Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

সিকি মানবী

চিরঞ্জয় চক্রবর্তী: আমরা কেউ মায়ের সঙ্গে থাকি না। আমার অন্য তিন ভাই অনেক আগেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে। সংসারের গল্পগাথা যেরকম হয়। সব সংসারেই ছেলেরা বিয়ে করলে নাকি অন্যরকম হয়ে যায়। অন্য সব চিত্রনাট্যের মতোই আমাদের বাড়িতেও কোনও বউ থাকতে পারেনি! একদিন কথায় কথায় বাবা বলেছিলেন, ‘তুমি বোকা, তোমার কোনও স্বপ্ন নেই, তাই তুমি আমাদের সঙ্গে আছ।’ আমি উত্তর করতে পারিনি। বাবার দিকে শুধু তাকিয়েছিলাম। আমি অবিবাহিত বা বলা যেতে পারে বিয়ে করে উঠতে পারিনি। তাই আমি বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকতাম। বছর দশেক আগে বাবা হঠাৎ চলে গেলেন। বাজারে গিয়ে আমি সব্জি কিনতাম কিন্তু মাছটা তিনি পছন্দ করতেন। একসঙ্গেই বাজারে যেতাম, বাবা মাছের বাজারে ঢুকতেন। আমি অন্যদিকে। সেদিন সুস্থ মানুষটা বাজারে মাছ কিনতে গিয়ে নিতাইকে বলেছিলেন, তুই বড্ড ছোট ছোট মাছের পিস করিস, একটু বড় রাখবি। বাড়িতে তো আমরাই...। আর কোনও কথা কেউ শোনেনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তারবাবু বাবাকে দেখে মাথা নাড়ালেন। তারপর বললেন, ‘নিয়ে যান, পাড়ার ডাক্তারবাবুর কাছ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে নিন। এখানে থাকলে পোস্টমর্টেম করতে হবে।’ এই ঘটনার প্রায় আট বছর পর আমার বদলি হল জলপাইগুড়িতে। মা প্রথম কয়েকমাস আমার সঙ্গে ছিল। আমার ওখানে সংসার সাজানোর পর কলকাতায় চলে এসেছে। আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম বদলিটা আটকানোর। পারিনি। বাড়িটাও মা ফাঁকা রাখতে চাইছিল না। নিজের উপার্জনে এবং তত্ত্বাবধানে করা বাড়ি, বুক দিয়ে আগলে রাখতে চাইত। আমি জলপাইগুড়ি থেকে প্রতি সপ্তাহে বাড়ি আসি। ওখান থেকে শুক্রবার রাতে ট্রেনে চাপি শনিবার ভোরে শিয়ালদায় নেমে বাজার করে বাড়ি ফিরি। কোনও কোনও সপ্তাহে অর্গানিক তরকারি, সর্ষের তেল কেনার জন্য রবিবারেও বাজার করি। মায়ের কথা অনুযায়ী আমি কেনাকাটা করি। মা ফ্রিজে গুছিয়ে রাখে। মাকে সারা সপ্তাহ আর বাজারের চিন্তা করতে হয় না।
...
মা কিছুতেই বাড়ি ছেড়ে জলপাইগুড়ি থাকতে চাইত না। এ বাড়িটা মায়ের বাড়ি। এ বাড়ি মায়ের পঞ্চম সন্তান। সপ্তাহে একদিন সারেঙ্গদা বাড়িটা ঘুরে দেখে, তারপর মায়ের হাতের গরম রুটি খেতে খেতে বলে কোথায় কী হয়েছে এবং কীভাবে করতে হবে। এ বাড়ি হওয়ার সময়ে সারেঙ্গদা জোগাড়ে ছিল। তারপর ধীরে ধীরে মিস্ত্রি হয়ে গেল। আমাদের ছোটবেলায় সারেঙ্গদা বাগানের গাছপালা দেখত, বাড়িঘর পরিষ্কার করত। বাবার ডান হাত ছিল। বাড়িতে কিছু করতে হলে সারেঙ্গ। প্রায় দিনই দুপুরে খেত। ধীরে ধীরে মিস্ত্রি হয়ে গেল। তারপর থেকে সপ্তাহে একদিন আসা শুরু করল। কোথাও কাজে যাওয়ার আগে সব কিছু দেখে যায়। সারেঙ্গদাও এসেছে। এককোণে চুপচাপ বসে আছে।
আজ শনিবার, সকালে এসে দেখি অনেক লোক আমাদের বাড়িতে। আসার পথে মেজভাই দু’বার ফোন করেছে। আমি আসছি কি না জানতে চেয়েছে। ‘ট্রেনে আছি’ বলে ছেড়ে দিয়েছি। ভাইরা, তাদের বউয়েরা সবাই এসে গিয়েছে। এদের দেখে মনের মধ্যে একটা খারাপ খবর উঁকি মারছে। কিন্তু কাল রাতেও তো কথা হল। ট্রেন ছাড়তেই বললাম, ‘ট্রেন ছেড়েছে’। মা বলল, ‘দুগ্গা, দুগ্গা’। আমি বাজারের ব্যাগটা নীচের ভাড়াটের বারান্দায় রেখে উপরে গেলাম। মায়ের ঘরের দরজাটা ভাঙা, একটু অবাক লাগল। ঘরের মধ্যে মা মেঝেতে শুয়ে। শুধু মেঝেতে শুয়ে কেন? মায়ের জন্য একটা চাদরও পাতা হয়নি। জুতো খুলে মাকে খাটে শোয়ালাম। মা নিথর হয়ে গিয়েছে। মা আর বলছে না, ‘বাবু এসেছিস! আজ কি ট্রেন লেট ছিল?’
-২-
মা বিয়ের পর কোন বাড়িতে এসেছিল জানি না। বলার মতো কেউ আর বেঁচে নেই। এ বাড়িটা নিজের উপার্জনে বানিয়েছিল। বাবার টাকায় সংসার চলত, মা বাড়ি বানাত। মায়ের একটা নিজস্ব কলঘর ছিল। মা বাথরুম বলত না। কলঘর আর বাথরুম যে এক নয়, মা সেটা ভালোই জানত, তবুও বলত না। কারণ জিজ্ঞাসা করলে হাসত। মায়ের কলঘরে কারও প্রবেশাধিকার ছিল না। জলপাইগুড়িতে না থাকতে পারার এটা একটা বড় কারণ।
আলফা ডাকল, ‘দাদা নীচে আয়।’
‘তোরা কখন জানলি?’
আলফা বলল, ‘মিনু ফোন করেছিল, ঠাকুমা দরজা খুলছে না।’ ভাইদের মধ্যে একমাত্র ও মাঝে মাঝে মায়ের কাছে আসে খোঁজখবর নেয়। ও এসে দেখে দরজা বন্ধ, মা মোবাইল বা ল্যান্ডফোন কিছুই ধরছে না। ও বিটা আর গামাকে খবর দেয়। তারপর দরজা ভেঙে দেখে মা মাটিতে পড়ে আছে। তখনও নাকি প্রাণ ছিল। ওরা বিটার গাড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। ডাক্তার দেখে শুধু মাথা নেড়েছিল। হাতের ইশারায় বলেছিল, নিয়ে যান। তারপর ওরা মাকে বাড়িতে এনে মেঝেতে শুইয়ে রেখেছে। একটা মাদুর বা চাদরও পাতেনি। এত অভাব? শেষ সময়ে মায়ের জন্য একটা চাদর পাওয়া গেল না? এসব কথা বলা যায় না, বললে নাটক পাল্টে যায়। মা বলত, সংসারে কিছু কথা ভাতের মতো গিলে ফেলতে হয়। আমি  চারদিকের লোকজনদের ঠিক চিনতে পারছি না। চশমাটা মুছলাম। তবুও সবাই অস্পষ্ট। মাকে নিয়ে যেতে হবে, তার প্রস্তুতি চলছে। গামার বউ বলল, ‘বড়দা, আলমারির চাবিটা দিন।’
‘আমার কাছে তো থাকে না। ঘরেই আছে, দেখ।’
‘পাচ্ছি না। অনেকক্ষণ ধরে খুঁজছি।’
‘একটা ছোট পাউচ ব্যাগে মা রাখত। কোথায় রাখত আমি জানি না।’ ‘একবার আপনি আসুন না!’
আমার মায়ের তিনটে আলমারি, একটা স্টিলের দুটো কাঠের। মনে আছে আমরা আলমারি অগোছালো করতাম বলে মা স্টিলের আলমারিটা কিনেছিল। ওই আলমারিটায় আমাদের ভাইদের জামা-কাপড় থাকত। একদম উপরের তাকে থাকত সোয়েটার, মাফলার। তার নীচেরটায় ভালো পোশাক, বিয়েবাড়ি যাওয়ার। নীচের দুটোয় স্কুল ড্রেস আর রোজকার ব্যবহারের জামাকাপড়। এই আলমারিটার চাবি সব সময়ে ঝুলত। মা চাবি দিতে বারণ করত। আমাদের ভাইদের ব্যবহারে হ্যান্ডেলটা অর্ধেক হয়ে গিয়েছিল। যার হাতে ভেঙেছিল, সে অন্য কাউকে দেখায়নি। আমাদের চারজনের মধ্যে একজন ভেঙেছে। সে কে? আলমারির হ্যান্ডেল ভাঙার জন্য বাবা-মা রাগ করেনি, কিন্তু কে ভেঙেছে এবং হ্যান্ডেলের অবশিষ্ট কোথায় গেল, এটাই বিচার্য বিষয় ছিল। সেই হ্যান্ডেলটা এখনও অর্ধেক। আমি ভেবেছিলাম, তালা দেওয়া নেই। কিন্তু খুলতে পারলাম না। তালা দেওয়া। আমরা চার ভাই একটু অবাক হলাম, তার মানে আমরা বড় হওয়ার পর, মা তালা দিয়ে রাখত। আলমারি খুলতে না পারলে নতুন শাড়ি কিনতে হবে। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, অনেক কিছুই তো কিনতে হবে, তার সঙ্গে মায়ের জন্য যা যা লাগবে নিয়ে এলেই হবে। আলফার বউ উশখুশ করছিল, জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কিছু বলবে?’
সে বলল, ‘মায়ের আলমারিতে নতুন শাড়ি থাকা উচিত। পয়লা বৈশাখেও তো আমরা সবাই দিয়েছি। মা সেদিন আপনার দেওয়া শাড়িটাই পরেছিলেন। বরাবরই সেটা পরেন।’
‘চাবিটা পাওয়া যায় কি না দেখ।’
‘কোথায় দেখব?’
‘আমরা শ্মশানে চলে যাওয়ার পর ঘরটা তো পরিষ্কার করতে হবে, তুমি তখন মিনুকে নিয়ে খুঁজে দেখ।’
‘মিনু বোধহয় বাড়ি গিয়েছে।’
‘ও তো আসবেই।’
-৩-
মা বলতেন, মেয়েদের শ্মশানে আসতে নেই। সেই মাকে রাজবেশে নিয়ে এলাম, খুব খারাপ লাগছিল। ফুলে ফুলে মা ঢাকা পড়েছে। পাশের বাড়ির মনুর বউ মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিল, ‘আপনাদের তো মা গেলেন, আমার তো সব গেল।’ আমি জানতাম না, বিটার সমবয়সি মনুর চাকরি চলে গিয়েছে মহামারীর কারণে। দুটো শিশু নিয়ে মনুর বউ মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকত। মনুর বউ বলায় বুঝতে পেরেছি, আমাদের চাল-আটার খরচ কেন বেড়ে গিয়েছে। এইসব ভাবতে ভাবতে মাকে আগুনের বিছানায় শুইয়ে দিলাম। আগুনঘরের দরজা বন্ধ হতেই মা হারিয়ে গেল। মা নেই মানে নেই। মাকে আর দেখতে পাব না। সকাল থেকে মা শুয়েছিল, একটাও কথা বলেনি, আমি বার বার যেন শুনছিলাম, ‘বাবু’ বলে মা ডাকছিল। মনের ভিতরটা হঠাৎ ফাঁকা হয়ে গেল। বড় একটা শ্বাস নিয়ে বাইরে এসে বসলাম। অনুভব করলাম শ্মশানের একজন কর্মী আমাকে ধরে বসিয়ে দিয়ে গেল। মৃদু হেসে বলল, ‘বাবু, মাথা ঘুরছে?’ মাথা নেড়ে না বললাম। সবাই একে একে দেখা করে গেল। বলে গেল তুমি এখানে বসে থাক, আমরা ডেকে নেব।
আমার ছাড়া তিন ভাইয়ের ডাক নামই অঙ্কের— আলফা, বিটা, গামা। মা রেখেছিল নামগুলো। মায়ের ইচ্ছা ছিল, তাঁর চার ছেলে অঙ্ক নিয়ে পড়ুক। আমি ছাড়া কেউ অঙ্ক পড়েনি। ফলে মায়ের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ট হওয়ার আরও একটা কারণ অঙ্ক। মা অঙ্ক করতে ভালোবাসতেন। অবসরে মা বই পড়তেন বা অঙ্ক কষতেন। একদিন কথায় কথায় বলেছিলেন, ‘আমি সিকি মানবী’। আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়েছিলাম। বুঝতে পেরে বলেছিলেন, ‘আমার ইচ্ছার সিকিভাগ পূর্ণ হয়েছে।’
-৪-
মাকে গঙ্গায় রেখে এলাম। মা ভাসতে ভাসতে মোহনার দিকে চলে গেল। বাড়িতে ফিরে চারদিকে মাকে দেখছি। ভাড়াটেদের খোলা বারান্দায় বসে পড়লাম। বাড়িতে থেকেও মনে হচ্ছিল বাড়িতে নেই। মা নেই মানে বাড়ি নেই। ওরা সবাই কলকল করছে। কানে আসছে না। এরমধ্যে মিনু এসে বলল, ‘চাবি পাওয়া যায়নি।’
‘সব জায়গা দেখা হয়েছে?’
‘কোথাও পাইনি।’
ধীরে ধীরে উপরে গেলাম। মায়ের ঘরের দরজা মেরামত হয়ে গিয়েছে! আমরা তো শ্মশানে ছিলাম, কে করাল? কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই ছোটবউ বলল, ‘আমরা সুনীলদাকে ডেকে ঠিক করে নিয়েছি।’ আমি ভাবছি এরা কত বুদ্ধিমান এবং তৎপর, শুনলাম সে বলছে, ‘মায়ের তো ব্যাঙ্ক ব্যালান্স অনেক, সব কাগজ তো আলমারিতে। তাই আমরা বউয়েরা ভাবলাম দরজা না সারালে বিপদ হতে পারে। তাই... আপনি তো সবই জানেন।’
মাথা নাড়লাম, ‘আমি কিছুই জানি না।’
‘আপনাকেও বলতেন না? আর লকারটা কার সঙ্গে?’
‘আমার নাম আছে ওখানে। তবে আমি যাইনি কখনও।’
‘শুনেছি, মায়ের নাকি অনেকগুলো পাস বই। হবে নাইবা কেন? দু-দুটো পেনশন।’
‘মা অবসর নেওয়ার পর উইডো পেনশনটা নিতেন না। সরকারকে ফেরত দিয়েছিলেন।’
‘এটা ঠিক করেননি। দুটোই তো ওঁর প্রাপ্য। জমলে তো ওঁর সন্তানরাই পেত।’
এসব কথা বলতে ভালো লাগছিল না। সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছি। তাই ধীরে ধীরে নিজের ঘরের দিকে যেতে যেতে শুনলাম, বড়বউ বলছে, ‘দাদা যাওয়ার আগে লকারটা খুলতে হবে কিন্তু।’ ঘরে ঢুকে মেঝেতে বসলাম। বিছানায় তো এখন বসা যাবে না। গত শনিবার রাতে খেতে খেতে মা বলেছিল, ‘বাবু, আমি মরে গেলে তুই এরকম আসবি?’ তখন যদি বুঝতে পারতাম মা চলে যাবে, তাহলে কি রবিবার উত্তরবঙ্গ যেতাম? মা আমাকে আভাস দিল আমি ধরতে পারলাম না। মা কি আরও কিছু বলতে চেয়েছিল? আমি মায়ের কথাটা এড়াতে চাইছিলাম। মা ঘুরেফিরে মৃত্যুর কথাই বলছিল। আমি কী বোকা, একদম ধরতে পারিনি। রবিবার  সকালে রাবড়ি দিয়েছিল। হাসতে হাসতে বলেছিল, ‘বাঁধাকপির পাতা দেওয়া রাবড়ি নয়, দুধের সরের।’
‘আপনি বানিয়েছেন?’
‘আর কে আছে?’
মাকে আমি আপনি করে বলতাম। অন্য ভাইয়েরা তুমি। কেন আপনি বলতাম জানি না। তবে ছোটবেলায় মাকে খুব ভয় পেতাম।
-৫-
মায়ের কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। মেঝেতেই টান টান হয়ে শুয়েছিলাম। দরজা খোলা ছিল, দরজা দেওয়ার কথা মনে হয়নি। রাতেও আমি কোনওদিন দরজা দিই না। বলতে গেলে আমার অভ্যাস নেই। গামার ডাকে ঘুম ভাঙল, ‘রাত হয়ে গিয়েছে, কিছু খাবি না?’ ঘুম ভাঙতে জল তেষ্টা পেয়েছিল। নিজে উঠে গিয়ে ওয়াটার পিউরিফায়ার থেকে তিন গ্লাস জল খেলাম। ভাইয়েরা ও ঘনিষ্ঠরা বাড়ি যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমার জন্য ফল, সাবু, সন্ধব লবণ— সব গুছিয়ে দিয়েছে ভাইয়ের বউয়েরা। অন্য সবাই খেয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করা হয়নি। জিজ্ঞাসা করতে হল না। ওরাই জানাল, ওদের খাওয়া হয়ে গিয়েছে। মেজবউ সামনে এসে বলল, ‘দাদা, আপনার সাবুটা মেখে দেব?’ মাথা নাড়লাম, ‘যদি খাই মেখে নেব।’
ভাইপো-ভাইঝিরা নীচে নেমে গিয়েছে, বউমারা কথা বলতে বলতে নামছে। ভাইয়েরা আমার সামনে দাঁড়িয়েছিল, বললাম, ‘কাল সকালে তোরা আয়, ঠাকুরমশাইকে দশটায় আসতে বলেছি। আর শোন মায়ের কাজ হওয়া পর্যন্ত এখানেই সবাই থাকবি। আজকে যা, কাল থেকে আর যাবি না।’ ওরা কেউই কোনও উত্তর দিল না। গামা আমার হাতে একটা চাবি দিল। নতুন চাবি।
‘কীসের চাবি।’
‘মায়ের ঘরের।’
‘তোদের কাছেই রাখ।’
‘সবাই একটা করে রেখেছি, এটা তোমার।’
‘মানে?’
এই তালাটার চারটে চাবি। যেকোনও একটা চাবি দিয়ে বন্ধ করা যায়, কিন্তু খুলতে গেলে এক-দুই-তিন-চার, চারটে চাবিই লাগবে। এটা এক নম্বর। এটা তোমার।
অঙ্কন : সোমনাথ পাল
16th  July, 2023
ছাতা উপাখ্যান
অমিতাভ পুরকায়স্থ

উনিশ শতক তখন সবে দ্বিতীয় দশকে পড়েছে। এক বিকেলে কলকাতার হোয়াইট টাউন বা সাহেব পাড়ায় একটি শ্বেতাঙ্গ শিশু বেড়াতে এল তার আয়ার সঙ্গে।
বিশদ

16th  July, 2023
ব্রহ্মপুরের মনোজ শিকদার
শ্যামলী রক্ষিত

বিপুল ঘুম থেকে উঠেই দেখল, চার-চারটে মিসড কল। নামটা দেখেই মটকা গরম হয়ে গেল তার। ঘুম থেকে উঠতে সবুর সয়নি! কী অদ্ভুত মানুষ! এপ্রিল ফুল করার এমন উন্মাদ নেশা যে, কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলছে! এপ্রিল ফুল করবে বলে ভোর থেকে ফোন করছে! বিশদ

09th  July, 2023
রুপোলি শস্যের জাদু
হারাধন চৌধুরী

‘মিঠে গঙ্গাজলে তোলা অন্নপূর্ণা-ঘাটে।/ মেছোর পাটায় শোভে কিবা বাঁকা ঠাটে।।’ ... ‘কাঁচা ইলিশের ঝোল কাঁচা লঙ্কা চিরে।/ ভুলিবে না খেয়েছে যে ব’সে পদ্মাতীরে।।’ ... ‘আষাঢ়ে প্রথম মৎস্য প্রবেশিলে ঘরে।/ দূর্ব্বাধানে পূজে তারে শঙ্খরব ক’রে।।’ ... ‘একটি একটি কাঁটা তারিয়ে তারিয়ে।/ অবলা বিরলে খান বেড়ালে হারিয়ে।। বিশদ

09th  July, 2023
ছায়া গাছ
ছন্দা বিশ্বাস

তপেশরঞ্জন একসময়ে লটারির টিকিট বিক্রি করত। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়ে পড়া ছেড়ে দিয়েছিল। এখন মস্ত বড় প্রমোটার হয়েছে। কয়েকজন বন্ধু মিলে পার্টনারশিপ ব্যবসা খুলেছে। আয় পত্তর ভালোই হচ্ছে সেটা ওর বাড়ি দেখেই শতানিক গেলবারই বুঝতে পেরেছিল। তবে, তপেশ দান ধ্যান করে। বিশদ

02nd  July, 2023
হারিয়ে যাওয়া যৌথ পরিবার
সমৃদ্ধ দত্ত

হেরে গিয়েছে গণতন্ত্র। জিতেছে স্বৈরতন্ত্র। সেইসব একান্নবর্তী পরিবারে বহু সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই ছিল আলোচনার পরিসর। সেজো মামার নাতনির অন্নপ্রাশনে কী দেওয়া হবে? নূপুরের জন্য এই শ্যামনগরের পাত্রটি কি মানানসই? নাকি কসবার এই ডাক্তার ছেলেকেই বাছাই করা হবে? বিশদ

02nd  July, 2023
আম প্রীতির ইতিহাস
সন্দীপন বিশ্বাস

গৌতম বুদ্ধ, সম্রাট আলেকজান্ডার, মুঘল সম্রাট আকবর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিংবা অমিতাভ বচ্চন— বিভিন্ন সময়ের এই মনীষী ও ব্যক্তিত্বদের মধ্যে মিল কোথায়?
বিশদ

25th  June, 2023
সোনার ঘড়ি
বাণীব্রত চক্রবর্তী

মঞ্জুমাসি বলেন, ‘কুবলয়, মাঝে মাঝে তোমাকে নিয়ে চিন্তা হয়।’ সে জিজ্ঞেস করে, ‘চিন্তা হয়! কেন?’ উনি বলেন, ‘তুমি বড় সরল। তার উপর তোমার যা ভুলো মন। তাই চিন্তা হয়।’
কুবলয় হাসে। মঞ্জুমাসি তার নিজের মাসি নন। তার মায়ের চেয়ে বয়সে অনেক ছোট।
বিশদ

25th  June, 2023
শততম বিবাহবার্ষিকী
তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

বরাবরই ভোরে ওঠা অভ্যাস নন্দিতার। আজ একটু আগেই ঘুম ভাঙল। দেখল, জাঁকিয়ে নাক ডাকছে রিক্ত। আজ যেন বেশিই গর্জন করছে তার ধারালো নাকটা। সেই নাকে একটা ছোট্ট টোকা মেরে নন্দিতা বলল, ‘অ্যাই, ওঠো না।’  বিশদ

18th  June, 2023
দায়িত্বভার
শ্যামলী আচার্য

‘একজন আয়া দিয়ে তো হবে না, বারো ঘণ্টার হিসেবে দু’জন আয়া রাখতেই হবে। কথা বলে নাও তোমার শাশুড়ির সঙ্গে,’ টেলিফোনের ওপারে ঝনঝন করে বেজে উঠল পরমার গলা। এই প্রান্তে দিয়া মোবাইল লাউডস্পিকারে রেখে জামাকাপড় ভাঁজ করছিল, তার মনে হল মা বড্ড জোরে কথা বলে। বিশদ

11th  June, 2023
হাজারদুয়ারির হাতছানি
মৃদুলকান্তি ঘোষ

জ্যৈষ্ঠের গরমে হাঁফিয়ে উঠেছে সৈকত। দোকান দেখলেই চাতক চাহনিতে এগচ্ছে সে। ‘এক বোতল জল দিন।’ তাঁর অবাক জলপান চলছে ১৫-২০ মিনিটের ব্যবধানে, ছোট ছোট স্পেলে। মুর্শিদাবাদের শুকনো গরমে ঝরঝর করে ঘাম ঝরছে। তৃষা এবার হেসেই ফেলল বন্ধুর কাণ্ড দেখে। বিশদ

11th  June, 2023
ক্রমাগত
সুমন দাস

সকালের ট্রেন। আপ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল। ঠাসাঠাসি ভিড়। তিল ধারণেরও জায়গা নেই। একে ভিড়, তায় আবার গরম। বৈশাখ মাসের সকাল। দশটাও বাজেনি, অথচ সীমাহীন গরমে দরদর করে ঘামছে বিকাশ। একটু হাওয়ার জন্যে হন্যে হয়ে রয়েছে সে। বাকিরাও তাই। বিশদ

04th  June, 2023
কালের যাত্রার ধ্বনি
সন্দীপন বিশ্বাস

 

দক্ষিণে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি। উত্তরে মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি। সংলগ্ন দেবী চিত্তেশ্বরীর মন্দির। পশ্চিম দিকে গঙ্গার অনন্তধারা। এই অঞ্চলটুকুই হল চিৎপুর। কেউ বলেন, দেবী চিত্তেশ্বরীর মন্দির থেকেই এই স্থানের নাম চিৎপুর। আবার কারও মতে, চিতু ডাকাতের নামানুসারেই এই নামকরণ। বিশদ

04th  June, 2023
চিরশৈশব
সুমন মহান্তি

 

বিকেল হয়ে আসছে, আকাশে বিস্কুট রং, টিলার ওপারে সূর্য স্তিমিত হচ্ছে। ট্রেনের সাইড বার্থে বসে বাইরের দৃশ্য দেখছিলাম। প্রতিমুহূর্তে দৃশ্য বদলে যাচ্ছিল। কেন জানি না অবেলার দৃশ্য আমাকে আনমনা করে দেয় বারবার। বিশদ

28th  May, 2023
অযাচিত
সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়

 

বাসস্ট্যান্ডে লাবণ্য যে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে, ভালো লাগছে না। চটির ডগায় একটা পাথরকুচি নাড়াচাড়া করছে। বাসের পাত্তা নেই। অনেকদিন পর বেরিয়েছে ও। এখন লাবণ্যর একটা নতুন পরিচয় হয়েছে সমাজে। বিধবা! শব্দটাতেই কেমন একটা সাদাটে-ফ্যাকাশে ভাব। নিরামিষ গন্ধ। বিশদ

21st  May, 2023
একনজরে
১৭ বছর বয়সে স্বামীর ঘরে এসেছিলেন নদীয়ার তেহট্টের প্রত্যন্ত গ্রামের গৃহবধূ রমাদেবী। রান্নাবান্না, ঘর-সংসার আর ছেলে মেয়েদের সামলাতেই কেটে গিয়েছে জীবনের অধিকাংশ সময়। এখন তিনি ...

বৃষ্টি থেকে এখনই নিস্তার নেই। আজ, শনিবারও বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ে অতি ভারী বৃষ্টি সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, আগামী দু’-তিনদিন থানে, রায়গড়, পুনে ও পালঘরেও লাগাতার ভারী বৃষ্টির ...

পঞ্চায়েত নির্বাচনে লাগামহীন সন্ত্রাস ও ভোট লুটের প্রতিবাদে বিজেপির বিডিও অফিস ঘেরাও অভিযান ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। শুক্রবার বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও আরামবাগের বিভিন্ন বিডিও অফিসের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা।  ...

জমি বিতর্কে অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মার্কিন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ ইউজিন স্টিগলিটস। সেই খবর প্রকাশিত হতেই বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে শুক্রবার বিবৃতি দিলেন বিশ্বভারতী ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮১৪: সাহিত্যিক প্যারীচাঁদ মিত্রের জন্ম
১৮৪৭: সাহিত্যিক ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম
১৯১২: ইংল্যান্ডে ইন্ডিয়া সোসাইটি কর্তৃক রবীন্দ্রনাথের সংবর্ধনা
১৯১৮: প্রথম ভারতীয় যুদ্ধবিমানের পাইলট ইন্দ্রলাল রায়ের মৃত্যু (প্রথম বিশ্বযুদ্ধে)
১৯২২: বিশিষ্ট লোকগীতি গায়ক নির্মলেন্দু চৌধুরীর জন্ম
১৯২৩: অভিনেত্রী সুমিত্রা দেবীর জন্ম, যিনি অভিনয় দিয়ে বাংলা আর হিন্দি উভয় চলচ্চিত্রকেই সমৃদ্ধ করেছেন
১৯২৩: সঙ্গীতশিল্পী মুকেশের জন্ম
১৯৪৬ : ব্রিটেনে পাওরুটির রেশন চালু
১৯৪৭: ভারতের গণ পরিষদে তেরঙা ভারতের জাতীয় পতাকা বা রাষ্ট্রীয় ধ্বজা হিসাবে গৃহীত হয়
১৯৪৮: চিত্রশিল্পী হেমেন্দ্র মজুমদারের মৃত্যু
১৯৭০: রাজনীতিবিদ দেবেন্দ্র ফড়নবিশের জন্ম
১৯৭৯: অভিনেত্রী মান্যতা দত্তর জন্ম
১৯৮৬: অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরীর মৃত্যু
১৯৯৮: নাট্য সম্রাজ্ঞী সরযূবালা দেবীর মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮১.২০ টাকা ৮২.৯৪ টাকা
পাউন্ড ১০৩.৬৯ টাকা ১০৭.২৩ টাকা
ইউরো ৮৯.৭৩ টাকা ৯২.৯২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৫৯,৮৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৬০,১৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৫৭,২০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৭৪,৮৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৭৪,৯৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৫ শ্রাবণ, ১৪৩০, শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩। চতুর্থী দিবা ৯/২৭। পূর্বফল্গুনী নক্ষত্র অপঃ ৪/৫৯ সূর্যোদয় ৫/৭/১৮, সূর্যাস্ত ৬/১৮/৩৬। অমৃতযোগ দিবা ৯/৩১ গতে ১/২ মধ্যে।  রাত্রি ৮/২৮ গতে ১০/৩৮ মধ্যে পুনঃ ১২/৫ গতে ১/৩১ মধ্যে পুনঃ ২/১৪ গতে ৩/৪১ মধ্যে। বারবেলা ৬/২৬ মধ্যে পুনঃ ১/২২ গতে ৩/১ পুনঃ ৪/৪০ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৭/৪০ মধ্যে পুনঃ ৩/৪৬  গতে উদয়াবধি। 
৫ শ্রাবণ, ১৪৩০, শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩। চতুর্থী দিবা ৬/৩২। পূর্বফল্গুনীনক্ষত্র দিবা ৩/৬ । সূর্যোদয় ৫/৬, সূর্যাস্ত ৬/২২। অমৃতযোগ দিবা ৯/৩৩ গতে ১২/৫৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৮/২২ গতে ১০/৩৫ মধ্যে ও ১২/৪ গতে ১/৩৪ মধ্যে ও ২/১৭ গতে ৩/৪৬ মধ্যে। কালবেলা ৬/৪৫ মধ্যে ও ১/২৩ গতে ৩/৩ মধ্যে ও ৪/৪২ গতে ৬/২২ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/৪২ মধ্যে ৩/৪৫ গতে ৫/৬ মধ্যে।  
২ মহরম

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
মণিপুর ইস্যু নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব আনার সম্ভাবনা
মণিপুর ইস্যু নিয়ে নিন্দা প্রস্তাব আনা হতে পারে রাজ্য বিধানসভায়। ...বিশদ

04:33:00 PM

মেসিকে টপকে শীর্ষে রোনাল্ডো
লিও মেসিকে টপকে গেলেন ক্রিশ্চিয়ানা রোনাল্ডো। ইনস্টাগ্রাম পোস্টে এই মুহূর্তে ...বিশদ

03:50:07 PM

বোর্ড ঝুলিয়ে বিপাকে
‘দলিতদের মন্দিরে প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।’ নিজের জমিতে নির্মিত মন্দিরে এমন ...বিশদ

03:18:24 PM

২৪ জুলাই থেকে রাজ্য বিধানসভায় অধিবেশন
আগামী ২৪ জুলাই, সোমবার থেকে রাজ্য বিধানসভায় অধিবেশন বসছে। সেই ...বিশদ

02:58:24 PM

উত্তরাখণ্ডে পথ দুর্ঘটনায় মৃত ১, জখম ২৪
উত্তরাখণ্ডে পথ দুর্ঘটনায় মৃত ১ শ্রমিক। গুরুতর জখম ২৪। আজ, ...বিশদ

02:53:21 PM

রাস্তায় গোরু, শাস্তি
বাড়ির গবাদি পশু রাস্তায় ঘুরলে জুতোপেটা করা হবে মালিককে। দিতে ...বিশদ

02:13:20 PM