পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
তিন ভাগ জল, এক ভাগ স্থল। হ্যাঁ, পৃথিবীর কথাই হচ্ছে। স্কুলের ভূগোল বইতে এই তথ্য পড়েছেন সকলে। জলের আর এক নাম জীবন। সাধারণ জ্ঞানের পরীক্ষার খাতায় এ প্রশ্নের উত্তর আপনিও লিখেছেন। ত্বক সুন্দর রাখতে সেই জলকেই হাতিয়ার করতে পারেন। শুধুমাত্র ত্বক শুষ্ক হলে বা শীতের সময় যে তার যত্নআত্তি প্রয়োজন, তা নয়। ত্বকের হাইড্রেশন সারা বছর জরুরি।
ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞ শচীন বর্মা মনে করেন, ত্বককে কোমল, উজ্জ্বল রাখতে গেলে ত্বকের মধ্যে জলীয় পদার্থ থাকা জরুরি। ত্বকে যত জলীয় পদার্থ থাকবে ত্বক তত নমনীয় দেখাবে। আর জলীয় পদার্থের ভাগ কম থাকলে, শুষ্ক দেখাবে। ফলে ত্বককে ভালো রাখার জন্য সারা বছর হাইড্রেশনের দিকে নজর দিতে হবে। ত্বকের হাইড্রেশন সঠিক ভাবে হলে সহজে বলিরেখা পড়বে না। র্যাশ, চুলকানি কম হবে। বয়স ধরে রাখা সহজ। তাঁর কথায়, ‘একটা দেওয়াল তৈরি করতে যেমন ইট আর সিমেন্ট লাগে, তেমনই ত্বককে ভালো রাখতে গেলে সিমেন্টের ভাগ হল জল। যা হাইড্রেট করবে। বাকি যত্ন লুকিয়ে ইটের মধ্যে।’
নানা উপায়ে সারা বছর ত্বকের হাইড্রেশন সম্ভব। কিন্তু গোড়া ধরে নাড়া দেওয়ার পক্ষপাতী শচীন। অর্থাৎ কেন ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, সেটা আগে বুঝতে হবে বলে মনে করেন তিনি। ‘ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার বিবিধ কারণ রয়েছে। কড়া ধাতের সাবান ব্যবহার, তাপমাত্রার তারতম্য, গরমে অনেকক্ষণ বাইরে থাকা, বেশি পরিমাণে এক্সফোলিয়েটর বা বেশি স্ক্রাব ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক হতে পারে। বেশিক্ষণ এয়ার কন্ডিশনে থাকলেও ত্বক শুকিয়ে যায়। এছাড়া কিছু কিছু শারীরিক পরিস্থিতি রয়েছে। হাইপোথাইরয়েড, ডায়াবেটিক হলে ত্বক শুষ্ক হতে পারে। ইন্টারনাল, এক্সটারনাল যে কারণই হোক, তা আগে খুঁজে বের করতে হবে। এরপর এর সমাধান,’ বললেন শচীন।
পানীয় জল
প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ার পরামর্শ দিলেন শচীন। জল ত্বককে ভিতর এবং বাইরে থেকে সুস্থ রাখবে। দিনে অন্তত আট গ্লাস জল রুটিন মেনে খাওয়া শুরু করুন। খুব বেশি শুষ্ক আবহাওয়ায় থাকলে তার পরিমাণ বাড়তে পারে।
ক্লেনজার
‘মাইল্ড ক্লেনজার ব্যবহার করুন। এর পিএইচ (পোটেনশিয়াল অব হাইড্রোজেন) ত্বকের পিএইচ লেভেলের সমান হতে হবে। সেটা হল ৫.৫’, বললেন শচীন। বাজারচলতি বহু ক্লেনজার কড়া ধাতের যা ত্বকের সাধারণ ময়েশ্চারকে নষ্ট করে ফেলে। এতে সময়ের অনেক আগেই ত্বক বুড়িয়ে যায়।
ময়েশ্চার
শচীনের পরামর্শ, দিনে দু’বার অন্তত ত্বক পরিষ্কার করে হাইড্রেট করুন। মাইল্ড ক্লেনজার ব্যবহার করে ময়লা তুলে ফেলুন। এরপর হাল্কা ময়েশ্চারাইজার লাগান। ত্বকের উপযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। ‘ক্রিমের মধ্যে কী কী উপকরণ রয়েছে তা দেখে, বুঝে কিনুন। ক্রিমের মধ্যে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, ইউরিয়া, সেরামাইড থাকলে সেটাও হাইড্রেশনের জন্য ভালো,’ বললেন বিশেষজ্ঞ।
চিকিৎসা
নিয়ম মেনে চলার পরও একান্তই ত্বকের শুষ্কভাব না কমলে চিকিৎসার পরামর্শ নিতে হবে জানালেন শচীন। তিনি জানান, অ্যাকোয়া ফেসিয়াল, হাইড্রেটিং ফেসিয়ালের মতো কিছু চিকিৎসাও রয়েছে। ত্বক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনে সেটাও করাতে হবে। এছাড়া ভিটামিন সি সিরাম ত্বকের হাইড্রেশনের জন্য খুব ভালো। ওরাল ভিটামিন সাপ্লিমেন্টও অনেক সময় কাজে দেয়। রোদ্দুরে বেরনোর আগে সানস্ক্রিন ব্যবহারেরও পরামর্শ দিলেন তিনি।