‘এটা শিবপুর, এখানে বাঁচতে গেলে চাঁচতে হয়’— কেন এমন জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ওই অঞ্চলে? কেনই বা আজকের নবান্নের জায়গায় এককালে পড়ে থাকত লাশ? সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘শিবপুর’ সিনেমায় সেই অধ্যায় অধরাই থেকেছে। বরং মাফিয়া মন্দিরার (স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়) সংগ্রাম, উত্থান ঘিরেই তৈরি এই ছবি। এবার সেই ‘শিবপুর’-এর অতীতের গল্প দেখানোর কথা ভেবেছেন পরিচালক অরিন্দম ভট্টাচার্য। আগামী বছরের গোড়াতেই তৈরি হবে এই ছবির প্রিক্যুয়েল তৈরির কাজ।
অরিন্দম বললেন, ‘আমি ছবিটা দু’টো ভাগে বানাতে চেয়েছিলাম। তবে পরের পার্টটা আমরা আগে বানিয়ে ফেলেছি। সিক্যুয়েলের জায়গা নেই। কারণ আমরা বর্তমান যুগে চলে এসেছি। শিবপুর বলে তো এখন কিছু নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তাই প্রিক্যুয়েল বানাব। যাঁরা পরের পার্টটা দেখে নিয়েছেন তাঁরা রিলেট করতে পারবেন। আর দেখা না থাকলেও ‘শিবপুর’ দেখার জন্য মুখিয়ে থাকবেন।’ সেজন্যই ওই অঞ্চলের অন্ধকার অধ্যায়ের সূচনালগ্নের কথা পর্দায় তুলে ধরবেন অরিন্দম। 
‘শিবপুর’ ছবিতে মমতা শঙ্কর, রজতাভ দত্ত, খরাজ মুখোপাধ্যায়ের চরিত্রগুলি বেশি বয়স থেকে দেখানো হয়েছিল। কুখ্যাতির শীর্ষে ছিল চরিত্রগুলি। কিন্তু কোন পরিস্থিতিতে ওই অন্ধকার জগতে প্রবেশ করেছিল তারা? কেন তাদের নাম শুনলেই ভয়ে কাঁপত পুলিস থেকে প্রশাসন? এবার এই গল্পই উঠে আসবে প্রিক্যুয়েলে। মুখ্য চরিত্রে থাকবেন মমতা শঙ্কর। তাঁর অভিনীত চরিত্রকে ঘিরেই এগবে গল্প। কীভাবে স্বামী, সন্তান, পরিবারকে ছেড়ে অপরাধের চোরাবালিতে ডুব দিয়েছিল ওই মহিলা চরিত্র তা উঠে আসবে সিনেমায়। 
প্রিক্যুয়েলের মুখ্য ভূমিকায় মমতা শঙ্করই অভিনয় করবেন বলে জানালেন অরিন্দম। তাঁর কথায়, ‘মমদি (মমতা শঙ্কর)-কে যে বয়সে দেখানো হয়েছিল তার থেকে দশ-বারো বছর কম দেখানো হবে। কম বয়সী কাউকে দেখিয়ে তারপর মম দিকে সেখানে ফিট করতে চাই না। মোটামুটি একটা মাঝ বয়স ধরেই এগব। এছাড়াও, খরাজদা (মুখোপাধ্যায়), রনিদা (রজতাভ দত্ত), এঁদের চরিত্রগুলিরও উত্থান দেখানো হবে।’ মমতা শঙ্করের পাশাপাশি আরও একজন থাকবেন প্রধান চরিত্রে। কোনও বয়স্ক অভিনেতাকেই সেখানে চান পরিচালক। তবে এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি বলেই জানালেন তিনি। 
রাজদীপ সরকারের ভাবনায় বাস্তবের মাটি থেকেই ‘শিবপুর’ ছবির রসদ সংগ্রহ করেছিলেন অরিন্দম। তবে কিছু চরিত্র বাদ গিয়েছিল নানা কারণে। এবার বাস্তব ঘটনায় আর কাঁচি চালাবেন না বলেই জানালেন তিনি। বললেন, ‘ভয় পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এতটা রিয়েল ক্যারেক্টার দেখানো ঠিক হবে কি না। তবে এবার আর তেমন কিছু করব না। সবটাই রাখব।’ প্রিক্যুয়েল নিজেই প্রযোজনা করবেন বলে জানালেন অরিন্দম।  
আগামী বছর জানুয়ারি মাস থেকে শ্যুটিং শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে অরিন্দমের। মমতা শঙ্কর, খরাজ মুখোপাধ্যায়, রজতাভ দত্তের পাশাপাশি চন্দন সেন, শুভাশিষ মুখোপাধ্যায়, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতাদেরও কাস্ট করতে চান পরিচালক। ছবিটি মুক্তি পেতে পারে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে।