পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
যে কোনও ভিডিওর শুরুতে তিনি বলে ওঠেন ‘নমস্তে দর্শকো...’। কথায় কথায় শায়েরি বানাতেও তিনি সিদ্ধহস্ত। কলকাতায় এসেও স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে নিজস্ব বিভা ছড়িয়ে গেলেন নবাবকন্যে সারা আলি খান। তাঁর ছবি ‘জরা হাটকে জরা বাঁচকে’ তখনও মুক্তি পায়নি। মে মাসের শেষ সপ্তাহে সেই ছবির প্রচারেই ঘুরে গিয়েছিলেন কলকাতা। কলকাতা তাঁর পিতামহীর শহর। ঠাকুরমার আবেগ ও শৈশব ধারণ করেছে যে শহর, সেখানে এলে যে তিনিও খানিক নস্টালজিক হয়ে পড়বেন সে কথা বুঝতে খুব একটা কাঠখড় পোড়াতে হয় না। কলকাতার সফরে প্রথমার্ধে একটি গয়না বিপণির উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন সারা। পরনে ছিল ডিজাইনার তরুণ তাহিলিয়ানির হাল্কা ন্যুড রঙের প্রিটেন্ড আনারকালি স্যুট। যার বাজারমূল্য প্রায় চার লাখ টাকা। গলায় গোল্ড প্লেটেড কুন্দনের জমকালো নেকলেস। দ্বিতীয় লুকে অভিনেত্রীকে দেখা যায় ডিজাইনার আকাঙ্ক্ষা গাজরিয়ার লাইম গ্রিন জর্জেট টাই ডাই প্রিন্টেড ঘাগরার সেট। যার দাম ৯৫,২০০ টাকা! এই প্রসঙ্গেই জানালেন, ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায়, এমন পোশাকেই তিনি স্বচ্ছন্দ তিনি। এমনিতেও সোশ্যাল মিডিয়ার নানা ভিডিওতে সালোয়ার, দোপাট্টা বা শাড়িতে মাঝেমাঝেই ধরা দেন নবাবতালুকের এই মেয়ে। তাহলে কি সাবেক পোশাক নিজের পছন্দেই পরা, নাকি নবাব খানদানের আভিজাত্য মেনে পোশাক বাছতে হয় তাঁকে? এই প্রশ্ন উঠতেই খানিক সচেতন তিনি। বললেন, ‘আমি আমার দেশের সংস্কৃতি ও রীতিকে সম্মান করি, আচার-ব্যবহার ও পোশাক সব ক্ষেত্রেই ভারতীয়ত্ব বজায় যেন থাকে তা ছোট থেকেই শিখেছি। তাই পোশাক বাছার সময়ও ঝোঁকটা থাকে ভারতীয় পোশাকের দিকে।’ কলকাতায় সিনেমার প্রচারে এলেও নাগরিক কৌতূহলে মাঝে মাঝেই উঠে এল তাঁর সঙ্গে ক্রিকেটার শুভমন গিলের সাম্প্রতিক রসায়নের কথা। প্রেম কি আদৌ ভেঙেছে? সরাসরি এই প্রশ্নের জবাবেও স্পিকটি নট সারা। শুভমনের সঙ্গে মন দেওয়া-নেওয়ার পর্ব যে তিনিও ভুলতে চান বোঝা যাচ্ছিল প্রশ্নটা এলেই এড়িয়ে যাওয়ার ভঙ্গিমায়। কলকাতার রক্ত তাঁর খানদানে রয়েছে। তাই এই শহরকে নতুন করে জানতে চান তিনি। বললেন, ভালোবেসে ফেলেছেন কলকাতাকে। নানা প্রসঙ্গে বারবারই উঠে আসছিল ঠাকুরমা শর্মিলা ঠাকুরের কথা। তাঁর সাজগোজ, ফ্যাশন সম্পর্কে বোধ— এগুলো তৈরির নেপথ্যে কি ঠাকুরমার কোনও টিপস কখনও কাজে এসেছে? ‘টিপস’ বলতে নারাজ তিনি। জানালেন, বাড়িতে যেমন দেখেছেন, সেভাবেই তাঁর ফ্যাশনভাবনা গড়ে উঠেছে। তবে তাঁর বাড়িতে সবসময়ই নিজস্বতার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ঠাকুরমা টিপসের বদলে শিখিয়েছেন নিজস্বতার শিক্ষা। তাই পোশাক নির্বাচন হোক বা সাজ, সবক্ষেত্রেই নিজের পছন্দকে পয়লা নম্বরে রাখেন সারা। অভিনয়ের ক্ষেত্রেও মা অমৃতা, বাবা সইফ বা ঠাকুরমা শর্মিলার কাছ থেকে কোনও টিপস নেওয়ার চেয়ে চরিত্রকে বুঝে নিজের মতো করে তা ফুটিয়ে তুলতেই আগ্রহী বেশি তিনি। জানালেন, ‘বাড়িতে প্রায় সকলেই অভিনয় জগতের সঙ্গে যুক্ত। তাই প্রত্যেকের কাজ আলাদা হলে তবেই না দর্শকের ভালো লাগবে। তাই সকলেই ভরসা রাখে নিজস্বতার উপর।’
ঠিক যে নিজস্বতায় ভর করে বঙ্গসফরে ভিক্টোরিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন ‘নমস্কার বন্ধুরা, আমি তোমাকে ভালোবাসি।’ আবার যে নিজস্বতায় ভরসা করে চেনা ছক ভেঙে হঠাৎই কলকাতার রাস্তায়, ভিড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে একের পর এক ফুচকা ও মিষ্টি খেয়ে নিলেন ডায়েটের কড়া চোখ উড়িয়ে!