পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
‘লালঝুঁটি কাকাতুয়া ধরেছে যে বায়না, চাই তার লাল ফিতে চিরুনি আর আয়না’...।
তালে, ছন্দে এই শব্দগুলো চেনা। কাকাতুয়া চিরুনির জন্য বায়না জুড়েছিল। আপনিই বা বাদ যাবেন কেন? যত্নপাঠের প্রথম অধ্যায়ই হল সঠিক জিনিসের সন্ধান। অর্থাৎ আপনি চুলের যত্ন চান। কিন্তু সঠিক হেয়ার ব্রাশের খোঁজ রাখেন না, তা বললে চলবে কেন? এক এক ধরনের চুলের জন্য এক একরকম হেয়ার ব্রাশ প্রয়োজন। সঠিক চিরুনি সংগ্রহে থাকা তাই একান্ত জরুরি।
রকমারি
অন্যের হেয়ার ব্রাশ ব্যবহারের অভ্যেস থাকলে প্রথমেই তা ত্যাগ করতে হবে। আলাদা ডিজাইন এবং আলাদা শেপের হেয়ার ব্রাশ তৈরিই হয় আলাদা আলাদা কাজের জন্য। কোনওটাতে খুশকি কম হয়। কোনওটায় আবার স্ক্যাল্পের মাসাজ হয়। যে চিরুনির দাঁড়ার মধ্যে ফাঁক বেশি, তা ভিজে চুল আঁচড়ানোর উপযোগী। শ্যাম্পু করে হেয়ার মাস্ক লাগিয়ে ধুয়ে ফেলার পরে এই ধরনের চিরুনি ব্যবহার করা যেতে পারে। যে চিরুনির দাঁত খুব সরু, সেটা সিঁথি করতে কাজে লাগে। সোজা লাইন টেনে চুলকে দুই বা তিনভাবে ভাগ করতে এই ধরনের চিরুনির সাহায্য নিন। আবার চুল উল্টে আঁচড়ানোর জন্যও এই ধরনের চিরুনি আদর্শ। যাঁদের চুল স্ট্রেট, তাঁরা এটা ব্যবহার করুন। কোঁকড়া এবং ঘন চুলের ক্ষেত্রে এই চিরুনি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। হেয়ার জেল ব্যবহার করার সময় সাধারণত আঙুলের সাহায্য নেওয়া হয়। কিন্তু হেয়ার ব্রাশ ব্যবহার করলে আলাদা লুক আসে। চুল মাঝারি দৈর্ঘ্যের হলে উল্টে আঁচড়ে স্টাইল করতে পারেন। প্রথমে হেয়ার জেল লাগান। হেয়ার ব্রাশের সাহায্যে তা চুলের নীচ পর্যন্ত ছড়িয়ে দিন। চুলের ভলিউম কম হলেও চিরুনির সাহায্যে জেল ব্যবহার করলে লুকে পার্থক্য তৈরি হয়।
বিশেষজ্ঞের মত
গত ১২ বছর ধরে পেশাদার হেয়ার স্টাইলিস্ট হিসেবে কাজ করছেন সুরজিৎ দাস। তিনিও মনে করেন, সব চুলে সব ধরনের হেয়ার ব্রাশ কাজ দেয় না। কোঁকড়া চুল হলে মোটা দাঁতের চিরুনি চাই। কাঠের, সেরামিক, সিন্থেটিক বা ফ্ল্যাট ব্রাশ— যাই হোক, দাঁড়াগুলো মোটা হতে হবে। এতে চুলে টান কম লাগবে। সাধারণ চুলে ফ্ল্যাট ব্রাশই ভালো। তিনি বললেন, ‘যে কোনও ধরনের চুলে যতটা কম সিন্থেটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যায় ততই ভালো। কাঠের ব্রাশ ব্যবহার করলে চুল চুম্বকের মতো খাড়া হয়ে যায় না। ফলে এটা সব বয়সেই ব্যবহার করতে পারেন। প্রফেশনাল স্যালোঁতে কার্বনের তৈরি হেয়ার ব্রাশও ব্যবহার হয়। ফ্ল্যাট ব্রাশ বা প্যাডেল ব্রাশ (এই ধরনের ব্রাশ অনেকটা সাইকেলের পাদানির মতো দেখতে) সব চুলের জন্য ভালো। । সঠিক হেয়ার ব্রাশ ব্যবহার করলে মাথায় রক্ত সঞ্চালনও ভালো হয়। সেকারণে দিনে আমি অন্তত দু’বার চিরুনি ব্যবহার করতে বলি।’
মেটিরিয়াল
হেয়ারব্রাশ কোন ধরনের মেটিরিয়াল দিয়ে তৈরি সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। চুলের মধ্যে বিদ্যুৎ তরঙ্গ তৈরি হলে তা সম্পূর্ণ নির্মূল করে কাঠের চিরুনি। মেটাল অর্থাৎ ধাতব চিরুনিও খুব শক্তিশালী। চুল না ছিঁড়ে জট কাটাতে ওস্তাদ। কার্বন হেয়ারব্রাশ এখন জনপ্রিয়। এটি তাপরোধী। প্লাস্টিকে তৈরি চিরুনি ব্যবহার করা উচিত নয়। কিন্তু সেলুলোজ অ্যাসিটেট অর্থাৎ ন্যাচারাল প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হলে ব্যবহার করতে পারেন। ডিম্বাকৃতি হেয়ার ব্রাশ লম্বা ও স্ট্রেট হেয়ারের জন্য আদর্শ। যে কোনও চুলের জট ছাড়ানোর কাজও ভালো করতে পারে। কিন্তু ভেজা চুলে চিরুনি দেবেন না। আয়তাকার হেয়ার ব্রাশ চুল শুকনো করার কাজে সেরা। জট পড়তে দেয় না। দ্রুত সেট করতেও সাহায্য করে। যে হেয়ারব্রাশের দাঁড়গুলি বুরুশের মতো তা দিয়ে আঁচড়ালে স্ক্যাল্পে তৈরি হওয়া প্রাকৃতিক তেল (সেবাম) মাথার সব জায়গায় সমানভাবে ছড়াতে পারে। শুষ্ক চুলের ক্ষেত্রে এটি দারুণ কাজে লাগে।
দরকারি ব্রাশ
চিরুনি কেনার আগে এক ইঞ্চি চুলে বা নানারকম পুতুলের চুলে পরীক্ষা করে দেখে নিন।
প্যাডেল ব্রাশ: আয়তাকার ব্রাশটি মাথার তালুর অনেকটা জুড়ে সঞ্চালন করা যায়। রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। মাঝারি থেকে লম্বা চুলে ভালো।
পিন ব্রাশ: ওভাল শেপের ব্রাশে ধাতুর তৈরি গোল গোল পিন থাকে। যা চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে।