলে, ‘খান।’ লোকটা ইশারা করে।   হাওয়াটা আটকাতে না করে। বিকাশের দেখাদেখি আরও কয়েকজন আসে। অল্পবয়সি একজন বলে, ‘কি কাকা আজও শরীল খারাপ!’
ছেলেটার দিকে একবার চোখটা তুলে আর কোনও উত্তর করে না মানুষটা। দরজার পাশে মাথাটা এলিয়ে দিয়ে বসে থাকে। আর এক জন বলে, ‘পারছে না আর। বয়স হয়েছে না!’
—এই তো গতকালও ফিট হয়ে গেচিল।
—সম্ভব নাকি বলুন তো! আমরা জোয়ান লোকগুলোই হেদিয়ে যাচ্ছি। তা উনি এই বয়সে পারবেন কেন!
—ছেলেটার চাকরি না হলে আর মুক্তি নেই! 
কথাগুলো হয়তো কানে যায় মানুষটার। চোখ দুটো উদাস করে হয়তো সেই কথাই ভাবে! সত্যিই আর হয়তো পারছেন না তিনি। তার ক্লান্ত, বিশৃঙ্খল শরীরটা দেখে বাবার কথা মনে পড়ে বিকাশের। কে জানে এভাবে কতবার জীবন যুদ্ধে হারতে হারতে শুধু পরিবারটুকুর কথা ভেবেই আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিল বাবা! ভেবেছিল, বিকাশের একটা কাজ হলেই দুঃখ ঘুচবে। বলেছিল, তুই তৈরি হ। আমি যতদিন আছি, তুই তৈরি হ। বিকাশ পড়েছে। মাস্টার্স করেছে। তৈরি হয়েছে বিকাশ। কিন্তু কাজ সে পায়নি। দিস্তা দিস্তা দরখাস্ত তার সরকারি দপ্তরে জমে আছে হয়তো বা এখনও। কিন্তু সে কাজ পায়নি। অগত্যা বাবার কাজটাই পেল বিকাশ। সিকিউরিটি গার্ডের কাজ। 
ট্রেন শিয়ালদায় ঢুকতে ঢুকতেই বিপরীতগামী যাত্রীরা সিট দখলের জন্য হুড়মুড় করে ওঠা শুরু করে। দীর্ঘ যাত্রা শেষে অসহ্য গরমে ক্লান্ত বিপন্ন অবস্থায় দ্রুত নামবে বলে যারা গেটের মুখে ভিড় করেছিল তাদের সঙ্গে গেটের মুখে একচোট বচসাও হয় তাদের। পরে একে একে সবাই নেমে যায়। বিকাশ বসেই থাকে। মনটা ভীষণ খারাপ তার। বাবার কথা খুব মনে পড়ছে আজ। সকাল থেকেই বাবার ফেলে আসা পথের অপরিমিত যন্ত্রণাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যেন সমস্ত কলকব্জা তার কাহিল হয়ে গিয়েছে। বোতলে যতটুকু জল ছিল সেইটা খেয়ে ধীরে ধীরে প্ল্যাটফর্মে নামে বিকাশ। সাউথ থেকে নর্থ সেকশনের দিকে পা বাড়ায় সে। এনকয়ারির আগে বাঁ দিক দিয়ে নেমে খানিকটা পথ এগতেই একটা জটলা দেখে এগিয়ে যায়। চরম রোদে দরদর করে ঘামছে বিকাশ। জটলার কাছে এসে বুকটা ধক করে ওঠে তার। রাস্তার উপর টানটান হয়ে পড়ে আছে ট্রেনের সেই প্রবীণ  মানুষটা। চুলটা এখনও দেখে মেহের আলির মতনই মনে হচ্ছে তার। চারপাশে কৌতূহলী জনতার ভিড়।  একজন জল ঢালছে মাথায়। কিন্তু সাড়া মিলছে না কিছু। মুখটা তখনও হাঁ করে যেন বাইরের সমস্ত বাতাসকে বুকে ভরে নিতে চাইছেন তিনি। চোখ দুটো তার তখনও উদাস। শান্ত। যেন পরাজয়ের গ্লানিতে অভিভূত। পাশ থেকে আর একজন বলে, ‘শেষ মনে হয়!’
—হাসপাতালে নিয়ে চলুন। 
—মনে হয় না বেঁচে আছে বলে।
জল ঢালছিল যে, তিনিই বলেন কথাটা।
বিকাশ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মৃত্যুকে এত কাছ থেকে দেখে যেন হতবাক হয়ে গিয়েছে সে। চোখ দুটো জলে ঝাপসা হয়ে আসে তার। ধীরে ধীরে জটলার ভিড়   কমতে থাকে। কয়েকজন তখনও নানান কথায় পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করে। কিছুই আর ভালো লাগে না বিকাশের। বুকের ভিতর কান্নার একটা চাপা অনুভূতি গুমরে গুমরে উঠতে চায় যেন। অপ্রাসঙ্গিক ভাবেই হঠাৎ মনে হয়, কী কাজ করতেন উনি! এবার বাপের চাকরিটাই হয়তো পাবে ওঁরও ছেলে! বাবার কথা মনে পড়ে বিকাশের। কান্না পায়। পিছনে তখনও আলোচনা চলছে,
—কঠিন সময়। গত মাসেও একজন ফিট হয়ে মারা গেল না!
—হ্যাঁ। ওই তো ট্যাক্সি স্টান্ডের কাছে। বউবাজার ব্যাঙ্কের সিকিউরিটি গার্ড!
অঙ্কন : সোমনাথ পাল
04th  June, 2023
ব্রহ্মপুরের মনোজ শিকদার
শ্যামলী রক্ষিত

বিপুল ঘুম থেকে উঠেই দেখল, চার-চারটে মিসড কল। নামটা দেখেই মটকা গরম হয়ে গেল তার। ঘুম থেকে উঠতে সবুর সয়নি! কী অদ্ভুত মানুষ! এপ্রিল ফুল করার এমন উন্মাদ নেশা যে, কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলছে! এপ্রিল ফুল করবে বলে ভোর থেকে ফোন করছে! বিশদ

09th  July, 2023
রুপোলি শস্যের জাদু
হারাধন চৌধুরী

‘মিঠে গঙ্গাজলে তোলা অন্নপূর্ণা-ঘাটে।/ মেছোর পাটায় শোভে কিবা বাঁকা ঠাটে।।’ ... ‘কাঁচা ইলিশের ঝোল কাঁচা লঙ্কা চিরে।/ ভুলিবে না খেয়েছে যে ব’সে পদ্মাতীরে।।’ ... ‘আষাঢ়ে প্রথম মৎস্য প্রবেশিলে ঘরে।/ দূর্ব্বাধানে পূজে তারে শঙ্খরব ক’রে।।’ ... ‘একটি একটি কাঁটা তারিয়ে তারিয়ে।/ অবলা বিরলে খান বেড়ালে হারিয়ে।। বিশদ

09th  July, 2023
ছায়া গাছ
ছন্দা বিশ্বাস

তপেশরঞ্জন একসময়ে লটারির টিকিট বিক্রি করত। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়ে পড়া ছেড়ে দিয়েছিল। এখন মস্ত বড় প্রমোটার হয়েছে। কয়েকজন বন্ধু মিলে পার্টনারশিপ ব্যবসা খুলেছে। আয় পত্তর ভালোই হচ্ছে সেটা ওর বাড়ি দেখেই শতানিক গেলবারই বুঝতে পেরেছিল। তবে, তপেশ দান ধ্যান করে। বিশদ

02nd  July, 2023
হারিয়ে যাওয়া যৌথ পরিবার
সমৃদ্ধ দত্ত

হেরে গিয়েছে গণতন্ত্র। জিতেছে স্বৈরতন্ত্র। সেইসব একান্নবর্তী পরিবারে বহু সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই ছিল আলোচনার পরিসর। সেজো মামার নাতনির অন্নপ্রাশনে কী দেওয়া হবে? নূপুরের জন্য এই শ্যামনগরের পাত্রটি কি মানানসই? নাকি কসবার এই ডাক্তার ছেলেকেই বাছাই করা হবে? বিশদ

02nd  July, 2023
আম প্রীতির ইতিহাস
সন্দীপন বিশ্বাস

গৌতম বুদ্ধ, সম্রাট আলেকজান্ডার, মুঘল সম্রাট আকবর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিংবা অমিতাভ বচ্চন— বিভিন্ন সময়ের এই মনীষী ও ব্যক্তিত্বদের মধ্যে মিল কোথায়?
বিশদ

25th  June, 2023
সোনার ঘড়ি
বাণীব্রত চক্রবর্তী

মঞ্জুমাসি বলেন, ‘কুবলয়, মাঝে মাঝে তোমাকে নিয়ে চিন্তা হয়।’ সে জিজ্ঞেস করে, ‘চিন্তা হয়! কেন?’ উনি বলেন, ‘তুমি বড় সরল। তার উপর তোমার যা ভুলো মন। তাই চিন্তা হয়।’
কুবলয় হাসে। মঞ্জুমাসি তার নিজের মাসি নন। তার মায়ের চেয়ে বয়সে অনেক ছোট।
বিশদ

25th  June, 2023
শততম বিবাহবার্ষিকী
তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

বরাবরই ভোরে ওঠা অভ্যাস নন্দিতার। আজ একটু আগেই ঘুম ভাঙল। দেখল, জাঁকিয়ে নাক ডাকছে রিক্ত। আজ যেন বেশিই গর্জন করছে তার ধারালো নাকটা। সেই নাকে একটা ছোট্ট টোকা মেরে নন্দিতা বলল, ‘অ্যাই, ওঠো না।’  বিশদ

18th  June, 2023
দায়িত্বভার
শ্যামলী আচার্য

‘একজন আয়া দিয়ে তো হবে না, বারো ঘণ্টার হিসেবে দু’জন আয়া রাখতেই হবে। কথা বলে নাও তোমার শাশুড়ির সঙ্গে,’ টেলিফোনের ওপারে ঝনঝন করে বেজে উঠল পরমার গলা। এই প্রান্তে দিয়া মোবাইল লাউডস্পিকারে রেখে জামাকাপড় ভাঁজ করছিল, তার মনে হল মা বড্ড জোরে কথা বলে। বিশদ

11th  June, 2023
হাজারদুয়ারির হাতছানি
মৃদুলকান্তি ঘোষ

জ্যৈষ্ঠের গরমে হাঁফিয়ে উঠেছে সৈকত। দোকান দেখলেই চাতক চাহনিতে এগচ্ছে সে। ‘এক বোতল জল দিন।’ তাঁর অবাক জলপান চলছে ১৫-২০ মিনিটের ব্যবধানে, ছোট ছোট স্পেলে। মুর্শিদাবাদের শুকনো গরমে ঝরঝর করে ঘাম ঝরছে। তৃষা এবার হেসেই ফেলল বন্ধুর কাণ্ড দেখে। বিশদ

11th  June, 2023
কালের যাত্রার ধ্বনি
সন্দীপন বিশ্বাস

 

দক্ষিণে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি। উত্তরে মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি। সংলগ্ন দেবী চিত্তেশ্বরীর মন্দির। পশ্চিম দিকে গঙ্গার অনন্তধারা। এই অঞ্চলটুকুই হল চিৎপুর। কেউ বলেন, দেবী চিত্তেশ্বরীর মন্দির থেকেই এই স্থানের নাম চিৎপুর। আবার কারও মতে, চিতু ডাকাতের নামানুসারেই এই নামকরণ। বিশদ

04th  June, 2023
চিরশৈশব
সুমন মহান্তি

 

বিকেল হয়ে আসছে, আকাশে বিস্কুট রং, টিলার ওপারে সূর্য স্তিমিত হচ্ছে। ট্রেনের সাইড বার্থে বসে বাইরের দৃশ্য দেখছিলাম। প্রতিমুহূর্তে দৃশ্য বদলে যাচ্ছিল। কেন জানি না অবেলার দৃশ্য আমাকে আনমনা করে দেয় বারবার। বিশদ

28th  May, 2023
অযাচিত
সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

 

বাসস্ট্যান্ডে লাবণ্য যে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে, ভালো লাগছে না। চটির ডগায় একটা পাথরকুচি নাড়াচাড়া করছে। বাসের পাত্তা নেই। অনেকদিন পর বেরিয়েছে ও। এখন লাবণ্যর একটা নতুন পরিচয় হয়েছে সমাজে। বিধবা! শব্দটাতেই কেমন একটা সাদাটে-ফ্যাকাশে ভাব। নিরামিষ গন্ধ। বিশদ

21st  May, 2023
বিন্নি ধানের খেত
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

রাস্তার পাশে একটা সাইনবোর্ডের গায়ে ‘সুন্দরপুর’ নামটা দেখে সুমিতানন্দ ওরফে সুমিত বুঝতে পারলেন, তিনি তাঁর গন্তব্যে প্রায় পৌঁছে গিয়েছেন। সামনেই একটা প্রাইমারি স্কুল পড়বে। সেখানে তাঁর জ্ঞাতিভাই পলাশের অপেক্ষা করার কথা। সে-ই তাঁকে নিয়ে যাবে। বাড়ি। বিশদ

14th  May, 2023
প্রতিক্ষা
নির্মাল্য রায়

সল্টলেকের নার্সিংহোমের দোতলায় আইসিসিইউ-এর বাইরে বসে হঠাৎ হারিয়ে গিয়েছিল বছর পনেরো আগে। সংবিৎ ফিরল নার্সের বাজখাঁই গলার চিৎকারে, ‘মিস্টার সুখেন্দু চৌধুরীর বাড়ির লোক কে আছেন?’ ডাঃ অনির্বাণ সারেঙ্গীর চিকিৎসায় প্রায় দু’মাস হয়ে গেল এই নার্সিংহোমে ভর্তি সুখেন্দু। বিশদ

07th  May, 2023
একনজরে
পাঞ্জাবি বদলের মধ্যেই কি লুকিয়ে রয়েছে ব্যালট গেলার নেপথ্য রহস্য? গণনাকেন্দ্রের বাইরে গিয়ে নিমেষে কেন পোশাক বদল করলেন তৃণমূলের সেই প্রার্থী? যখন কাগজের মণ্ড মুখে পুরেছিলেন, তখন তাঁর পাঞ্জাবির রং ছিল সবুজ। ...

আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের আওতায় সম্প্রতি জিএসটিকে আনা হয়েছে। এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। এর ফলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সরাসরি নাক গলাতে পারবে জিএসটি নেটওয়ার্কে। সেখান থেকে তারা তথ্য নিতে পারবে।  ...

রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ম্যাকাউট) উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হল অধ্যাপক গৌতম মজুমদারকে। বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এই অধ্যাপকের কাছে ...

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ফ্রান্স সফরের মধ্যেই অস্বস্তির কাঁটা মণিপুর।  বৃহস্পতিবার তাঁর প্যারিসে পৌঁছনোর আগেই উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের হিংসার  নিন্দা করে প্রস্তাব গৃহীত হল ইউরোপীয় সংসদে। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

পুরনো রোগের বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্যহানির সম্ভাবনা। ব্যবসায় শুভত্ব বজায় থাকবে। আর্থিক প্রগতিও হবে।   ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৫৪: শ্রীরামকৃষ্ণের অন্যতম শিষ্য ও শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃতর রচয়িতা মহেন্দ্রনাথ গুপ্তর জন্ম
১৯১৮: সুইডেনের চিত্রপরিচালক ইঙ্গমার বার্গম্যানের জন্ম
১৯৩৬: লেখক ধনগোপাল মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৬৭: শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ হাসান তিলকরত্নের জন্ম
১৯৭১: মডেল মধু সাপ্রের জন্ম
১৯৭৫: সুরকার মদন মোহনের মৃত্যু
২০০৩: অভিনেত্রী লীলা চিটনিসের মৃত্যু
২০০৮: বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড়ের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.১৫ টাকা ৮২.৮৯ টাকা
পাউন্ড ১০৫.০১ টাকা ১০৮.৫৭ টাকা
ইউরো ৮৯.৮৩ টাকা ৯৩.০৭ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৫৯,৭৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৬০,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৫৭,১০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৭৩,৫৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৭৩,৬৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৯ আষাঢ় ১৪৩০, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩। দ্বাদশী ৩৫/৩৪ রাত্রি ৭/১৮। রোহিণী নক্ষত্র ৪৩/২৭ রাত্রি ১০/২৭। সূর্যোদয় ৫/৪/১, সূর্যাস্ত ৬/২০/৩৫। অমৃতযোগ দিবা ১২/৮ গতে ২/৪৮ মধ্যে। রাত্রি ৮/২৯  মধ্যে পুনঃ ১২/৪৭ গতে ২/৫৫ মধ্যে পুনঃ ৩/৩৮ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ-দিবা ৫/৫৭ গতে ৬/৫০ মধ্যে পুনঃ ৯/২৯ গতে ১০/২২ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৩ গতে ১১/৪২ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/১ গতে ১০/২২ মধ্যে। 
২৮ আষাঢ় ১৪৩০, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩। দ্বাদশী রাত্রি ৮/১৩। রোহিনীনক্ষত্র রাত্রি ১২/৬। সূর্যোদয় ৫/৪, সূর্যাস্ত ৬/২৩। অমৃতযোগ দিবা ১২/৯ গতে ও ২/৪৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/৩১ মধ্যে ও ১২/৪৭ গতে ২/৫৬ মধ্যে ও ৩/৩৮ গতে ৫/৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৫/৫৬ গতে  ৬/৫০ মধ্যে ও ৯/৩০ গতে ১০/২৩ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৪৩ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/৩ গতে ১০/২৩ মধ্যে।   
২৪ জেলহজ্জ।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
প্রথম টেস্ট: তৃতীয় দিনে ভারত ৪২১/৫ (ডিক্লেয়ার)

11:12:00 PM

কুনোতে মৃত্যু হল আরও এক চিতার
ফের একটি চিতার মৃত্যু হল মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে। মৃত ...বিশদ

03:59:23 PM

লেকটাউনে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
লেকটাউনে দমকল কর্মীকে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার দু'জন শ্যুটার। তাদের একজনের ...বিশদ

03:57:00 PM

পৃথিবীর কক্ষপথে সফল ভাবে উৎক্ষেপণ হল চন্দ্রযান-৩ এর

03:47:33 PM

শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান ৩-এর সফল উৎক্ষেপণ
চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপণ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ, শুক্রবার ঠিক ...বিশদ

02:50:04 PM

কাঁচি দিয়ে খুনের চেষ্টা মানিকতলা এলাকায়, গ্রেপ্তার ১

02:38:43 PM