পারিবারিক ধর্মকর্ম পালনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ। সন্তানের কর্মসাফল্যে গর্ব। গবেষণায় অগ্রগতি। ... বিশদ
সম্প্রতি শিশির মঞ্চে ‘চন্দননগর যুগের যাত্রী’র প্রযোজনায় মঞ্চায়ন হল নাটক ‘হিকি সাহেবের গেজেট’। নাটক তো মাধ্যম। আসলে ইতিহাসকে ফিরে দেখা। দেশে যখনই শাসকের অপশাসন ও দুর্নীতিকে বেআব্রু করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে তখনই কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে সংবাদমাধ্যমের। সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধের বীজ এ দেশে বপন হয়েছে সেই হিকি সাহেবের সময় থেকেই। আসলে কালে কালে শাসকের চরিত্র বদলায় না। শুধু রং বদলায়। নাটক দেখতে দেখতে হাথরাসে যাওয়া কেরালার সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পানের কথাও মনে পড়ছিল। কাপ্পানের শাস্তির ধারাবাহিকতা হিকির সময় থেকেই চলে আসছে, তা স্মরণ করিয়ে দেয় এই নাটক।
সেদিনও শাসক ও তার আইনের মাথারা এক নির্ভীক সাংবাদিককে সত্য তুলে ধরার জন্য যা প্রাপ্য তাই দিয়েছে। সরকারের তরফে সব রকম সহযোগিতা বন্ধ করে দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। সংবাদপত্র প্রকাশ যাতে না হয় তার জন্য কফিনের শেষ পেরেক পোঁতার দায়িত্ব দেওয়া হয় সুপ্রিম প্রধানের উপর। তাই সুপ্রিম প্রধান এলিজা ইম্পে আইনের ঘোর প্যাঁচে কারাবন্দি করেন হিকিকে। সাম্রাজ্যবাদের হাতে স্তব্ধ হয় গণতন্ত্রের কণ্ঠ।
ইতিহাস ভিত্তিক এই নাটকে হিকি সাহেবের চরিত্রে রামকৃষ্ণ মণ্ডল, টমাসের চরিত্রে অভিজিৎ পালের অভিনয় মনে দাগ রেখে যায়। ওয়ারেন হেস্টিংসের চরিত্রে সুমিত সাহা ও এলিজা ইম্পের চরিত্রে সুজিত গুপ্ত ক্ষমতার দম্ভকে ভালো ধরেছেন। পিটার রিডের (কৌশিক দত্ত) অল্প সময়ের কমিক উপস্থিতি নাটকে অন্য স্বাদ নিয়ে এসছে।
নাটকে সূত্রধরের কাজ করেছেন কবিয়ালরা। কবি গানে উঠে এসেছে সেই সময়ের টুকরো টুকরো ছবি। মঞ্চ সজ্জা ও আলো নাটকের প্রতিপাদ্যকে ধরে রাখে। শংকর বসু ঠাকুরের নাটক ও রামকৃষ্ণ মণ্ডলের নির্দেশনায় প্রযোজনাটি সময়ের দলিল হয়ে উঠেছে, যা আজকের দিনেও প্রাসঙ্গিক।