Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

দায়িত্বভার
শ্যামলী আচার্য

‘একজন আয়া দিয়ে তো হবে না, বারো ঘণ্টার হিসেবে দু’জন আয়া রাখতেই হবে। কথা বলে নাও তোমার শাশুড়ির সঙ্গে,’ টেলিফোনের ওপারে ঝনঝন করে বেজে উঠল পরমার গলা। এই প্রান্তে দিয়া মোবাইল লাউডস্পিকারে রেখে জামাকাপড় ভাঁজ করছিল, তার মনে হল মা বড্ড জোরে কথা বলে। দিয়া মোবাইল কানের কাছে তুলে নেয়।  
—আমার তা হলে কী করা উচিত বলে তোমার মনে হয়? 
একমাত্র কন্যার নিঃস্পৃহ গলায় প্রশ্নটি শুনে আরও চিড়বিড় করে উঠল ওইদিকের অভিজ্ঞ কণ্ঠ। 
—বোঝানো উচিত, অনেক সময় নিয়ে গিয়ে বোসো ওঁর কাছে। জানতে চাও উনি একা সামলাতে পারবেন কি না। তারপর ভালো করে বলো। বুঝিয়ে বললেই...
মেল ট্রেনের গতিবেগে বলে যাওয়া কথাগুলোর মাঝখানে ঢুকে পড়ে নিজের মতামত গুঁজে দেওয়া অসম্ভব জেনেও দিয়া তার কোমল মৃদু কণ্ঠস্বরে একটু বাড়তি জোর লাগিয়ে বলে, ‘সব বলেছি মা, কিন্তু অন্তুর মতামতটা বেশি জরুরি, আফটার অল ওর বাবা।’ বলতে বলতেই ওইদিক থেকে হুড়মুড়িয়ে ছুটে আসা কথার স্রোত থামাতে মরিয়া হয়ে ফোন কেটে দেয় দিয়া। 
মাত্র এক সপ্তাহ আগে আইসিইউ থেকে জেনারেল বেডে দেওয়া হয়েছে দিয়ার শ্বশুরমশাইকে। সেরিব্রাল অ্যাটাকে মৃতপ্রায় অবস্থা থেকে কোনওরকমে প্রাণে বাঁচিয়ে ফেরানো হয়েছে তাঁকে। বাড়িতে ফেরার পর রোগীর দেখভাল করা নিয়ে এখন বিভিন্ন আলোচনা চলছে। 
অথচ এই আলোচনায় যার মতামত সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ, সেই ভদ্রমহিলা একেবারে নিশ্চুপ। তিনি অন্তুর মা। সমস্ত সামলাতে হচ্ছে একা দিয়াকে।     
দিয়ার শাশুড়ি অর্থাৎ অন্তুর মা লাবণ্য খুবই নরমসরম মহিলা। সংসারে কিছু মানুষ থাকেন, যাঁরা কোনও সমস্যায় বিচলিত হন না, বা নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন না। চুপচাপ সমস্ত দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেন। অধিকাংশ সময় ধরে নেওয়া হয়, ইনি আসলে নেই বা ছিলেন না কখনও। কোনও বিষয়ে তাদের মতামত চাওয়া হয় না, তাঁরা শুধু নির্দিষ্ট আবর্তে ঘুরপাক খান। সংসারে লাবণ্য এই গোত্রের। শীত-গ্রীষ্ম বারো মাস ভোর ছ’টায় উঠে একের পর এক কাজে লেগে পড়েন। তাঁর কাজকর্ম চলে গভীর রাত পর্যন্ত। যতক্ষণ না অন্তুর বাবা রাতের খাওয়া শেষ করে এসে বিছানায় শুচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত সারিবাঁধা দায়িত্ব।  
অন্তুর বাবা যতদিন সুস্থ-সমর্থ্য ছিলেন, তিনি লাবণ্যর প্রতিটি কাজে খুঁত ধরতেন। ডালে নুন কম হলে, ঝোলের মাছ কড়া ভাজা হলে, পাঞ্জাবির হাতা ঠিকঠাক ইস্তিরি না হয়ে কুঁচকে থাকলে, মশারির চাল ময়লা হলে, ডাইনিং রুমের পর্দায় দাগ থাকলে, ফুলদানিতে ফুল শুকিয়ে গেলে... কোথাও কিছু না পেলে ঘরের মধ্যে শীতের সকালে কলের জল প্রচণ্ড ঠান্ডা হয়ে থাকা নিয়েও তোলপাড় করতেন। মোট কথা খুবই ছোটখাট বিষয় নিয়ে তিনি স্ত্রীকে হেনস্তা করতে অভ্যস্ত ছিলেন। আর লাবণ্যও চুপ করে থাকতেন। কোনওদিন তাঁকে কেউ পালটা উত্তর দিতে শোনেনি। তিনি স্বামীর অভিযোগ শুনতেন এবং কাজটি নিঃশব্দে আবার করতেন। বা করতেন না। একটানা গজগজ করে বলে যাওয়া বিরক্তিকর কথা তাঁর গায়ে লাগত না। লাবণ্যর অবিরাম বয়ে চলা কাজের মধ্যে চারদিক থেকে এলোমেলো ঝরে পড়া কঠোর শব্দগুলো এক-একটি মার্বেল গুলির মতো অবলীলায় গড়িয়ে চলে যেত ঘরের বিভিন্ন কোনায়।      
নতুন বিয়ের পরে দিয়ার মনে হতো প্রকাশ্যে সকলের সামনে স্ত্রীকে বিশ্রীভাবে অপদস্থ করে ওর শ্বশুর কেমন যেন আনন্দ পান। আধুনিক চিন্তাভাবনায় বড় হওয়া দিয়ার অস্বস্তি হতো। নিজের বাড়িতে বাবা-মায়ের সমঝোতা আদান-প্রদান আর সম্পর্কের উষ্ণতা দেখে তার একরকমের অভ্যেস। কথায় কথায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পাশের আরেকটি বয়স্ক মানুষকে অপমান করছেন, অথচ লাবণ্য নীরব, এই সমীকরণ তাকে বিদ্ধ করত। এর চেয়ে যেন কোমর বেঁধে ঝগড়া করাও ভালো। এক অবিশ্বাস্য নিঃস্পৃহতা নির্লিপ্তি নিয়ে লাবণ্য সব এড়িয়ে যান। কিছুই গায়ে লাগে না। সামান্য রোদের আঁচে ভোরের শিশিরের মতো মিলিয়ে যায় মুহূর্তে।  
এসব প্রসঙ্গ দিয়া দু’একবার বাপের বাড়িতে বলেনি তা’ নয়। 
‘দূর, পুরুষমানুষ অমন একটু-আধটু ডিমান্ডিং হয়। সবাই কি তোর বাপের মতো সন্ন্যাসী নাকি... যা দিচ্ছি খাচ্ছে, যা দিচ্ছি পরছে... ভালোমন্দ তাকিয়েও দেখে না!’ দিয়ার মায়ের কথাগুলো এক পরিতৃপ্তির গহিন শান্ত দিঘির মধ্যে থেকে উঠে আসে। দিয়ার বাবা লাজুক হাসেন। দিয়া দেখে দু’জনের আড়চোখের চাহনি-বিনিময়ে নির্ভরতার ঝলমলে সেতু গাঁথা হয়ে যায়। এই ম্যাজিকটা ওই বাড়িতে নেই।   
দিয়ার শাশুড়িকে তার শ্বশুরমশাই কখন কী বলছেন, সেসব কথাকে অসম্মান ভাবার মতো গুরুত্ব তারা দেননি। অন্তুও তাই।  
‘আজ খেতে বসে তোমার বাবা এত খিটখিট করছিলেন’ কিংবা ‘তোমার বাবাকে দেখি, কথায় কথায় মাকে বড্ড ছোট করেন,’ দিয়ার এইরকম অনুযোগ অন্তুর মগজ পর্যন্ত পৌঁছয় না। সে বুঝতে পারে না দিয়া ঠিক কী বলতে চায়। তার কাছে সংসারের এই নিয়মিত বাক্যালাপ স্বাভাবিক। বরাবর সে এমন দেখেই অভ্যস্ত। মাকে সেও কখনও মতামত বিনিময়ের ক্ষেত্রে বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ভাবে না। যদিও দিয়া আর অন্তু খুব বেশিদিন মা-বাবার পারস্পরিক মান-অপমান নিয়ে ভাবার সুযোগ পায়নি। হঠাৎ সেরিব্রাল স্ট্রোকে ভদ্রলোক একদিন অচল হয়ে পড়লেন। পক্ষাঘাত। শরীর সম্পূর্ণ অসাড়। যমে-মানুষে টানাটানি একেবারে।
পালা করে হাসপাতালে যায় ওরা। আত্মীয়-স্বজন আসেন, পাড়া-প্রতিবেশী। প্রথমদিকে অনেকেই ছুটে আসে। তারপর কমতে থাকে তাদের যাতায়াত। সকলেই নিজস্ব বৃত্তে ব্যস্ত। অন্তুরও চাকরির চাপ। পড়ে থাকে দিয়া। সকাল-বিকেল হাসপাতালে দৌড়োদৌড়ি করে আর মন দিয়ে দেখে রাখে লাবণ্যকে। 
প্রতিদিন লাবণ্য জিজ্ঞেস করেন। ‘উনি আজ কেমন আছেন?’ আর প্রতিদিন কেউ না কেউ জবাব দেয়, ভালো নয়। ওই একই রকম। কী বিপদ হল বল দেখি। আর কোনওদিন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবেন না মানুষটা। লাবণ্য চুপ করে শোনেন। কোনও মন্তব্য করেন না। তারপর রান্নাঘর থেকে চা করে নিয়ে আসেন। ধূপকাঠি জ্বালিয়ে সন্ধ্যার আরতিতে মিশিয়ে দেন মনে জমে থাকা বাষ্প। ঘষে ঘষে পরিষ্কার করেন পিতলের ফুলদানি বা নিজের গায়ে লেগে যাওয়া অপবাদের ক্লেদ। দিয়া ভাবে, আরও বেশি করে কাজের মধ্যে ডুবে যাচ্ছেন লাবণ্য, এভাবে মনের চাপ কমাচ্ছেন নিশ্চয়ই।
যেদিন ডাক্তার জানালেন, আর হাসপাতালে নয়। এবার যতদিন বাঁচবেন, বাড়িতেই থাকুন। সেদিন রাতে একটু উচ্ছল হয়েই খবরটা লাবণ্যকে জানিয়েছিল দিয়া।
—জানেন মা, বাবাকে বাড়িতে নিয়ে আসতে বলেছেন ডাক্তার।
দিয়া আশা করে লাবণ্যর কোমল চোখে জ্বলে উঠবে একচিলতে আলো। কিন্তু লাবণ্য বালিশের ওয়ারের ছিঁড়ে যাওয়া কোনা সেলাই করতে করতে মুখ তোলেন না একবারও। বলেন, ‘কবে আসবেন উনি?’
—এই তো তিন-চারদিনের মধ্যেই ছেড়ে দেবে, যদিও বাড়িতে সেই শুয়ে থাকা... বিছানা-নির্ভর জীবন, তবু বাড়ি তো, আমরা সবাই আছি।
দিয়া লক্ষ করে লাবণ্য উঠে যাচ্ছেন মোড়া থেকে, গুছিয়ে রাখছেন সেলাইয়ের সরঞ্জাম। মুখ ফিরিয়ে বললেন, ‘উনি কি এখন কথা বলতে পারছেন?’
—না মা। কথা বলা দূরস্থান... আমাদের চিনতেও পারছেন না।
—আমাকে একটু ছুটি দেবে বউমা?
দিয়া প্রথমে বুঝতে পারে না। ছুটি, কীসের ছুটি, কোথা থেকে ছুটি নেবার কথা বলছেন লাবণ্য।
লাবণ্য আবার বলেন, ‘আমার এবার ছুটি চাই।’  
লাবণ্যর আপাতসরল কথাগুলো দুর্বোধ্য লাগে দিয়ার। নিজের সংসার, নিজের স্বামী-সন্তান ছেড়ে আবার ছুটি নেয় কে!  
কিন্তু লাবণ্য এই বিষয়ে আর একটিও কথা বলেন না। দিয়া প্রথমে নিজে বোঝার চেষ্টা করে, ছুটি মানে কী? বাবা বাড়ি ফিরলে তবে তাকে দেখবে কে? একজন মরণাপন্ন অসহায় মানুষ, তাকে ছেড়ে কেউ এমন করে ছুটি চায়? আর ছুটি নিয়ে সে যাবেই বা কোথায়?
‘আচ্ছা মায়ের বাপের বাড়ির দিকের কোনও আত্মীয়-স্বজন কে আছেন... মা কি তাহলে সেখানে কোথাও যেতে চাইছে?’ দিয়ার প্রশ্নে খিঁচিয়ে ওঠে অন্তু, ‘আমি এত শত জানি না, দাদু-দিদা তো মায়ের ছোটবেলাতেই মরে গেছেন। ছিল এক মামা, মায়ের বড় ভাই, তাকে বাবা তেমন পছন্দ করত না। আমি বড় হওয়ার পরে কখনও সেই মামাকে এই বাড়িতে দেখেছি বলে মনে পড়ছে না।’
—তাহলে উনি কোথায় যাবেন? কার কাছে যাবেন? কীসের ছুটি চাইছেন তাই তো বুঝতে পারছি না।
অন্তু রেগে ওঠে, ‘তার চেয়েও বড় কথা এখন বাবার চব্বিশ ঘণ্টা দেখভাল করার আয়া লাগবে, এটা এক্সট্রা বার্ডেন না? একে হাসপাতালের খরচ... যতই মেডিক্লেম থাকুক, টাকা তো যাচ্ছে জলের মতো। এই সময় তোমাদের হাবিজাবি কথা শোনার সময় নেই আমার।’ 
লাবণ্য তার নিজের গণ্ডির মধ্যে সমস্ত কাজ করে চলেন চুপচাপ। আর একবারও কথা হয় না তাঁর সঙ্গে।
দিয়ার মনের মধ্যে টানাপোড়েন চলে। সকলে একটি মানুষের ঘরে ফেরার অপেক্ষায়, যদিও তিনি আর হাঁটাচলা করতে পারবেন না, তাঁর জড়ভরত জীবন কাটবে আয়ুরেখা অনুসারে, তবুও তো তিনি একজন জলজ্যান্ত মানুষ। কারও বাবা, কারও স্বামী, কারও শ্বশুর... কাকা মামা কোনও না কোনও সম্পর্ক জড়িয়ে আছে মানুষটির সঙ্গে। অথচ যার সঙ্গে একত্রিশ বছর এক ছাদের তলায় বাস, তার এই হঠাৎ একটি বিচ্ছিন্ন চিন্তাকে খুব হঠকারী মনে হয় দিয়ার। অন্তু তেমন পাত্তা দেয় না। বলে, ‘বাদ দাও তো মায়ের কথা, কোথায় আর যাবে, যাবার মধ্যে ওই পাশের গলিতে কালীমন্দিরে। আর কে আছে কোথায় যে, সেখানে গিয়ে থাকবে। আর তাছাড়া ওই একবারই তো বলেছে... সব কথা অত ধরতে যেও না। বাবাকে আগে কাল হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসি।’ কিন্তু অস্বস্তির কাঁটা বিঁধে থাকে দিয়ার মাথায়। সে চোখে চোখে রাখে লাবণ্যকে। কিছু কি গুছিয়ে নিলেন তিনি, কোনও ব্যাগ, কোনও থলি বা পুঁটলি। মেয়েদের নিজস্ব সঞ্চয়ের পুঁজি থেকে হয়তো ভরে রাখলেন কিছু। যদি সকলের অজান্তে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। কিন্তু লাবণ্য স্বাভাবিকভাবেই চলেন ফেরেন। তাঁর কোনও কাজে ফাঁকি নেই। আচরণে অসঙ্গতি নেই।    
অন্তু বাবাকে নিয়ে বাড়ি ফিরল বিকেলবেলায়। লাবণ্যকে সারাদিন আড়চোখে খেয়াল করতে করতে ক্লান্ত লাগে দিয়ার। সে কি শাশুড়ির কথাটাকে একটু বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলেছে? সত্যিই তো ওঁর যাওয়ার জায়গা নেই কোথাও। ছুটি নিয়ে চলে যাবার জন্য তো একটা জায়গা লাগে। বিয়ের পরে পুরীতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন লাবণ্য, একা সমুদ্রের ধারে হাঁটতে হাঁটতে আপনমনে বহুদূরে চলে যান। ফেরার সময় দিশেহারা হয়ে পড়েন। তখন কতই বা বয়স। উনিশ-কুড়ি। তারপর থেকে তাঁর স্বামী তাঁকে আর কখনও বেড়াতে নিয়ে যাননি। সেই হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি বিয়ের পর দিয়াকেও বলা হয়েছে সরস ভঙ্গিতে। লাবণ্য তখন সকলকে ভাত বেড়ে দিয়ে মাছের ঝোল আনতে রান্নাঘরে ঢুকেছিলেন। তাঁর প্রতিক্রিয়া দেখা হয়নি দিয়ার।  
অন্তু বাবাকে শুইয়ে দেয় শোবার ঘরের বড় খাটে। অসাড় অক্ষম একটি মানুষ। জীর্ণ শরীর। লাবণ্যর শোবার জায়গা তার পাশেই। ছোট টেবিলে থরে থরে সাজানো ওষুধ, যা এখন লাবণ্যকে বুঝে নিতে হবে নতুন রুটিনে।    অন্তু চলে যায় হাতমুখ ধুতে। ঘরে দিয়া একা। হাসপাতালের কাগজপত্র গুছিয়ে রাখতে হবে, ফোন আসছে একের পর এক। উদ্বিগ্ন আত্মীয়দের আশ্বস্ত করার দায়িত্ব রয়েছে। লাবণ্যকে বুঝিয়ে দিতে হবে কখন কোন ওষুধ খাওয়াতে হবে। হঠাৎ গুনগুন করে কথার আওয়াজ পেয়ে অবাক হয়ে ঘাড় ঘোরায় দিয়া। 
‘এই ওষুধটা এখনই দিতে হল তোমায়? জানো না ওটা ঠিক নটায় দেবার কথা... ঘড়ি নেই চোখের সামনে? আর এই কাপে? এই কাপে খাই আমি কখনও? খাওয়ানোর আগে হাতটা ধুয়েছিলে ভালো করে? ইস ওই নোংরা আঁচলে হাত মুছেই এবার আমার কাপটা ধরছ? কোনও হাইজিন সেন্স নেই তোমার। এই চাদরটা পালটানো হয়নি আজ কতদিন হল তার খেয়াল আছে... জানলার গ্রিলে তো সেই আদ্যিকালের ঝুল... না দেখিয়ে দিলে কিছুই চোখে পড়ে না... বালিশের ওয়াড়ে বিশ্রী তেলের গন্ধ, কাচা হয়নি ভালো করে, সেটাই দিয়ে দিলে আমাকে... অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছি, তবু যদি তোমার কিছু দয়ামায়া হয়...’
দিয়া বিস্ফারিত চোখে দেখে লাবণ্য তাকিয়ে রয়েছেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষটির দিকে। মৃদুস্বরে একা একাই কথা বলে যাচ্ছেন। অবিকল সেই সুর। যে সুর তিনি এতকাল ধরে একটানা শুনে অভ্যস্ত।
অঙ্কন : সুব্রত মাজী
11th  June, 2023
ব্রহ্মপুরের মনোজ শিকদার
শ্যামলী রক্ষিত

বিপুল ঘুম থেকে উঠেই দেখল, চার-চারটে মিসড কল। নামটা দেখেই মটকা গরম হয়ে গেল তার। ঘুম থেকে উঠতে সবুর সয়নি! কী অদ্ভুত মানুষ! এপ্রিল ফুল করার এমন উন্মাদ নেশা যে, কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলছে! এপ্রিল ফুল করবে বলে ভোর থেকে ফোন করছে! বিশদ

09th  July, 2023
রুপোলি শস্যের জাদু
হারাধন চৌধুরী

‘মিঠে গঙ্গাজলে তোলা অন্নপূর্ণা-ঘাটে।/ মেছোর পাটায় শোভে কিবা বাঁকা ঠাটে।।’ ... ‘কাঁচা ইলিশের ঝোল কাঁচা লঙ্কা চিরে।/ ভুলিবে না খেয়েছে যে ব’সে পদ্মাতীরে।।’ ... ‘আষাঢ়ে প্রথম মৎস্য প্রবেশিলে ঘরে।/ দূর্ব্বাধানে পূজে তারে শঙ্খরব ক’রে।।’ ... ‘একটি একটি কাঁটা তারিয়ে তারিয়ে।/ অবলা বিরলে খান বেড়ালে হারিয়ে।। বিশদ

09th  July, 2023
ছায়া গাছ
ছন্দা বিশ্বাস

তপেশরঞ্জন একসময়ে লটারির টিকিট বিক্রি করত। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়ে পড়া ছেড়ে দিয়েছিল। এখন মস্ত বড় প্রমোটার হয়েছে। কয়েকজন বন্ধু মিলে পার্টনারশিপ ব্যবসা খুলেছে। আয় পত্তর ভালোই হচ্ছে সেটা ওর বাড়ি দেখেই শতানিক গেলবারই বুঝতে পেরেছিল। তবে, তপেশ দান ধ্যান করে। বিশদ

02nd  July, 2023
হারিয়ে যাওয়া যৌথ পরিবার
সমৃদ্ধ দত্ত

হেরে গিয়েছে গণতন্ত্র। জিতেছে স্বৈরতন্ত্র। সেইসব একান্নবর্তী পরিবারে বহু সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই ছিল আলোচনার পরিসর। সেজো মামার নাতনির অন্নপ্রাশনে কী দেওয়া হবে? নূপুরের জন্য এই শ্যামনগরের পাত্রটি কি মানানসই? নাকি কসবার এই ডাক্তার ছেলেকেই বাছাই করা হবে? বিশদ

02nd  July, 2023
আম প্রীতির ইতিহাস
সন্দীপন বিশ্বাস

গৌতম বুদ্ধ, সম্রাট আলেকজান্ডার, মুঘল সম্রাট আকবর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিংবা অমিতাভ বচ্চন— বিভিন্ন সময়ের এই মনীষী ও ব্যক্তিত্বদের মধ্যে মিল কোথায়?
বিশদ

25th  June, 2023
সোনার ঘড়ি
বাণীব্রত চক্রবর্তী

মঞ্জুমাসি বলেন, ‘কুবলয়, মাঝে মাঝে তোমাকে নিয়ে চিন্তা হয়।’ সে জিজ্ঞেস করে, ‘চিন্তা হয়! কেন?’ উনি বলেন, ‘তুমি বড় সরল। তার উপর তোমার যা ভুলো মন। তাই চিন্তা হয়।’
কুবলয় হাসে। মঞ্জুমাসি তার নিজের মাসি নন। তার মায়ের চেয়ে বয়সে অনেক ছোট।
বিশদ

25th  June, 2023
শততম বিবাহবার্ষিকী
তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

বরাবরই ভোরে ওঠা অভ্যাস নন্দিতার। আজ একটু আগেই ঘুম ভাঙল। দেখল, জাঁকিয়ে নাক ডাকছে রিক্ত। আজ যেন বেশিই গর্জন করছে তার ধারালো নাকটা। সেই নাকে একটা ছোট্ট টোকা মেরে নন্দিতা বলল, ‘অ্যাই, ওঠো না।’  বিশদ

18th  June, 2023
হাজারদুয়ারির হাতছানি
মৃদুলকান্তি ঘোষ

জ্যৈষ্ঠের গরমে হাঁফিয়ে উঠেছে সৈকত। দোকান দেখলেই চাতক চাহনিতে এগচ্ছে সে। ‘এক বোতল জল দিন।’ তাঁর অবাক জলপান চলছে ১৫-২০ মিনিটের ব্যবধানে, ছোট ছোট স্পেলে। মুর্শিদাবাদের শুকনো গরমে ঝরঝর করে ঘাম ঝরছে। তৃষা এবার হেসেই ফেলল বন্ধুর কাণ্ড দেখে। বিশদ

11th  June, 2023
ক্রমাগত
সুমন দাস

সকালের ট্রেন। আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। ঠাসাঠাসি ভিড়। তিল ধারণেরও জায়গা নেই। একে ভিড়, তায় আবার গরম। বৈশাখ মাসের সকাল। দশটাও বাজেনি, অথচ সীমাহীন গরমে দরদর করে ঘামছে বিকাশ। একটু হাওয়ার জন্যে হন্যে হয়ে রয়েছে সে। বাকিরাও তাই। বিশদ

04th  June, 2023
কালের যাত্রার ধ্বনি
সন্দীপন বিশ্বাস

 

দক্ষিণে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি। উত্তরে মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি। সংলগ্ন দেবী চিত্তেশ্বরীর মন্দির। পশ্চিম দিকে গঙ্গার অনন্তধারা। এই অঞ্চলটুকুই হল চিৎপুর। কেউ বলেন, দেবী চিত্তেশ্বরীর মন্দির থেকেই এই স্থানের নাম চিৎপুর। আবার কারও মতে, চিতু ডাকাতের নামানুসারেই এই নামকরণ। বিশদ

04th  June, 2023
চিরশৈশব
সুমন মহান্তি

 

বিকেল হয়ে আসছে, আকাশে বিস্কুট রং, টিলার ওপারে সূর্য স্তিমিত হচ্ছে। ট্রেনের সাইড বার্থে বসে বাইরের দৃশ্য দেখছিলাম। প্রতিমুহূর্তে দৃশ্য বদলে যাচ্ছিল। কেন জানি না অবেলার দৃশ্য আমাকে আনমনা করে দেয় বারবার। বিশদ

28th  May, 2023
অযাচিত
সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

 

বাসস্ট্যান্ডে লাবণ্য যে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে, ভালো লাগছে না। চটির ডগায় একটা পাথরকুচি নাড়াচাড়া করছে। বাসের পাত্তা নেই। অনেকদিন পর বেরিয়েছে ও। এখন লাবণ্যর একটা নতুন পরিচয় হয়েছে সমাজে। বিধবা! শব্দটাতেই কেমন একটা সাদাটে-ফ্যাকাশে ভাব। নিরামিষ গন্ধ। বিশদ

21st  May, 2023
বিন্নি ধানের খেত
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

রাস্তার পাশে একটা সাইনবোর্ডের গায়ে ‘সুন্দরপুর’ নামটা দেখে সুমিতানন্দ ওরফে সুমিত বুঝতে পারলেন, তিনি তাঁর গন্তব্যে প্রায় পৌঁছে গিয়েছেন। সামনেই একটা প্রাইমারি স্কুল পড়বে। সেখানে তাঁর জ্ঞাতিভাই পলাশের অপেক্ষা করার কথা। সে-ই তাঁকে নিয়ে যাবে। বাড়ি। বিশদ

14th  May, 2023
প্রতিক্ষা
নির্মাল্য রায়

সল্টলেকের নার্সিংহোমের দোতলায় আইসিসিইউ-এর বাইরে বসে হঠাৎ হারিয়ে গিয়েছিল বছর পনেরো আগে। সংবিৎ ফিরল নার্সের বাজখাঁই গলার চিৎকারে, ‘মিস্টার সুখেন্দু চৌধুরীর বাড়ির লোক কে আছেন?’ ডাঃ অনির্বাণ সারেঙ্গীর চিকিৎসায় প্রায় দু’মাস হয়ে গেল এই নার্সিংহোমে ভর্তি সুখেন্দু। বিশদ

07th  May, 2023
একনজরে
সদ্য শেষ হয়েছে পঞ্চায়েত ভোট। ফলাফলে জেলার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু, যতদিন বোর্ড গঠন না হচ্ছে, ততদিন কিছুতেই দু’চোখের পাতা এক করতে পারছে না গেরুয়া শিবিরের নেতারা। ...

আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনের আওতায় সম্প্রতি জিএসটিকে আনা হয়েছে। এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক। এর ফলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সরাসরি নাক গলাতে পারবে জিএসটি নেটওয়ার্কে। সেখান থেকে তারা তথ্য নিতে পারবে।  ...

উইম্বলডনে মহিলাদের সিঙ্গলসের ফাইনালে মুখোমুখি মার্কেটা ভন্ড্রুসোভা ও ওনস জাবিউর। সেমি-ফাইনালে এলিনা ভিতোলিনাকে ৬-৩, ৬-৩ স্ট্রেট সেটে হারালেন চেক প্রজাতন্ত্রের অবাছাই প্লেয়ার মার্কেটা। এই প্রথম অল ইংল্যান্ড ক্লাবের সেন্টার কোর্টে খেতাবি লড়াইয়ে নামবেন তিনি। ...

মালদহের বামনগোলা ব্লক থেকে এবার  বিজেপি কার্যত ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হতেই বিজেপির কঙ্কালসার দশা বেরিয়ে এসেছে। যে ব্লককে এক সময়  বিজেপির গড় মনে করা হতো, সেই ব্লক থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাপক উত্থান হয়েছে। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

পুরনো রোগের বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্যহানির সম্ভাবনা। ব্যবসায় শুভত্ব বজায় থাকবে। আর্থিক প্রগতিও হবে।   ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৫৪: শ্রীরামকৃষ্ণের অন্যতম শিষ্য ও শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃতর রচয়িতা মহেন্দ্রনাথ গুপ্তর জন্ম
১৯১৮: সুইডেনের চিত্রপরিচালক ইঙ্গমার বার্গম্যানের জন্ম
১৯৩৬: লেখক ধনগোপাল মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৬৭: শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার ও রাজনীতিবিদ হাসান তিলকরত্নের জন্ম
১৯৭১: মডেল মধু সাপ্রের জন্ম
১৯৭৫: সুরকার মদন মোহনের মৃত্যু
২০০৩: অভিনেত্রী লীলা চিটনিসের মৃত্যু
২০০৮: বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড়ের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.১৫ টাকা ৮২.৮৯ টাকা
পাউন্ড ১০৫.০১ টাকা ১০৮.৫৭ টাকা
ইউরো ৮৯.৮৩ টাকা ৯৩.০৭ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৫৯,৭৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৬০,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৫৭,১০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৭৩,৫৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৭৩,৬৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৯ আষাঢ় ১৪৩০, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩। দ্বাদশী ৩৫/৩৪ রাত্রি ৭/১৮। রোহিণী নক্ষত্র ৪৩/২৭ রাত্রি ১০/২৭। সূর্যোদয় ৫/৪/১, সূর্যাস্ত ৬/২০/৩৫। অমৃতযোগ দিবা ১২/৮ গতে ২/৪৮ মধ্যে। রাত্রি ৮/২৯  মধ্যে পুনঃ ১২/৪৭ গতে ২/৫৫ মধ্যে পুনঃ ৩/৩৮ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ-দিবা ৫/৫৭ গতে ৬/৫০ মধ্যে পুনঃ ৯/২৯ গতে ১০/২২ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৩ গতে ১১/৪২ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/১ গতে ১০/২২ মধ্যে। 
২৮ আষাঢ় ১৪৩০, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩। দ্বাদশী রাত্রি ৮/১৩। রোহিনীনক্ষত্র রাত্রি ১২/৬। সূর্যোদয় ৫/৪, সূর্যাস্ত ৬/২৩। অমৃতযোগ দিবা ১২/৯ গতে ও ২/৪৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/৩১ মধ্যে ও ১২/৪৭ গতে ২/৫৬ মধ্যে ও ৩/৩৮ গতে ৫/৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৫/৫৬ গতে  ৬/৫০ মধ্যে ও ৯/৩০ গতে ১০/২৩ মধ্যে। বারবেলা ৮/২৪ গতে ১১/৪৩ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/৩ গতে ১০/২৩ মধ্যে।   
২৪ জেলহজ্জ।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
প্রথম টেস্ট: তৃতীয় দিনে ভারত ৪২১/৫ (ডিক্লেয়ার)

11:12:00 PM

কুনোতে মৃত্যু হল আরও এক চিতার
ফের একটি চিতার মৃত্যু হল মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে। মৃত ...বিশদ

03:59:23 PM

লেকটাউনে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
লেকটাউনে দমকল কর্মীকে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার দু'জন শ্যুটার। তাদের একজনের ...বিশদ

03:57:00 PM

পৃথিবীর কক্ষপথে সফল ভাবে উৎক্ষেপণ হল চন্দ্রযান-৩ এর

03:47:33 PM

শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান ৩-এর সফল উৎক্ষেপণ
চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপণ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ, শুক্রবার ঠিক ...বিশদ

02:50:04 PM

কাঁচি দিয়ে খুনের চেষ্টা মানিকতলা এলাকায়, গ্রেপ্তার ১

02:38:43 PM