পুরনো রোগের বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্যহানির সম্ভাবনা। ব্যবসায় শুভত্ব বজায় থাকবে। আর্থিক প্রগতিও হবে। ... বিশদ
বরাবর চেয়েছিলাম আমার মেয়ে হোক। তারপর যখন শুনলাম মেয়েই হয়েছে, বিশ্বাস করতে পারছিলাম না! খুবই আনন্দের মুহূর্ত। ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। এত ছোট্ট একটা মানুষ। ওকে বাড়িতে নিয়ে আসা। কী করব কীভাবে করব, কিছু বুঝতে পারছি না। কাঁদছে কেন? খিদে পাচ্ছে নাকি অন্য কষ্ট, নাকি ঘুম পেয়েছে? প্রথমে এগুলো বুঝতে একটু সময় লাগে মায়েদের। ক্রমশ আমিও বুঝতে শিখলাম। আগে সদ্যোজাত বাচ্চা কখনও কোলে নিইনি, ভয় লাগত। ঘাড় শক্ত হয় না। তবে নিজের মেয়ের ক্ষেত্রে শুরু থেকে কোলে নেওয়া, স্নান করানো, বাটি চামচে দুধ খাওয়ানো সবই করেছি। আমার মা তো ছিলেনই। একজন দেখার দিদিও ছিলেন। এই ন’মাসে বুঝেছি, যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার, সেটা হল ধৈর্য। যেটা আমার একদম নেই! মাঝে মাঝে রেগে যাচ্ছি ঠিকই। কিন্তু আবার বুঝছি ও তো খুবই ছোট। বকলেও খিলখিলিয়ে হাসে। মা হওয়ার পরে বুঝলাম আমার মাকে কী ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। সবটা মা অনায়াসে করেছেন। এখনও করে যাচ্ছেন। আমার অত্যাচার সহ্য করা! আমার বেরনো থাকলে খাবার গুছিয়ে দেওয়া, ঘুমিয়ে পড়লে ডেকে তোলা, এখন আবার আমি না থাকলে আমার মেয়েকে সামলানো। এই প্রসঙ্গে আমার সহ অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী এর মধ্যে একদিন খুব সুন্দর করে বলেছিলেন, ‘মায়েরা ছিল বলে মায়েরা বেঁচে গেল!’
শুরুর দিকে মেয়ে যখন টানা রাত জেগে থাকত (শুনেছি অনেক বাচ্চাই এরকম রাতে জেগে থাকে, রাত বারোটা থেকে সকাল ছ’টা) তখন মনে হতো আর পারছি না। ঘুমে চোখ ভারী, অথচ ঘুমাতে পারছি না। মেয়ে মুখের দিকে তাকিয়ে হাসছে। এক এক দিন ওকে কোলে নিয়ে আমিই কাঁদছি, ভাবছি ঘুমাচ্ছে না কেন? মায়ের কাছে শুনলাম আমিও রাতে এরকম জেগে থাকতাম। তখন বুঝলাম মা-দিদু কতটা কষ্ট পেয়েছে।
মা এমন একটা শব্দ, যার গভীরতা বোঝা যায় না। মা হওয়ার অনুভূতি একটা সমুদ্রের মতো, আকাশের মতো যার কোনও শেষ নেই। এত অপরিহার্য একজন মানুষ যাঁর সঙ্গে ঝগড়া হয়, কথা বন্ধ থাকে। আবার দেখি সেই মানুষটাকে ছাড়া এক মুহূর্ত চলবে না। আমার মেয়ের যখন সাত মাস বয়স, প্রথম স্পষ্ট মা বলে ডেকেছিল। সে অভিজ্ঞতা ভোলার নয়। সব মিলিয়ে দারুণ অনুভূতি। ওকে ছেড়ে বাইরে শ্যুটিংয়ে গেলে এখন চিন্তায় থাকি। তবে এর সঙ্গে একটা কথা না বললে ভারী অন্যায় হবে। আমার স্বামীও ভীষণভাবে পাশে থাকেন। মেয়েকে সুন্দর সামলাতে পারেন। আমারও যে বিশ্রামের প্রয়োজন, সেটা ভুলে যান না একেবারেই।
হেয়ার : সৌরভ দাস ছবি : রূপসু দেবনাথ